ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

অর্থবছর শেষে লক্ষ্যমাত্রা ৫ থেকে ৬.২ শতাংশের মধ্যেই থাকবে

আগস্টে মূল্যস্ফীতি কমে ৬.১৭ শতাংশে

প্রকাশিত: ০৬:৪১, ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫

আগস্টে মূল্যস্ফীতি কমে ৬.১৭ শতাংশে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ আগস্ট মাসে দেশের সার্বিক মূল্যস্ফীতির হার কমেছে। এ হার দাঁড়িয়েছে পয়েন্ট টু পয়েন্টে ৬ দশমিক ১৭ শতাংশে, যা গত জুলাই মাসে ছিল ৬ দশমিক ৩৬ শতাংশ। অন্যদিকে ২০১৪ সালের আগস্ট মাসে ছিল ৬ দশমিক ৯১ শতাংশ। এ সময় খাদ্য ও খাদ্যবহির্ভূত উভয় পণ্যের ক্ষেত্রেই মূল্যস্ফীতি কমেছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হিসাব অনুযায়ী এসব তথ্য প্রকাশ করেছেন পরিকল্পনামন্ত্রী আহম মুস্তফা কামাল। বুধবার তিনি রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে তিনি এসব তথ্য উপস্থাপন করেন। এ সময় সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য (সিনিয়র সচিব) ড. শামসুল আলম, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য আরাস্তু খান, হুমায়ুন খালিদ, আইএমইডি সচিব সহিদ উল্লা খন্দকার, পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা সচিব কানিজ ফাতেমা ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর মহাপরিচালক আবদুল মজিদ উপস্থিত ছিলেন। মূল্যস্ফীতি কমার কারণ হিসেবে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলে দাম কমে যাওয়া, বাংলাদেশ ব্যাংকের সকর্তমূলক মুদ্রানীতির প্রভাব, টাকার মান স্থিতিশীল থাকা, চালের দাম না বাড়া বা কোন ক্ষেত্রে কমে যাওয়া এসব কারণে মূল্যস্ফীতি কমতির দিকে রয়েছে। আশা করছি অর্থবছর শেষে লক্ষ্যমাত্রা ৫ থেকে ৬.২ শতাংশের মধ্যেই থাকবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বাড়ানোয় মূল্যস্ফীতিতে তেমন কোন প্রভাব পড়বে না। এতে দুশ্চিন্তার কিছু নেই। তাছাড়া শহরে গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়েছে। আমাদের অধিকাংশ মানুষই তো থাকে গ্রামে, তাই সার্বিকভাবে জীবনযাত্রার ওপর ওইভাবে কোন খারাপ প্রভাব পড়বে না। বিবিএসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সার্বিকভাবে আগস্ট মাসে দেশে খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৬ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ, যা জুলাই মাসে ছিল ৬ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ। গত বছরের আগস্ট মাসে ছিল ৭ দশমিক ৬৭ শতাংশ। অন্যদিকে খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৬ দশমিক ৩৫ শতাংশ, যা জুলাই মাসে ছিল ৬ দশমিক ৮০ শতাংশ এবং গত বছরের আগস্ট মাসে ছিল ৫ দশমিক ৭৬ শতাংশ। গ্রামে সার্বিক মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ৭৬ শতাংশ, যা জুলাই মাসে ছিল ৫ দশমিক ৮৮ শতাংশ এবং গত বছরের আগস্ট মাসে ছিল ৬ দশমিক ৮৩ শতাংশ। গ্রামে খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৫ দশমিক ৪২ শতাংশ, যা জুলাই মাসে ছিল ৫ দশমিক ৪৩ শতাংশ এবং গত বছরের আগস্ট মাসে ছিল ৭ দশমিক ৫৬ শতাংশ। অন্যদিকে আগস্ট মাসে খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৬ দশমিক ৪১ শতাংশ, যা জুলাই মাসে ছিল ৬ দশমিক ৬৯ শতাংশ এবং গত বছরের আগস্ট মাসে ছিল ৫ দশমিক ৪৬ শতাংশ। শহরে সার্বিক মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে পয়েন্ট টু পয়েন্টে ৬ দশমিক ৯৪ শতাংশ, যা জুলাই মাসে ছিল ৭ দশমিক ২৮ শতাংশ এবং গত বছরের আস্ট মাসে ছিল ৭ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ। খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৭ দশমিক ৫৬ শতাংশ, যা জুলাই মাসে ছিল ৭ দশমিক ৫৮ শতাংশ এবং গত বছরের আগস্ট মাসে ছিল ২ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ। অন্যদিকে আগস্ট মাসে শহরে খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৬ দশমিক ২৬ শতাংশ, যা জুলাই মাসে ছিল ৬ দশমিক ৯৬ শতাংশ এবং গত বছরের আগস্ট মাসে ছিল ৬ দশমিক ১৯ শতাংশ। মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে পরিকল্পনামন্ত্রী আহম মুস্তফা কামাল কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান শুমারি ২০১৫ এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। এ সময় তিনি বলেন, সরকারী-বেসরকারী ও এনজিওর মাধ্যমে পরিচালিত কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানগুলোর দক্ষতা উন্নয়ন সংক্রান্ত কার্যক্রমের বাস্তব অবস্থা সম্পর্কে অবহিত হওয়ার জন্য বিবিএস প্রথমবারের মতো এ শুমারি করতে যাচ্ছে। শুমারির মূল লক্ষ্য হলো প্রতিষ্ঠানিকভাবে যেখানে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ প্রদানের সুযোগ রয়েছে সেসব প্রতিষ্ঠানের বিস্তারিত তথ্য যেমন, প্রতিষ্ঠানের ধরন ও মালিকানা, পঠিত কোর্সসমূহ, শিক্ষক/শিক্ষিকার সংখ্যা, ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা, ল্যাব বা ওয়ার্কশপের সুবিধা, চাকরির সুবিধা, ইন্টার্নশিপ সুবিধা ও অসুবিধাগুলো চিহ্নিত করে সেসব তথ্য একত্রিত করে প্রকাশ করা এবং সেই তথ্য অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানগুলোর সার্বিক উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
×