ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

চাঁপাইয়ে বাধ্যতামূলক কোচিং করাতে স্কুল সময় পরিবর্তন ॥ সঙ্কটে লক্ষাধিক শিক্ষার্থী

প্রকাশিত: ০৫:৪০, ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৫

চাঁপাইয়ে বাধ্যতামূলক কোচিং করাতে স্কুল সময় পরিবর্তন ॥ সঙ্কটে লক্ষাধিক শিক্ষার্থী

স্টাফ রিপোর্টার, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ॥ জেলার লক্ষাধিক শিক্ষার্থী বড় ধরনের শিক্ষা সঙ্কটের মধ্যে পড়েছে। এদের সকলেই মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থী। জেলায় প্রায় ২১২টি মাধ্যমিক ও অর্ধ শতাধিক নিম্ন মাধ্যমিক স্কুল রয়েছে। পাঁচ থানা মিলিয়ে সরকারী মাধ্যমিক স্কুলের সংখ্যা মাত্র ৪টি। ভোলাহাট ও নাচোল উপজেলায় কোন মাধ্যমিক সরকারী বিদ্যালয় নেই। অর্থাৎ জেলাজুড়ে বেসরকারী পর্যায়ে মাধ্যমিক ও নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা প্রায় ২৪৬টি। দীর্ঘদিন ধরে এসব বেসরকারী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অধিকাংশে সরকারের বিধান অমান্য করে তারা ১০টা, সাড়ে চারটার পরিবর্তে স্কুল সময় করে নিয়েছে সকাল ৮টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত। দেড়টার সময় ছুটি দেয়ার পর প্রায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ২টার পর থেকে ছাত্রছাত্রীরা আবার আসতে শুরু করে। এই সময়ে যারা আসছে তারা স্কুলের পাঠ নিতে নয়। এরা নিজস্ব স্কুলের শিক্ষক দ্বারা প্রভাবিত শিক্ষার্থীদের কোচিং গ্রহণ বা তাদের কাছে প্রাইভেট পড়তে বাধ্য হচ্ছে। অভিভাবক গরিব কিংবা ধনী হোক সে সব বাছবিচার না করে মাথাপিছু মোটা অঙ্কের অর্থ নির্ধারিত করে তার বিনিময়ে স্কুল কক্ষে কোচিং করাচ্ছে এক শ্রেণীর শিক্ষক। দেখে মনে হবে নতুন করে স্কুল শুরু হলো। আর এই সুযোগ ও সুবিধা গ্রহণের জন্য স্কুলের সময় সকাল আটটা থেকে দেড়টা করা হয়েছে। নিজ স্কুলের শিক্ষার্থীদের এভাবে বাধ্য করে টাকার বিনিময়ে কোচিং করার কারণে প্রতিটি স্কুলে স্কুল টাইমের পরিবর্তন ও ক্লাস নেয়ার সময় কমিয়ে আনায় শিক্ষার্থীরা তাদের শিক্ষকদের কাছ থেকে কিছুই শিখতে পারছে না। কোন মনোযোগ নেই শিক্ষকদের শিক্ষার্থীদের শিক্ষা দেয়ার। তবে টাকার বিনিময়ে কোচিং করতে আসা শিক্ষার্থীদের প্রতি মনোযোগ অধিক দিয়ে পড়াচ্ছে। তাই সকালের শিফটের দায়িত্ব পালনে এই অমনোযোগ দেখে মনে হবে বহু কষ্ট করে মনের বিরুদ্ধে কোন রকমে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছে। নিজস্ব স্কুলের শিক্ষার্থীদের প্রতি শিক্ষকদের এহেন আচরণে স্কুলের শিক্ষা একেবারে লাটে উঠেছে। যে সব গরিব শিক্ষার্থী বা তাদের অভিভাবক অভাবের তাড়নায় কোচিং করাার সামর্থ্য নেই তারা বঞ্চিত হচ্ছে পুরাপুরিভাবে স্কুলের শিক্ষা হতে। পুরো বিষয়টি নিয়ে জেলা শিক্ষা অফিসারের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে তাঁর ভাষ্যে উঠে এসেছে পক্ষ-পাতিত্বের প্রমাণ। তিনি জানান, বিকেলের দিকে শিক্ষার্থীরা পড়াশোনায় মনোযোগ না দেয়ার কারণে শিক্ষকরা স্কুল টাইম পরিবর্তন করেছে। পাশাপাশি কোচিং করার ব্যাপারে অভিভাবকের অনুমতির প্রয়োজন রয়েছে। শুধুতাই নয়, খুবই কম অর্থের বিনিময়ে কোচিং করার নির্দেশ রয়েছে।
×