ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

এ কে মোহাম্মাদ আলী শিকদার

৯/১১-এর অভিশাপে সাগরে ভাসছে বিশ্বমানবতা

প্রকাশিত: ০৫:৪৩, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫

৯/১১-এর অভিশাপে সাগরে ভাসছে বিশ্বমানবতা

গত শুক্রবার, ১১ সেপ্টেম্বর ছিল ৯/১১ ঘটনার ১৪তম বর্ষ। ৯/১১-এর প্রতিক্রিয়ায় গত ১৪ বছর ধরে বিশ্ব অঙ্গনে যা ঘটে চলেছে তার একটা প্রতীকী মর্মান্তিক, হৃদয়বিদারক এবং অমানবিক দৃশ্য বিশ্ববাসী সম্প্রতি দেখতে বাধ্য হয়েছে। এমন দৃশ্য সাধারণত মিডিয়ায় দেখানো হয় না। কারণ, তাতে দর্শকদের স্নায়ু ব্যবস্থা ভেঙ্গে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। ভয় থাকে পাগল হয়ে যাওয়ার। কিন্তু সিরিয়ার হতভাগ্য পিতা আব্দুল্লাহ কুর্দির তিন বছরের শিশু আয়লানের মৃতদেহ তুরস্কের সমুদ্র সৈকতের ভেজা বালুতে উপুড় হয়ে নিথর পড়ে থাকা ছবিটি মিডিয়া প্রকাশ করে দেখিয়ে দিল বিশ্বের মানবতা আজ সাগরপারের বালুমাটিতে মুখ থুবড়ে পড়ে আছে। এর আগে কত শত-হাজার আয়লান সাগরে ভেসে গেছে, ডুবে গেছে, তার হিসাব কেউ রাখেনি। আয়লানের মা রেহেনা কুর্দি এবং ভাই গালিবও ভূমধ্যসাগরে ভেসে গেছে। এ দুই হতভাগা কুলের নাগাল পায়নি। এই অসহনীয় ভার একজন মানুষের জন্য কত বড় দুঃখের, বেদনার এবং মর্মস্পর্শী ও কষ্টকর হতে পারে, তা বিশ্বের ক্ষমতাবান মানুষদের দেখাবার জন্যই বোধ হয় সৃষ্টিকর্তা আয়লানের বাবা আব্দুল্লাহ কুর্দিকে বাঁচিয়ে রেখেছেন। প্রকৃতির বিরূপতা নয়, নিজের কোন অপরাধে নয়, মানুষসদৃশ কিছু ক্ষমতাবান জীবের অনৈতিক স্বার্থরক্ষার রক্তক্ষয়ী লড়াইয়ের ভয়ঙ্কর থাবার মাঝখানে পড়ে সব হারানো একজন পিতার মর্মযাতনা কত গগনবিদারী হতে পারে, সেটি এখন বেঁচে থাকা বিশ্বের শতকোটি বাবারা, আমরা দেখছি। কিন্তু এই বাবারা সংখ্যায় শতকোটি হলেও তারা অসহায়, শুধু চোখের পানি ফেলতে পারে, আবার পাগলও হয়ে যেতে পারে। কিন্তু এর প্রতিকার কিছু করতে পারে না। বড়জোর এই আয়লানের মৃত্যুর জন্য যারা দায়ী তাদের প্রতি ঘৃণা প্রকাশ করতে পারে, ক্ষুব্ধতা দেখাতে পারে। আসুন, সবাই এতটুকু অন্তত করি। আর প্রার্থনা করি, হে সৃষ্টিকর্তা, তুমি সেই বাবা-মায়েদের হৃদয়কে জাগ্রত কর, যাদের তুমি ক্ষমতাবান করে মহান করেছ, দ-মু-ের মালিক বানিয়েছ, তেল, অর্থ ও অস্ত্রসম্পদ দান করে যাদের বলীয়ান করেছ, তাদের তুমি আরও মহান করো; তা না হলে এই মানবিক মহাবিপর্যয় থামবে না। সাম্রাজ্য বিস্তারে তারা চিরকালই ছিল অন্ধ ও বধির। আয়লানদের মৃতদেহ তারা দেখতে পায় না, সমুদ্রের গর্জন তারা শুনতে পায় না। তরবারির আঘাতে তারা রক্তাক্ত করেছে সমগ্র এশিয়া-আফ্রিকা। কয়েক শত বছর ঔপনিবেশিক শাসনের বেত্রাঘাতের সঙ্গে তুলে নিয়েছে এসব দেশের সমস্ত সম্পদ এবং সেগুলো জাহাজে পুরে পাড়ি জমিয়েছে ভূমধ্যসাগর আর আটলান্টিকের ওপারে। লুণ্ঠিত সম্পদ দিয়ে তারা গগনচুম্বী অট্টালিকা করেছে। জ্ঞানে, পা-িত্যে, বিজ্ঞানে উৎকর্ষ সাধন করে উন্নত জাতি ও রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। এখন তাদের উপনিবেশ নেই। কিন্তু সাম্রাজ্যবাদী চক্রান্তের জালে আটকে এই লুণ্ঠন প্রক্রিয়া এখনও তারা অব্যাহত রেখেছে, যা আরও দীর্ঘায়িত করতে চায়। শত শত বছর এই লুণ্ঠন না চললে এশিয়া-আফ্রিকার দেশগুলো আজ উন্নত হতে পারত। এসব মানুষকে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দেয়ার মরণপণ লড়াইয়ে নামতে হতো না। আব্দুল্লাহ কুর্দিদের আজ আকাশের দিকে তাকিয়ে বুক চাপড়াতে হতো না। সুতরাং ইউরোপীয় নেতাদের দায় আছে। কিন্তু তারা দায় স্বীকার করতে চায় না। মার্সি বা দয়া দেখাতে চায় মাঝে মাঝে। বলা যায় না, এমন দিনও আসতে পারে, ভূমধ্যসাগর নয়, তখন এশিয়া-আিফ্রকার মানুষ আটলান্টিক, সেখানে ইউরোপিয়ানরা বাধা দিলে প্রশান্ত মহাসাগর পাড়ি দিয়ে বর্তমান বিশ্বের মুরব্বি খোদ আমেরিকার উপকূলে গিয়েও উঠতে পারে। মরবে, কিন্তু থামবে না। কামান দেগে অগণিত মানুষ মারতে পারবে, কিন্তু চিরদিন দাবিয়ে রাখতে পারবে না। অস্ত্রের জোরে হত্যা করা যায়, কিন্তু মানুষকে জয় করা যায় না। তাই স্মরণকালের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সেনাপতি নেপোলিয়ান মৃত্যুর আগে দক্ষিণ আটলান্টিকের নির্জন দ্বীপ সেন্ট হেলেনায় বসে নাবালক পুত্রকে চিঠি লিখে উপদেশ দিয়েছিলেনÑ এই বিশ্বে দুটি শক্তি আছে, একটি অস্ত্র, অন্যটি চেতনার। শেষ বিচারে চেতনার কাছে অস্ত্র পরাজিত হবে। নেপোলিয়ান আরও লিখেছেনÑ ভায়োলেন্স নয়, যুক্তির পথই শ্রেয়। তাই সমুদ্রে ভাসমান মানবতাকে উদ্ধার করতে হলে আমেরিকা, ইউরোপ এবং মধ্যপ্রাচ্যের শক্তিধর শাসকদের সব দুরভিসন্ধি ত্যাগ করে যুক্তিবাদ, গণতন্ত্র ও মানবতাকে অগ্রাধিকার দিয়ে জরুরী ভিত্তিতে ইরাক, সিরিয়া, লিবিয়া ও ইয়েমেনের যুদ্ধ বন্ধের ব্যবস্থা নিতে হবে। তবে ৯/১১-এর পরবর্তী সময়ে আল কায়েদা ও আইএস নামক যে ধর্মান্ধ উগ্রবাদী দানব শক্তির উত্থান ঘটেছে, তাদের পরাজিত করা ব্যতিরেকে এই মানবিক বিপর্যয় রোধ করা যাবে না। কারণ, এই দানব শক্তি বিশ্বের অন্যতম বড় ধর্মের অনুসারী সব সরল প্রাণ ও পিছিয়ে পড়া মুসলমানদের ধর্মীয় আবেগের অপব্যবহার করে ইরাক, সিরিয়া, লিবিয়া এবং অন্যান্য জায়গায় ভ্রাতৃঘাতী যুদ্ধে লিপ্ত। শুধু মধ্যপ্রাচ্য নয়, আইএস আল কায়েদার জোশে উদ্বুদ্ধ হয়ে বাংলাদেশসহ সব মুসলমানপ্রধান দেশে ধর্মান্ধ ইসলামিস্ট দলের নেতারা সন্ত্রাসী জঙ্গীবাদের উত্থান ঘটানোর চেষ্টা করছে। এদের দমন ও পরাজিত করার জন্য সব দেশের গণতান্ত্রিক ও প্রগতিশীল রাজনৈতিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সমন্বয় ও সহযোগিতার ক্ষেত্র তৈরি করতে হবে। এই ইস্যুতে বিশ্বের একমাত্র পরাশক্তি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে সব রাজনৈতিক ও কর্পোরেট স্বার্থের ধান্দা বাদ দিয়ে সকল দেশের প্রগতিশীল ও ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতিকে শক্তিশালী করার ভূমিকায় থাকতে হবে। ৯/১১, অর্থাৎ ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর