ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বেনাপোল কাস্টম হাউসে প্রায় ৬০ কোটি টাকা কম রাজস্ব আদায়

প্রকাশিত: ০৬:৫২, ২ সেপ্টেম্বর ২০১৫

বেনাপোল কাস্টম হাউসে প্রায় ৬০ কোটি  টাকা কম রাজস্ব আদায়

আবুল হোসেন, বেনাপোল থেকে ॥ দেশের বৃহত্তম স্থলবন্দর বেনাপোলে আমদানি ও রফতানি বাণিজ্যে ধস নামতে শুরু করেছে। কাস্টমস, বন্দর ও নানা সংস্থার হয়রানির কারণেই এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেছেন। ব্যবসায়ীরা বলছে, আগে প্রতিদিন যেখানে ৪ থেকে ৫শ’ ট্রাক পণ্য আমদানি হতো এখন তা ২শ’ থেকে আড়াই শ’ ট্রাকে নেমে এসেছে। ফলে বেনাপোল কাস্টমস হাউস থেকে রাজস্বও কম আদায় হচ্ছে। ২০১৫-১৬ অর্থ বছরের প্রথম দুই মাসে বেনাপোল কাস্টম হাউসে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৫৯ কোটি ৪৪ লাখ টাকা কম রাজস্ব আদায় হয়েছে। দুই মাসে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪৯৫ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। সেখানে আদায় হয়েছে ৪৩৬ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। বেনাপোল দেশের সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর। কলকাতা থেকে মাত্র আড়াই ঘণ্টায় মাল আনা যায় বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে। আর সে কারণে আমদানিকারকরা এ পথে আমদানি করতে চাইলেও কাস্টমস ও বন্দরে হয়রানি, শুল্ক ফাঁকি, চোরাচালানরোধসহ বন্দরের অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও অব্যবস্থাপনা দূর করতে পারলে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ কয়েকগুণ বেশি হবে বলে মনে করছেন এখানকার ব্যবসায়ীরা। দেশের চাহিদার অধিকাংশ পণ্যই এই স্থল পথে আমদানি-রফতানি হয়ে থাকে। কিন্তু সম্প্রতি বেনাপোল দিয়ে আমদানি কমতে শুরু করেছে। আমদানিকৃত পণ্যের মূল্য বাড়িয়ে দেয়া, প্রতিটি কেমিক্যাল পণ্য টেস্টে পাঠানো, দিনের পর দির ফাইল আটকে রাখা, অতিরিক্ত অর্থ আদায়সহ নানাবিধ হয়রানির কারণে আমদানিকারকরা এ বন্দর থেকে মুখ ঘুরিয়ে নিয়েছেন বলে ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেছেন। কাস্টম সূত্রে জানা যায়, চলতি অর্থ বছরের জুলাইয়ে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৪৩ কোটি ১৪ লাখ টাকা। এর বিপরীতে আদায় হয়েছে ১৯০ কোটি ১৮ লাখ টাকা। আগস্টে ২৫২ কোটি ৪৯ লাখ টাকার বিপরীতে আদায় হয়েছে ২৪৬ কোটি ৬১ লাখ টাকা। বেনাপোল সিএ্যান্ডএফ এজেন্ট এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন বলেন, কতিপয় কাস্টমস কর্তাদের অহেতুক হয়রানির কারণে রাজস্ব আদায়ে লক্ষ্য পূরণ করতে পারিনি। এছাড়া সপ্তাহে দুই একদিন অনলাইন সিস্টেম বিকল, শতভাগ কায়িক পরীক্ষা করানোর কারণেও ব্যবসায়ীরা অন্য বন্দরের দিকে ঝুঁকে পড়ছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে রাজস্ব আদায় চরমভাবে বাধাগ্রস্ত হবে। হয়রানি, বন্দরের অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি দীর্ঘদিনের দাবিকৃত ক্লিয়ারিং হাউস চালু হলে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা কয়েকগুণ বাড়বে।
×