ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মাদক পুনর্বাসন কেন্দ্র বাড়ছে বগুড়ায় ॥ চলছে অপচিকিৎসা

প্রকাশিত: ০৫:৪৪, ২ সেপ্টেম্বর ২০১৫

মাদক পুনর্বাসন কেন্দ্র বাড়ছে বগুড়ায় ॥ চলছে অপচিকিৎসা

মাহমুদুল আলম নয়ন, বগুড়া অফিস ॥ বগুড়ায় মাদকের সর্বনাশা থাবা বিস্তারের সঙ্গে অনুমোদনহীন মাদক নিরাময় ও পুনর্বাসন কেন্দ্রের সংখ্যাও বাড়ছে। এমনকি চিকিৎসক ছাড়াও চালান হচ্ছে সাইনবোর্ড সর্বস্ব অনেক মাদক নিরাময় ও পুনর্বাসন কেন্দ্র। অনুমোদিত কেন্দ্রের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ প্রতিষ্ঠান চলছে অবৈধভাবে কোন রকম নিয়ম না মেনেই। ফলে একদিকে যেমন মাদকাসক্ত ব্যক্তিরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তেমনি ব্যাঙের ছাতার মতো শহরের আশপাশে বিভিন্ন এলাকায় গড়ে উঠছে মাদক নিরাময় কেন্দ্র। এ ধরনের অনেক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে চিকিৎসার নামে মাদক কারবারেরও অভিযোগ উঠেছে। আবাসিক ব্যবস্থায় মাদক নিরাময় চিকিৎসার নামে মাদকাসক্ত ব্যক্তির পরিবার থেকে প্রতি মাসে হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে মোটা অংকের টাকা। বিভিন্ন অভিযোগের প্রেক্ষিতে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর বগুড়া এ ধরনের ২টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নিয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, মাদক ব্যবসায়ীদের তৎপরতার কারণে বগুড়ায় মাদকসেবীদের সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে চলছে। এর মধ্যে ইয়াবা ও ফেনসিডিলসেবীদের সংখ্যা উদ্বেগজনক। এসব মাদকের বড় বড় চালান চিহ্নিত স্পটে চলে যাওয়ায় সেবীদের সংখ্যাও বাড়ছে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর বগুড়া উপ-অঞ্চল সূত্র জানায়, জেলায় অনুমোদিত মাদক নিরাময় ও পুনর্বাসন কেন্দ্র রয়েছে ১০টি। এর বাইরে আরও প্রায় ২০টি কেন্দ্র অবৈধভাবে চলছে। তবে এর মধ্যে ৮টি অবৈধ কেন্দ্রের তালিকা পাওয়া গেছে। অন্যগুলোর তালিকা তৈরির কাজ চলছে। সূত্র জানায়, মাদক নিরাময় ও পুনর্বাসনের নামে গড়ে ওঠা কেন্দ্রগুলোতে চিকিৎসার নামে চলছে অপচিকিৎসা। আবার একই কেন্দ্রে মানসিক রোগীরও কথিত চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। চিকিৎসার নামে আটকে রেখে নির্যাতন চালানোর ঘটনাও ঘটছে। অনেক কেন্দ্রে আবার মাদক বিক্রি হচ্ছে। বেশিরভাগ নিরাময় কেন্দ্রে মাদক নিরাময় বিষয়ের কোন চিকিৎসক পর্যন্ত নেই। রেজিস্টার্ড চিকিৎসক ছাড়াই সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রের পরিচালকরা কথিত চিকিৎসা দিচ্ছেন। এতে নিরাময়ের ক্ষেত্রে রোগীরা প্রতারিত হচ্ছেন। সূত্র জানায়, বগুড়ায় প্রতিনিয়ত মাদকাসক্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর বগুড়া অঞ্চল জানায়, জেলার অনুমোদিত ১০টি কেন্দ্র থেকে চলতি বছরের এপ্রিল থেকে জুন এই তিন মাসে ১৮৯ জন নতুন রোগী ভর্তি হয়। অপরদিকে একই সময়ে গত বছর এসব নিরাময় কেন্দ্রে মাদকাসক্ত রোগী ভর্তি হয়েছিল ১৬৪ জন। সূত্র আরও জানায়, চলতি বছরের জুলাই মাসে জেলায় ভ্রাম্যমাণ আদালতসহ মাদক সংক্রান্ত নিয়মিত মামলা হয়েছে মামলা ২৩৪টি। বগুড়ার পুলিশ সুপার আসাদুজ্জামান জানিয়েছেন মাদক কারবারীদের তালিকা করে অভিযান চলছে এবং পুলিশ এ বিষয়ে কাউকে ছাড় দিবে না।
×