আল কায়েদার আত্মঘাতী যোদ্ধারা ছদ্মবেশে প্যাসেঞ্জার বিমানে উঠে সেই বিমানের আঘাতে নিউইয়র্কের বিশ্ব বাণিজ্য কেন্দ্র টুইন টাওয়ার বা জোড়া ভবন ধ্বংস করে দেয়। আনুষ্ঠানিকভাবে এই ঘটনার দায়-দায়িত্ব স্বীকার করে আল কায়েদা। এই আক্রমণের পাল্টা হিসেবে আমেরিকার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন। সে যুদ্ধের প্রথম ধাপে আমেরিকান সেনারা আফগানিস্তান দখল করে নেয়। আল কায়েদাকে আশ্রয় প্রদানকারী তালেবান সরকার আফগানিস্তান থেকে উৎখাত হয়। আল কায়েদা ও তালেবান নেতারা সব পালিয়ে এসে পাকিস্তানে গোপন আশ্রয় নেয়। মিলিটারির তত্ত্বাবধানে লুকিয়ে রেখে পাকিস্তান আমেরিকার কাছে লাদেনের অবস্থান সম্পর্কে অজ্ঞতা প্রকাশ করে। যদিও আমেরিকার সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের পার্টনার পাকিস্তান। অবশেষে ২০১১ সালের পয়লা মে রাতে পাকিস্তানের মিলিটারি একাডেমি কাকুলের কাছে একটা সুরক্ষিত বাড়িতে আক্রমণ চালিয়ে আমেরিকার কমান্ডো বাহিনী লাদেনকে হত্যা করে। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের দ্বিতীয় ধাপে সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগে ২০০৩ সালে ইরাক দখল করে নেয় আমেরিকান সেনারা, সাদ্দামকে ফাঁসি দেয়া হয়। সাদ্দাম ক্ষমতায় থাকলে আল কায়েদা, আইএস কেউ ইরাকে টিকতে পারত না। আমেরিকান সেনারা সাদ্দাম আমলের সবকিছু তছনছ করে দেয়। ইরাকের রাষ্ট্রব্যবস্থা দুর্বল ও ভেঙ্গে পড়ে। এর ফলে যে শূন্যতার সৃষ্টি হয়, সেই সুযোগে ইরাকের সুন্নিপ্রধান অঞ্চলগুলোর ওপর অরাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় আল কায়েদা, যাদের বড় অংশ এখন ইরাক ও সিরিয়ার বিরাট এলাকা নিয়ে তথাকথিত ইসলামিক স্টেট ঘোষণা করেছে। আল কায়েদা ও আইএসের লক্ষ্য অভিন্ন। কিন্তু লক্ষ্য বাস্তবায়ন স্ট্র্যাটেজি বা কৌশল নির্ধারণে বড় আকারের মতপার্থক্য হওয়ায় দুই সংগঠন আপাতত আলাদা অবস্থানে। আল কায়েদা চায় প্রথমে বাইরের শত্রু পশ্চিমা বিশ্বকে ঘায়েল করতে। অন্যদিকে আইএস চায় মুসলমানপ্রধান দেশে প্রথমে খেলাফত প্রতিষ্ঠা করে তারপর পশ্চিমা বিশ্বকে আক্রমণ করতে। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের তৃতীয় পর্যায়ে আরব বসন্তের সুযোগ গ্রহণ করে আমেরিকা। আমেরিকার সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় বিদ্রোহীরা লিবিয়ার গাদ্দাফীকে উৎখাত ও হত্যা করে। লিবিয়ায় এখন শক্ত ঘাঁটি গেড়েছে আল কায়েদা ও আইএস। গাদ্দাফী ক্ষমতায় থাকলে তা কোনদিন সম্ভব হতো না। যদিও গাদ্দাফী একজন স্বৈরশাসক ছিলেন এবং বাংলাদেশের মানুষের কাছে তিনি ঘৃণিত বঙ্গবন্ধুর খুনীদের আশ্রয় দেয়ার জন্য। সাদ্দাম ও গাদ্দাফীকে যে কারণে উৎখাত করা হয়েছে সেই একই কারণে সিরিয়ার আসাদকে উৎখাতের সম্মিলিত চেষ্টা চালাচ্ছে আমেরিকা ও সৌদি আরব। এই তিন শাসকই আমেরিকার ঘোর বিরোধী ছিলেন। সিরিয়ার একটা বড় অংশ এখন আইএসের দখলে। আসাদ ক্ষমতাচ্যুত হলে সেখানে