ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

পদ্মার অব্যাহত ভাঙ্গনে বিলীন হয়ে যাচ্ছে খড়িয়া গ্রাম

প্রকাশিত: ০৫:৪১, ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫

পদ্মার অব্যাহত ভাঙ্গনে বিলীন হয়ে যাচ্ছে খড়িয়া গ্রাম

স্টাফ রিপোর্টার, মুন্সীগঞ্জ ॥ পদ্মা সেতুর কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডের নদী ভাঙ্গন বন্ধ রয়েছে। ভাঙ্গন চলছে পাশের খড়িয়া গ্রামে। বিলীন হয়ে যাচ্ছে বিস্তীর্ণ এলাকা। সহায়সম্বল হারিয়ে পরিবারগুলো এখন দিশাহারা। পদ্মার পানি বিপদসীমার ওপর থাকলেও গত কয়েক দিন ধরে স্থিতিশীল রয়েছে। এদিকে নৌ ও পানি সম্পদমন্ত্রীর ড্রেজিং করে স্রোত মূল পদ্মায় নিয়ে আসার ঘোষণা এখনও বাস্তবায়ন হয়নি। এদিকে পদ্মা সেতু প্রকল্পের পাশের গ্রামে এই ভাঙ্গন দেখা দিলেও সব মোকাবেলা করে পদ্মা সেতুর কাজ চলছে স্বাভাবিক গতিতে। বিআইডব্লিউটিএর নির্বাহী প্রকেীশলী (ড্রেজিং) সুলতান উদ্দিন খান বিকেলে জানান, বুধবার ভোর সাড়ে ৫টায় বিআইডব্লিউটিএর একটি ড্রেজার দিয়ে মাটি কেটে ভাঙ্গন এলাকায় ডাম্পিং শুরু হয়েছে। খননকৃত মাটি সেখানে ফেলায় সাময়িক ভাঙ্গন রোধ হতে পারে বলে তিনি মনে করেন। তবে চরের মুখটি কাটার ব্যাপারে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলী। তারা প্রকল্প প্রণয়নের চেষ্টা করছে। গত বুধবারের পর পদ্মা সেতুর কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডে নতুন করে আর কোন ভাঙ্গন দেখা দেয়নি। বাঁশ ও বালুর বস্তা দিয়ে আটকানো হয়েছে। যে কোন পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য প্রস্তুত রয়েছে চীনের মেজর ব্রিজ কোম্পানি। এর আগে মূল সেতু এলাকা থেকে প্রায় ১ কিলোমিটার ভাটিতে লৌহজংয়ের কুমারভোগে পদ্মা সেতুর কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডের এই ভাঙ্গন প্রথম দেখা দেয় গত ২৭ জুন। সে সময় ১শ’ মিটার দীর্ঘ ও ৫০ মিটার প্রস্থ এলাকায় বিলীন হয়। এর পর ২য় দফা ২৩ আগস্ট রাতে এই ইয়ার্ডে আকস্মিক ভাঙ্গনে বিলীন হয় প্রায় ২শ’ মিটির দীর্ঘ এবং প্রায় ৫০ মিটার প্রস্থ এলাকা। ২৬ আগস্ট সকালে তৃতীয় দফা ভাঙ্গনে এখানে প্রায় ২০ মিটার দীর্ঘ এবং ৪ মিটার প্রস্থ এলাকা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। বাঁশ ও খুঁটির বেড়া দিয়ে সেখানে জিও ব্যাগভর্তি বালু ফেলার পর ভাঙ্গন আপাতত বন্ধ হয়েছে। তার পরও অতিরিক্ত সতর্কতামূলকভাবে জিও ব্যাগভর্তি বালির বস্তা ফেলা হয়েছে। এদিকে লৌহজং উপজেলার পুরনো মাওয়া ফেরিঘাট, শিমুলিয়া, হলদিয়া এবং কুমারভোগের পাশের খড়িয়া এলাকায়ও পদ্মা ভাঙ্গন চলছে। বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে খড়িয়া গ্রামটি। এই গ্রামের ১৫৫ পরিবার এখন গৃহহারা। ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক কুদ্দুস আলী সরকার জানান, সরকারীভাবে ৮৮ পরিবারকে ২০ কেজি করে চাল ও ৫ হাজার টাকা করে বিতরণ করা হয়েছে। তবে ভারি বর্ষণের কারণে ভাঙ্গনের তীব্রতা বেড়েছে এবং বেড়েছে দুর্গত মানুষের কষ্ট । ঘরবাড়ি ছাড়াও বিলীন হয়ে গেছে শিমুলিয়া বাজারের একাংশ, সরকারী পিচঢালা রাস্তা, পুকুর, গরুর খামার, অসংখ্য গাছপালা, বৈদ্যুতিক পোলসহ নানা স্থাপনা। হুমকির মুখে রয়েছে বহু স্থাপনা।
×