ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বিয়ের প্রলোভন ॥ গৃহকর্মীকে এক বছর ধরে ধর্ষণ

প্রকাশিত: ০৫:৫৪, ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৫

বিয়ের প্রলোভন ॥  গৃহকর্মীকে এক বছর ধরে ধর্ষণ

নিজস্ব সংবাদদাতা, মাদারীপুর, ১১ সেপ্টেম্বর ॥ বিজয় গোলদার নামে স্কুল শিক্ষকের বিরুদ্ধে তার গৃহকর্মীকে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে দিনের পর দিন ধর্ষণের অভিযোগ করা হয়েছে। এক পর্যায়ে তাকে বিষ খাইয়ে হত্যার চেষ্টাও করা হয়। গুরুতর অবস্থায় গৃহকর্মীকে রাজৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হলে শুক্রবার ঘটনাটি জানাজানি হয়। বিষয়টি ধামাচাপা দিতে ওই শিক্ষকের আত্মীয় রাজৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও ডাঃ প্রদীপ কুমার ম-ল গৃহকর্মীকে বাজে, খারাপ মেয়ে বলে গালিগালাজ করে তাকে হাসপাতাল থেকে চলে যেতে বলে। জানা গেছে, মাদারীপুর নতুন শহরে বাসা ভাড়া করে থাকেন কুলপদ্বি হাই স্কুলের শিক্ষক বিজয় গোলদার ও তার স্ত্রী রাজৈর উপজেলার নয়াকান্দি বাজিতপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা নিপুনা বিশ্বাস। এক বছর আগে রাজৈর উপজেলা আমগ্রামের মৃত গোবিন্দ রায়ের মেয়ে (১৬) গৃহকর্মী হিসেবে কাজ নেয়। ক’দিন পরই ওই শিক্ষকের স্ত্রী তার কর্মস্থল স্কুলে থাকার সুযোগে জোর করে গৃহকর্মীকে ধর্ষণ করে। ঘটনাটি তার স্ত্রীকে জানাতে নিষেধ করে এবং ভয়ভীতি দেখায়। গৃহকর্মী ভয় ও লজ্জায় কাউকে কিছু না জানিয়ে চুপ থাকে। এভাবে ওই শিক্ষক তাকে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে প্রায় এক বছর ধরে ধর্ষণ করে আসছিল। এক পর্যায় বিজয় গোলদারের স্ত্রী নিপুনা বিশ্বাস ঘটনাটি টের পেয়ে কৌশলে ওই গৃহকর্মীকে বেড়ানোর কথা বলে তার গ্রামের বাড়ি পাঠিয়ে দেয়। গত ৭ সেপ্টেম্বর বিজয় গোলদারের মেয়ের জন্মদিনের অনুষ্ঠানে গৃহকর্মীকে শিক্ষকের বাসায় আসতে বলে। এ সময় বিজয় গোলদার তাকে পানীয়সহ অন্যান্য খাবার খেতে দেয়। খাবার পর গৃহকর্মী বাড়িতে ফিরে যায়। বাড়ি ফিরে সে অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং বমি করতে থাকে। গুরুতর অবস্থায় পরিবারের লোকজন তাকে রাজৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। ওই গৃহকর্মী বলেন, বিজয় গোলদার বিয়ে করার কথা বলে আমাকে দিনের পর দিন...। আমরা গরীব মানুষ, কোন টাকা-পয়সা নাই। ওরা প্রভাবশালী, ওদের অনেক টাকা আছে। আমি জানি এর কোন বিচার পাবো না। তাই মামলা করিনি। তাছাড়া মামলা চালানোর মতো আমাদের কাছে টাকাও নাই। হাসপাতালের ডাঃ প্রদীপ এসে আমাকে বাজে, খারাপ মেয়ে বলে গালিগালাজ করেছে এবং হাসপাতাল ছেড়ে চলে যেতে বলেছে। মাদারীপুর জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মাহমুদা আক্তার কণা বলেন, আমি বিষয়টি জেনে হাসপাতালে গিয়েছিলাম। ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। এ ব্যাপারে সরকারীভাবে মামলার ব্যবস্থা করা হবে। কালকিনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ আনোয়ার হোসেন ভূঁইয়া বলেন, ঘটনার কথা শুনেছি। তদন্ত করে অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
×