ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ঠাকুরগাঁওয়ে নির্মাণ হতে যাচ্ছে স্বপ্ন পূরণের সেতু

প্রকাশিত: ০৬:৪৯, ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫

ঠাকুরগাঁওয়ে নির্মাণ হতে যাচ্ছে স্বপ্ন পূরণের সেতু

নিজস্ব সংবাদদাতা, ঠাকুরগাঁও, ২ সেপ্টেম্বর ॥ স্বাধীনতার ৪৩ বছর পর ভোগান্তির অবসান ঘটতে যাচ্ছে লক্ষাধিক মানুষের। এই মানুষগুলোকে এতদিন কখনও স্রোতবাহী নদী সাঁতরে কখনওবা নড়বড়ে ও ঝুঁকিপূর্ণ বাঁশের সাঁকো দিয়ে চলাফেরা করতে হয়েছে। আর কিছুদিন পর তারা চলাচল করবে ব্রিজের ওপর দিয়ে। এ যেন তাদের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণের শামিল। বালিয়াডাঙ্গি উপজেলার বড়বাড়ি ইউনিয়নের নয়ারহাট মধুপুর এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, এলাকার তিরনই নদের ওপর সেতু না থাকায় নড়বড়ে ও ঝুঁকিপূর্ণ বাঁশের সাঁকোর ওপর দিয়ে প্রতিদিন কষ্ট করে চলাচল করছেন লক্ষাধিক মানুষ। নদের তীরে ডাঙ্গি ও মিস্ত্রিপাড়া এলাকার লোকজন জানান, নদের পূর্বপাড়ে রয়েছে গুল বস্তি, আগাপাড়া, হিন্দুপাড়া, মধুপুর, দৌগাড়ি, আখানগর, রুহিয়াসহ প্রায় ৪০টি গ্রাম আর পশ্চিম পাশে রয়েছে বালিয়াডাঙ্গি উপজেলা হাসপাতাল, স্কুল ও কলেজ, উপজেলা পরিষদ, বড়বাড়ি ইউনিয়নসহ বিভিন্ন অফিস আদালত। ফলে উভয় পাড়ের শিক্ষার্থী, চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী ও কৃষকদের বাঁশের সাঁকো দিয়ে বিদ্যালয়, কলেজ, অফিস ও হাটে-বাজারে যেতে, মালামাল কেনাবেচা করতে এ সাঁকো দিয়ে কোন রকমে হেঁটে পারাপার করতে পারলেও কোন যানবাহন নিয়ে চলাচল করতে পারে না। এর ফলে এলাকাবাসী তাদের উৎপাদিত খাদ্যশস্য, কৃষিপণ্য ও কাঁচামাল বাজারসহ অন্যান্য হাটে নিয়ে আসতে ভোগান্তির শিকার হয়। ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকো দিয়ে অনেকটা ভীতির মধ্য দিয়ে অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের স্কুলে পাঠায়। অনেক সময় যাতায়াতকারী পথচারীরা সাঁকো ভেঙ্গে নিচে পড়ে আহত হয়েছে। ব্যবসা-বাণিজ্য, হাট-বাজার, কৃষি কাজ ও লেখাপড়ার জন্য দু’পাড়ের মানুষকে নদী পার হতে হয়। কিন্তু দুর্ভাগা মানুষরা সেতুর অভাবে নানা ভোগান্তিতে পড়েছে। বাঁশের সাঁকো তাদের পারাপারের একমাত্র ভরসা। এলাকাবাসী জানান, আমরা এ অঞ্চলের অবহেলিত জনগণ। আমরা অনেক দিন ধরে ব্রিজের স্বপ্ন দেখে আসছি কিন্তু আমাদের স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যায়। আজ আমাদের কাক্সিক্ষত স্বপ্নটি বাস্তব হতে যাচ্ছে। তারা আরও জানান, বাপ-দাদারা কষ্ট করে গেছে আমরা স্বাচ্ছন্দ্যে যাতায়াত করতে পারব। আমাদের আর কষ্ট করে যাতায়াত করতে হবে না। আমরা আশা করছি আমাদের কাক্সিক্ষত স্বপ্নটি অতি শীঘ্রই পূরণ হবে। বালিয়াডাঙ্গি উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী মইনুল ইসলাম জানান, এ সপ্তাহেই ব্রিজের কাজ শুরু করা হবে। ৭২ মিটার এই ব্রিজ নির্মাণের জন্য বরাদ্দ ধরা হয়েছে দুই কোটি ৭৪ লাখ টাকা। আট মাসের মধ্যে ব্রিজ নির্মাণের কাজ শেষ করার কথা বলা হয়েছে ঠিকাদারকে। ঠাকুরগাঁও-২ আসনের সংসদ সদস্য দবিরুল ইসলাম জানান, এলাকার মানুষের দীর্ঘদের দাবি ছিল তিরনই নদীর ওপর ব্রিজ নির্মাণ হবে। ব্রিজটির নির্মাণ কাজ শেষ হলে লক্ষাধিক মানুষের স্বাচ্ছন্দ্যে যাতায়াতের সুযোগ পাবে।
×