ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সব নদ-নদীর পানি

বিপদসীমার ওপরে

প্রকাশিত: ০৬:৫৩, ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫

বিপদসীমার ওপরে

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ ভারিবর্ষণ আর উজানের ঢলে দেশের সব নদ-নদীর পানি এখন বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। মাঠ-ঘাট জনপদ পানির নিচে তালিয়ে যাওয়ায় নারী-পুরুষ-শিশুদের অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সে তুলনায় ত্রাণসামগ্রী তাদের হাতে পৌঁছেনি। তারা তৈরি খাবারের দাবি করেছে। স্টাফ রিপোর্টার, নিজস্ব সংবাদদাতা ও সংবাদদাতাদের পাঠানো খবর- কুড়িগ্রাম ॥ টানা বর্ষণ ও উজানের ঢলে কুড়িগ্রামের নদ-নদীর পানি বাড়তে থাকায় সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। বুধবার সকালে ধরলা নদীর পানি বিপদসীমার ৪৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা, দুধকুমোরসহ ১৬টি নদ-নদীর পানি বিপদসীমার সামান্য নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নীলফামারী ॥ ভারি বর্ষণ ও উজানের ঢলে নীলফামারীতে তিস্তা নদীর পানি টানা তিন দিন ধরে বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে বুধবার ডিমলা ও জলঢাকা উপজেলার আট ইউনিয়নের তিস্তা অববাহিকায় বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতি ঘটেছে। বন্যায় দুর্গত এলাকায় বসবাসরত ২৫ হাজার মানুষ চরম ভোগান্তির কবলে পড়েছে। পাশাপাশি তিস্তার চরাঞ্চলে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। মুন্সীগঞ্জ ॥ পদ্মা এখনও বিপদসীমার ওপরে রয়েছে। তবে কয়েক দিন ধরে একরকম স্থিতি অবস্থায় রয়েছে। তাই এখনও শ্রীনগর, লৌহজং ও টঙ্গীবাড়ির নি¤œাঞ্চল জলমগ্ন রয়েছে। এদিকে ভারি বর্ষণে মানুষের কষ্ট বেড়েছে। মুন্সীগঞ্জ শহরসহ বিভিন্ন স্থানে দেখা দিয়েছে জলবদ্ধতা। বুধবার সকাল ৬টায় ভাগ্যকুলে পদ্মায় বিপদসমীর ১০ সেন্টিমিটার ওপরে থাকলেও সকাল ৯টায় জোয়ারে ছিল বিপদসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপরে এবং বেলা ১২টায় রেকর্ড করা হয় বিপদসীমার ২২ সেন্টিমিটার ওপরে। এ পয়েন্টে সোমবার সর্বোচ্চ বিপদসমীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপরে এবং মঙ্গলবার সর্বোচ্চ বিপদসীমার ২২ সেন্টিমিটার ওপরে রেকর্ড করা হয়। এদিকে মাওয়ায় সকাল ৬টায় বিপদসীমার ৬ সেন্টিমিটার নিচে এবং বেলা ৯টায় জোয়ারে ৪ সেন্টিমিটার ওপরে এবং বেলা ১২টায় ৬ সেন্টিমিটার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে মাওয়ায় পদ্মা মঙ্গলবার ছিল বিপদসীমার ২ সেন্টিমিটার ওপরে এবং সোমবার ছিল বিপদসীমার ৩ সেন্টিমিটার ওপরে। কয়েক দিনের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, পদ্মার পানি তেমন কমছে না আবার বাড়ছেও না। গাইবান্ধা ॥ উজান থেকে নেমে আসা পানির ঢলে গাইবান্ধায় ঘাঘট, ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা ও করতোয়া নদের পানি আবারও মঙ্গলবার রাত থেকে বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। ব্রহ্মপুত্র নদীর পানি ইতোপূর্বে বিপদসীমার নিচে নামলেও পানি আবারও বেড়ে এখন তা বিপদসীমার তিন সে.মি ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অন্যান্য নদীর পানি বিপদসীমার কাছাকাছি চলে এসেছে। নওগাঁ ॥ গত দু’দিন ধরে অব্যাহত বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলের পানিতে নওগাঁর মান্দায় আত্রাই নদীর পানি ফের হু-হু করে বাড়ছে। একই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে আত্রাইয়ের শাখা ফকির্নী নদীর পানিও। গত ২৪ ঘণ্টায় এ দুই নদীর পানি বেড়ে এখন বিপদসীমার ৬০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে আত্রাই নদীর বেড়িবাঁধ দিয়ে আবারও প্লাবিত হয়েছে ১৫টি গ্রাম। নতুন করে বন্যা দেখা দেয়ায় এসব এলাকার মানুষের দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে। নাটোর ॥ উত্তরের জেলা নাটোরে টানা বৃষ্টিতে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে শতাধিক পরিবার। রাস্তা-ঘাট এমনকি পৌরসভার সুয়ারেজ ড্রেন ডুবে পানি বের না হওয়ায় পৌরবাসীর দুর্ভোগ বেড়েছে দ্বিগুণ। অবিরাম বর্ষণে ভেসে গেছে কমপক্ষে ২০টি পুকুরের মাছ। মোহনগঞ্জ, নেত্রকোনা ॥ কয়েক দিনের টানা বর্ষণ ও উজান থেকে থেমে আসা পাহাড়ী ঢলে তলিয়ে গেছে নেত্রকোনা জেলার ধানভা-ার বলে খ্যাত মোহনগঞ্জের নিম্নাঞ্চল। এখন রোপা আমন চাষের ভরা মৌসুম। ইতোমধ্যে প্রায় নব্বই ভাগ জমি রোপণ করা হলেও গত কয়েক দিনের ভারি বর্ষণে তা সম্পূর্ণ তলিয়ে গেছে।
×