ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

অভিষেকেই শটপুটে নজর কাড়লেন শ্রাবণী মল্লিক

প্রকাশিত: ০৬:০৪, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫

অভিষেকেই শটপুটে নজর কাড়লেন শ্রাবণী মল্লিক

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ পৃথিবীতে বিভিন্ন রকম খেলা আছে। অনেকেই একাধিক খেলায় পারদর্শী হতে পারেন। কিন্তু তাই বলে ছয়টি খেলায় সমান পারদর্শী কি কেউ হতে পারে? উত্তর হলো- হ্যাঁ পারে। যিনি পারেন, তার নাম শ্রাবণী মল্লিক। বাংলাদেশ জুট মিলস কর্পোরেশনের (বিজেএমসি) এ্যাথলেট তিনি। আরও অবাক হলেন, যখন শুনবেন যে খেলাটি কোনদিনও খেলেননি, সে খেলাটি মাত্র দুই মাস ধরে খেলে জাতীয় পর্যায়ে প্রথমবার অংশ নিয়েই স্বর্ণপদকও পেয়ে গেছেন! অভিষেকেই নজরকাড়া সাফল্য। খেলাটির নাম শটপুট। শনিবার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে শেষ হয়েছে তিন দিনব্যাপী ‘স্বাধীনতা পদক প্রাপ্ত ভাষা সৈনিক একেএম শামসুজ্জোহা স্মৃতি জাতীয় এ্যাথলেটিক প্রতিযোগিতা’। তাতে মহিলাদের শটপুটে স্বর্ণপদক পান (১০.৬৩ মিটার) নড়াইলের ১৯ বছর বয়সী সুদর্শনা শ্রাবণী। এ প্রসঙ্গে শ্রাবণীর অনুভূতি, ‘যদিও মাত্র দুই মাস হলো শটপুট খেলায় এসেছি, আর প্রতিযোগিতার জন্য প্রস্তুতি নিতে সময়ও পেয়েছি কম, মাত্র দশ দিন। তারপরও আমার কোচ নেলী জেসমিনের অবিরাম উৎসাহ আর নিজের আত্মবিশ্বাস সব মিলিয়েই সাফল্য পেয়েছি। এজন্য খুব খুশি লাগছে। ফোনে মা-বাবাকে সুখবরটা জানিয়েছি। দারুণ খুশি হয়েছেন তারাও।’ বাবা রতন মল্লিক এবং মা তুলসী মল্লিকের দুই ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে সবার ছোট শ্রাবণী। নড়াইলের সিটি কলেজে পড়ছেন উচ্চ মাধ্যমিকের প্রথম বর্ষে। শুধু শটপুটই খেলেন না, খেলেন কাবাডি, কুস্তি, থ্রোবলও! শুনলে অবাক হবেনÑ কদিন আগেই শ্রাবণী ডাক পেয়েছেন এসএ গেমসের জাতীয় কাবাডি দলের ক্যাম্পে। জাতীয় পর্যায়ে কুস্তিতেও আছে বলার মতো সাফল্য। জাতীয় পর্যায়ে পেয়েছেন একটি করে সোনা, রুপা ও তামা। থ্রোবল প্রতিযোগিতায় কদিন আগেই খেলে এসেছেন ভারতের ব্যাঙ্গালুরু থেকে। কোন্ খেলা খেলতে বেশি ভাল লাগে? ‘সবই! সবটিতেই সফল হতে চাই। এজন্য যত পরিশ্রম করতে হয় করতে রাজি আছি।’ হাসিমুখে জানান শ্রাবণী। অবশ্য শটপুটে জাতীয় পর্যায়ে সাফল্য পাওয়ার আগে এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে বিজেএমসির জোন (ঢাকা, চট্টগ্রাম ও খুলনা মিলে একটি জোন) প্রতিযোগিতায় (ভেন্যু : করিম জুট মিল) শটপুটে শ্রাবণীর প্রথম হওয়াটাকে ধরে নেয়া যেতে পারে সাফল্যের ভিত্তি হিসেবে। কিভাবে এলেন খেলাধুলায়? ‘তখন ক্লাস সিক্সে পড়ি। আমাদের গ্রামের ক্রিকেটার একটি মেয়ের (রিমি সরকার, একই স্কুলের সহপাঠী) মাধ্যমে আন্তঃজেলা স্কুল ক্রিকেট খেলতে যাই। সেখানে রজিবুল স্যার আমাকে দেখেন এবং খেলাধুলা করতে উৎসাহ দেন। পর্যায়ক্রমে তিনি আমাকে হ্যান্ডবল ও কাবাডি দলে নিয়ে খেলান।’ গত তিন বছর ধরে বিজেএমসির হয়ে খেলা শ্রাবণীর ভাষ্য। কাবাডি থেকে শটপুটে আসেন কিভাবে? ‘আমার বডি ফিটনেস দেখে ইসলাম স্যার শটপুট খেলতে বলেন। এরপর মহিলা শটপুট কোচ শাহীন আজাদ আমাকে শটপুটের সবকিছু শেখান। ভবিষ্যত লক্ষ্য? ‘যতদিন ফর্ম ও ফিটনেস থাকবে, ততদিনই সব খেলাতেই প্রথম স্থান অধিকার করতে চাই।’ শটপুটের টেকনিক উন্নত করার জন্য বিদেশী ভাল কোচের প্রয়োজনীতা অনুভব করার কথা জানান শ্রাবণী। এখন দেখার বিষয়, আগামীতে কোন কোন খেলায় কেমন ফল করেন শ্রাবণী।
×