প্রতিষ্ঠিত হবে আইএস ও আল কায়েদার শাসন। এই আশঙ্কায় আমেরিকা ও সৌদি আরব মহা ফাঁপরে আছে। এসপার-ওসপার কিছুই করতে পারছে না। চার বছর যাবত চলা গৃহযুদ্ধে কয়েক লাখ নিরীহ সিরিয়ান প্রাণ হারিয়েছে। আয়লানের মতো কত নিষ্পাপ ও হাস্যোজ্জ্বল শিশুর প্রাণ গেছে তার খবর কেউ রাখেনি। ৪০ লাখ সিরিয়াবাসী বাস্তুচ্যুত হয়েছে। ২০ লাখ শরণার্থী আছে তুরস্কে, আর ১১ লাখ লেবাননে। এদের কোন দোষ নেই, এরা ক্ষমতা দখলের লড়াইয়ের শিকার। সিরিয়ায় লড়াই চলছে এখন মূলত ত্রিমুখী; যদিও দল-উপদলের শেষ নেই। প্রথম পক্ষে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আসাদের সশস্ত্র বাহিনী, দ্বিতীয় পক্ষ আইএস-আল কায়েদা, যারা ইসলামিক স্টেটের ব্যানারে যুদ্ধ করছে। আর তৃতীয় পক্ষ হচ্ছে সশস্ত্র বিদ্রোহী গ্রুপ, যারা মূলত আসাদকে ক্ষমতা থেকে উৎখাতের জন্য যুদ্ধ শুরু করেছিল। এই তৃতীয় গ্রুপকে অস্ত্রশস্ত্র, গোলাবারুদ, অর্থ, প্রশিক্ষণ দিয়ে সর্বতোভাবে সাহায্য করছে আমেরিকা ও সৌদি আরব। এই দুই শক্তির লক্ষ্য আসাদকে যেতে হবে এবং একই সঙ্গে আইএসকে প্রতিহত করতে হবে। তবে এখন পর্যন্ত যে পরিস্থিতি, তাতে এক ঢিলে দুই পাখি মারা বোধ হয় কঠিন কাজ হবে। তাতে সিরিয়ায় আরও বড় মানবিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা আছে। গত এক বছর যাবত আমেরিকা ও তার মিত্রদের কয়েক হাজার বিমান হামলায় আইএস খুব একটা দুর্বল হয়েছে বলে মনে হয় না। সিরিয়ায় আসাদ একনায়ক, স্বৈরশাসক হিসেবে পরিচিত। কিন্তু আসাদের অবস্থান শক্তিশালী থাকলে আইএস-আল কায়েদা সিরিয়ায় স্থান পেত না। স্বল্প সময়ে লিবিয়ার গাদ্দাফীকে উৎখাত করতে পারায় আমেরিকার মিলিটারি প্ল্যানাররা ভেবেছিলেন, একই কায়দায় আসাদকেও উৎখাত করতে পারবেন। কিন্তু আসাদের মিলিটারি শক্তির মূল্যায়নে মার্কিন সেনা কমান্ডাররা বড় ভুল করেছেন। আসাদ আর গাদ্দাফীকে একই পাল্লায় মাপা ভুল ছিল, যেটা এতদিনে প্রমাণিত। ২০১২ সালে লিবিয়ার বেনগাজীতে আল কায়েদার জঙ্গীদের আক্রমণে আমেরিকার রাষ্ট্রদূতসহ কূটনীতিকরা অপ্রত্যাশিতভাবে নিহত হলে আমেরিকার কর্তাব্যক্তিদের সম্বিত ফিরে আসে। বুঝতে পারে সিরিয়ায় আসাদের পর আইএস-আল কায়েদা ক্ষমতা দখল করলে, তা আমেরিকা ও সৌদি আরবের জন্য মহাবিপদ ডেকে আনবে। এখন বারাক ওবামা ও তার মিলিটারি কমান্ডাররা বলছেন, এ যুদ্ধ দীর্ঘমেয়াদী হবে। শিশু আয়লানের আত্মত্যাগের বিনিময়ে ইউরোপ দেড় লাখ সিরিয়ান শরণার্থী নিতে রাজি হয়েছে বলে খবরে পড়লাম। বাকি ৩৮ লাখের কী হবে? তারা কি সাগরে ভেসে যাবে? মানবতা ভূমধ্যসাগরে ডুবলে তার অভিশাপ থেকে আমেরিকা, সৌদি আরবসহ কেউ-ই রেহাই পাবে না। ভায়োলেন্স, সশস্ত্র পন্থায় যারা রেজিম চেঞ্জ বা আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করতে চেয়েছেন, তাদের শক্তিমত্তার লম্ফনের জন্যই আজ সাগরে ভাসছে বিশ্বমানবতা, যার শুরু ৯/১১-এর ধ্বংসযজ্ঞের মধ্য দিয়ে। লেখক : ভূরাজনৈতিক ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক
×