ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

বিশ্ব এ্যাথলেটিক্সের আলোচিত ‘পাঁচ’

প্রকাশিত: ০৫:৪৮, ১ সেপ্টেম্বর ২০১৫

বিশ্ব এ্যাথলেটিক্সের আলোচিত ‘পাঁচ’

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ চীনের বেজিংয়ে শেষ হলো ৯ দিনের মহাযজ্ঞ। বিশ্ব এ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপসে এবার শ্রেষ্ঠত্ব নিয়ে শেষ করেছে। সর্বাধিক ৭ স্বর্ণসহ ১৬ পদক নিয়ে শেষ করেছে তারা। যদিও বেশি পদক জয়ের দিক থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রই এগিয়ে। ৬টি করে স্বর্ণ, রৌপ্য ও ব্রোঞ্জ জিতে তাদের সংগ্রহ ১৮ পদক। কিন্তু সেরা দল হিসেবে ঘরে ফিরেছে কেনিয়ার এ্যাথলেটরাই। প্রথমবারের মতো বিশ্ব আসরে সেরা হওয়ার খেতাব জিতেছে তারা। এমন সাফল্যের জন্য দেশটির প্রেসিডেন্ট উহুরু কেনিয়াট্টা রবিবার রাতেই অভিনন্দন জানিয়েছেন এ্যাথলেটদের। দেশের যুব উন্নয়ন কার্যক্রম আরও শক্তিশালী ও গতিময় করার জন্য সর্বস্তরের সবাইকে আহ্বান জানিয়েছেন তিনি যাতে করে পরবর্তী সময়ে বিশ্বের যে কোন প্রতিযোগিতামূলক প্রোগ্রামে সেরা হতে পারে কেনিয়া। কিন্তু কেনিয়ার নির্দিষ্ট কোন এ্যাথলেটের দিকে বিশ্বের ক্রীড়ামোদীদের তেমন আকর্ষণ ছিল না। সব নজর কেড়ে নিয়েছিলেন পাঁচ তারকা। এর মধ্যে কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন জ্যামাইকার গতিদানব উসাইন বোল্ট। উসাইন বোল্ট ॥ এবার শঙ্কা ছিল সর্বকালের সবচেয়ে গতিময় এ জ্যামাইকান স্প্রিন্টারকে নিয়ে। কারণ ৬ সপ্তাহ ট্র্যাক এ্যান্ড ফিল্ডের বাইরে ছিলেন এবং বেজিংয়ে আসার আগ পর্যন্ত মাত্র দু’বার ১০ সেকেন্ডের নিচে টাইমিং। মৌসুমে ব্যক্তিগত সেরা ৯.৮৭ সেকেন্ড টাইমিং নিয়ে র‌্যাঙ্কিংয়ে ৬ নম্বরে অবস্থান। সে কারণে এবার বোল্টের সাম্রাজ্য লুণ্ঠন করে সিংহাসনে আরোহন করবেন মার্কিন স্প্রিন্টার জাস্টিন গ্যাটলিন এমনটাই মনে করেছেন অনেকে। কারণ টানা ২৮ রেস জয় এবং মৌসুম সেরা ৯.৭৪ টাইমিং বলছিল বোল্টের চেয়ে বর্তমান সময়ে এগিয়ে আছেন তিনি। তবে মূল লড়াইয়ে আর পারলেন না গ্যাটলিন। যেমনটা তিনি আগে ৭ বারের লড়াইয়ে ছয়বারই পারেননি। এবার অবশ্য ১০০ মিটারে দারুণ লড়াই হয়েছিল দু’জনের মধ্যে। উত্তেজনাটাও তাই সর্বোচ্চ বিন্দু পেরিয়ে গিয়েছিল উপস্থিত দর্শকদের। কিন্তু সেই দম বন্ধ করে রাখা চরম উত্তেজনা মাত্র ৯.৮০ সেকেন্ড স্থায়ী হয়েছে। কারণ ৯.