ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ক্যান্সার নির্ণয়ে-

প্রকাশিত: ০৬:০১, ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৫

ক্যান্সার নির্ণয়ে-

অনুকূল পরিবেশ ও পৃষ্ঠপোষকতা পেলে উন্নত বিশ্বের মতো এদেশেও আবিষ্কার, উদ্ভাবন ও দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করা সম্ভব; তার প্রমাণ মিলল সহজে ক্যান্সার নির্ণয় পদ্ধতি উদ্ভাবনের মাধ্যমে। এ উদ্ভাবন শুধু যুগান্তকারীই নয়, চিকিৎসা বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে খুলে দিল এক নতুন দিগন্ত। নারীর স্তন ক্যান্সার নির্ভুলভাবে শনাক্ত করেছেন যারা তাদের আমরা অভিনন্দন জানাই। বিশ্বে নানা রকম রোগের মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত নাম ক্যান্সার। নীরব ঘাতক, এ রোগে আক্রান্ত হলে রোগী মৃত্যুচিন্তায় ভোগেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এর পরিণতি পৃথিবী থেকে চিরবিদায়। সঠিক রোগ নির্ণয়, নিরাময়ের ওষুধ বা থেরাপির অপার্যপ্ততা কিংবা চিকিৎসা ব্যয়বহুল হওয়া, এসব কারণে মূলত বেশিরভাগ রোগী মৃত্যুমুখে পতিত হয়। যদিও বিজ্ঞানের এই উৎকর্ষের সময়ে ক্যান্সার এখন আর আতঙ্কের নাম নয় কিংবা ক্যান্সার হলেই মৃত্যুÑ এ অবধারিত নয়। বহু ধরনের ক্যান্সার নিরাময়যোগ্য। তবে দেরিতে ক্যান্সার নির্ণীত হলে তখন বেশি কিছু করার সুযোগ থাকে না। এ জন্য এখানে ক্যান্সারে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে যায়। দেশে এ রোগের চিকিৎসা ও নিরাময়ের পদ্ধতি প্রশ্নাতীত নয়। বৈশ্বিক পর্যায়ে ক্যান্সার আক্রান্ত নারীদের মধ্যে ২৩ ভাগই স্তন ক্যান্সারে ভোগে। পরিসংখ্যানটি উদ্বেগজনক। বাংলাদেশেও নারী মৃত্যুর প্রধান কয়েকটি কারণের মধ্যে এটি অন্যতম। নতুন উদ্ভাবিত ইলাস্টোগ্রাফি পদ্ধতিটি রোগ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে যেমন দেবে নিশ্চয়তা তেমনি সুচিকিৎসা তথা নিরাময়ের পদ্ধতি বাতলানো হবে সহজতর। এই উদ্ভাবকদের যিনি নেতৃত্বে তিনি কোন চিকিৎসক নন এবং চিকিৎসাশাস্ত্রে আনুষ্ঠানিকও শিক্ষা নেননি। তিনি প্রকৌশলী ড. মোঃ কামরুল হাসান। তার এ প্রচেষ্টায় কি এটাই স্পষ্ট হয় না যে, শুধু আগ্রহ, দরদ, দায়বদ্ধতা আর একাগ্রতার মাধ্যমে যে কোন বিষয়েই বিশেষ অবদান রাখা সম্ভব? স্তন ক্যান্সার নির্ণয় উদ্ভাবনের এ কাজে ছিল পর্যাপ্ত আর্থিক নিশ্চয়তা ও অন্যান্য সুবিধাজনক অনুকূল পরিবেশ। বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের হায়ার এডুকেশন কোয়ালিটি এনহ্যান্সমেন্ট প্রজেক্টের (হেকেপ) অধীনে ছিল এ গবেষণা কর্মযজ্ঞ। সুযোগ-সুবিধা পেলে এদেশে মেধা ও প্রতিভার মাধ্যমে দেশ-জাতি, মানুষের জন্য ইতিবাচক ও কল্যাণকর অবদান রাখা সম্ভব। এ জাতীয় কর্মযজ্ঞে সহায়তার জন্য সরকারের পাশাপাশি সমাজের বিত্তবানদেরও এগিয়ে আসা দরকার।
×