ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ধারাবাহিক সাফল্যের প্রত্যাশা

সমাজ ভাবনা ॥ এবারের বিষয় ॥ ফুটবলের সেকাল-একাল

প্রকাশিত: ০৬:২৭, ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫

সমাজ ভাবনা ॥ এবারের বিষয় ॥ ফুটবলের সেকাল-একাল

প্রিন্স বিশ্বাস ফুটবল বাংলাদেশের মানুষের অন্যতম প্রিয় খেলা। কিন্তু সে কথা এখন বিশ্বাস করতে কষ্ট ও দ্বিধা হয়। উৎসাহ, উদ্যম ও উদ্দীপনার মিশ্রণে এক ভরপুর লড়াই উপভোগ করত দর্শকরা। সে সময় অর্থাৎ অতীতে ফুটবল ম্যাচ বিশেষ করে আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচ ঘিরে ছিল টান টান উত্তেজনা। সময়ের স্রোতধারায় ফুটবলের সোনালী সময়ে লেগেছিল ভাঁটার টান। বর্তমানে খেলার মাঠের অপ্রতুলতা বা সঙ্কট প্রায় সব জায়গায়। জীবন এক সুদীর্ঘ পথ-পরিক্রমা। সময়ের যাত্রায় আসে বিভিন্ন পরিবর্তন, পরিবর্ধন, সংযোজন এবং বিয়োজন। ফুটবলেও এর ভিন্নতা বা ব্যতিক্রম হয়নি। ফুটবল খেলার নিয়মে ও খেলার মানে এসেছে বিভিন্ন কৌশল এবং উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার। কিন্তু তারপরও সেই হারানো জৌলুস বা সোনালী সময় যা বর্তমান বাফুফে ও সাফের সভাপতি মোঃ কাজী সালাউদ্দিন এবং গোলাম সারওয়ার টিপু, আসলাম ও পরবর্তীকালে মতিউর মুন্না প্রমুখ ক্রীড়া-ব্যক্তিত্বের আমলে ছিল সেটা প্রায় হারিয়ে যেতে বসেছিল। প্রচলিত প্রবাদ আছে যে, দিনের প্রথম প্রভাত বা সকাল সমস্ত দিনের পূর্বাভাস দেয়। আর একটি সুন্দর কথা হলো যে, আজকের শিশুই আগামী দিনের ভবিষ্যত। কবিতায় আছেÑ ঘুমিয়ে আছে শিশুর পিতা সব শিশুরই অন্তরে। সময় যে সর্বশ্রেষ্ঠ ওষুধ, সর্বরোগের উপশম এ কথা কে না জানে। সময়ের বাঁক পেরিয়ে এখন আবার ফিরে আসছে বাংলাদেশের ফুটবলের সুসময়। সাফ অনুর্ধ-১৬ ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপে চ্যাম্পিয়ন, শুধু চ্যাম্পিয়ন বললে বাংলাদেশের কিশোর ফুটবলের মেরুদ- অর্থাৎ সাফ অনুর্ধ-১৬ দলের অপরাজিত চ্যাম্পিয়নদের প্রাপ্য সম্মান দিতে কার্পণ্য হয়ে যায়। তাই বলতে হবে, স্বল্প সময়ের ভেতর মেধা, প্রতিভা ও সামর্থ্যরে সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করে অনুর্ধ-১৫ ফুটবল টুর্নামেন্ট থেকে উঠে আসা এসব ফুটবলারকে একত্রিত করে গঠিত হয়েছে লড়াকু টিম। এছাড়াও এই অনুর্ধ-১৬ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে দর্শকদের উপস্থিতি, বিশেষ করে সেমিফাইনালে সিলেটের ছেলে সাদউদ্দিন সিলেটের মাঠে গোল করায় দর্শকপূর্ণ ও দর্শকধন্য সিলেট স্টেডিয়ামকে দিয়েছে ভিন্ন মাত্রার এক অপূর্ব অবয়ব। অনুর্ধ-১৬ দলের চ্যাম্পিয়ন ট্রফি তুলে দেয়ার সময় সাফ এবং বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন বলেছিলেন যে, সার্ক দেশসমূহের ফুটবল এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি হিসেবে সাফ আয়োজিত প্রতিটি ফুটবল প্রতিযোগিতার চ্যাম্পিয়ন ট্রফি তাকে তুলে দিতে হয়। আর তিনি তার অন্যতম স্বপ্ন বাংলাদেশ দলের হাতে ট্রফি তুলে দেয়ার। তার এই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করেছে বাংলাদেশ অনুর্ধ-১৬ সাফ অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন দলের সদস্যবৃন্দ। মালয়েশিয়া জাতীয় দলের সঙ্গে আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে বাংলাদেশের জাতীয় ফুটবল দলের গোলশূন্য ড্র এবং গোলরক্ষক শহীদুল আলম সোহেলের (বাংলাদেশ গোলরক্ষক) পারফরম্যান্স ছিল অসাধারণ। বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া সিরিজে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল ভাল কিছু করবে বলে প্রত্যাশা করি। শেখ জামাল ধানম-ি ক্লাব দেশে ও দেশের বাইরে বাংলাদেশের ফুটবলের ক্লাবের এক অন্য ধরনের মান বা স্ট্যান্ডার্ড তৈরি করেছে যার ধারাবাহিকতায় গত বছর ভারতে অনুষ্ঠিত আইএফএ শিল্ডে রানার্স আপ এবং পরবর্তীকালে ভুটানে অনুষ্ঠিত কিংস কাপে চ্যাম্পিয়ন এবং সম্প্রতি এএফসির বাছাই পর্বে জায়গা করে নিয়েছে। আসলে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে বলা যায় ফিরে আসছে ‘বাংলাদেশের ফুটবলের সোনালী দিন’ যা আমাদের ফুটবলকে এগিয়ে নেবে ক্রমান্বয়ে। সাফল্যের অগ্রযাত্রার বিস্তৃত দিগন্তে। মঠবাড়ীয়া, পিরোজপুর থেকে
×