৭৯ সেকেন্ডে আবারও দ্রুততম মানব হয়েছেন বোল্ট এবং ৯.৮০ সেকেন্ড টাইমিং নিয়ে পুরনো দিনের মতোই ‘বিদ্যুত’ বোল্টের পেছনে থেকে গেছেন গ্যাটলিন। এরপর ২০০ মিটার এবং ৪ী১০০ মিটার রিলেতেও বোল্টের কাছে নতি স্বীকার করেছেন তিনি। আবারও ট্রেবল জয় করে ফিরেছেন বিশ্বসেরা বোল্ট। এ্যাশটন ইটন ॥ এবারের বিশ্ব আসরে বিশ্ব রেকর্ডের অভাব ছিল। একমাত্র বিশ্বরেকর্ডটাই গড়েছেন ইটন। মার্কিন এ আইরনম্যান পুরুষদের ডেকাথলনে আগে থেকেই ছিলেন ফেবারিট। সেই তকমাটা ধরে রেখে জিতেছেন স্বর্ণপদক। ধরে রেখেছেন গত আসরের খেতাবটা। সবমিলিয়ে ৯ হাজার ৪৫ পয়েন্ট স্কোর করেন তিনি, যা নতুন বিশ্বরেকর্ড। এর আগের বিশ্বরেকর্ডটাও ছিল তার নিজেরই গড়া। ৬ পয়েন্ট পেছনে ফেলেছেন পুরনো রেকর্ডটাকে। শুধু তাই নয় ডেকাথলনের ৪০০ মিটারে ৪৫ সেকেন্ড এবং ১০০ মিটারে ১০.২৩ সেকেন্ড সময় নিয়ে নতুন চ্যাম্পিয়নশিপস রেকর্ড গড়েছেন। ড্যাফনে শিপার্স ॥ অনেক বড় একটা বিস্ময় হল্যান্ডের এ স্প্রিন্টার। কারণ মস্কোয় দুই বছর আগের বিশ্ব আসরে তিনি অংশ নিয়েছিলেন হেপ্টাথলনে। এবার কোচের অনুপ্রেরণায় অনুশীলন নিয়ে বিশ্ব আসরের স্প্রিন্ট ইভেন্টে অংশ নিয়েছেন। যদিও বিশ্বের দ্রুততম মানবী হতে পারেননি অল্পের জন্য, অভিজ্ঞ শেলী এ্যান ফ্রেজার-প্রাইসের কাছে হেরে গেছেন। কিন্তু ২০০ মিটারে নতুন চ্যাম্পিয়নশিপস রেকর্ড গড়েছেন। ৩৬ বছর আগের রেকর্ড ভেঙ্গে দিয়েছেন, হয়েছে নতুন ইউরোপিয়ান রেকর্ডও। সময় নেন তিনি ২১.৬৩ সেকেন্ড। গত বছর ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপসে ডাবল জয়ের পর তিনিই ছিলেন ফেবারিট। মো ফারাহ ॥ ক্যারিয়ারের তৃতীয়বার ডাবল জিতেছেন সোমালিয়া বংশোদ্ভূত এ ব্রিটিশ দূরপাল্লার দৌড়বিদ। আগের বিশ্ব আসরে ডাবল জিতেছিলেন। এবারও ডাবল জিতে নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন তিনি। কারণ এর আগে বিশ্ব এ্যাথলেটিক্সের ইতিহাসে আর কোন দৌড়বিদ ৫ ও ১০ হাজার মিটার দৌড়ে টানা দু’বার চ্যাম্পিয়ন হতে পারেননি। ২০১২ অলিম্পিকেও ডাবল জিতেছিলেন তিনি। এ্যারিস মেরিট ॥ কিছুটা ব্যর্থতার গল্পই বলা যেতে পারে। পুরুষদের ১১০ মিটার হার্ডেলসে ফেবারিট ছিলেন মার্কিন এ এ্যাথলেট। কিন্তু সেই প্রত্যাশামাফিক নৈপুণ্য দেখাতে পারেননি এবার। তবে কিডনি সমস্যার কারণে তিনি শেষ পর্যন্ত ব্রোঞ্জ জিততে পেরেছেন সেটাও কম বিস্ময়ের নয়।
×