ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

জেন্ডার সমতা আনতে দলীয় স্বার্থের উর্ধে উঠে কাজ করতে হবে

প্রকাশিত: ০৫:৩০, ১ সেপ্টেম্বর ২০১৫

জেন্ডার সমতা আনতে দলীয় স্বার্থের উর্ধে উঠে কাজ করতে হবে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজনৈতিক ক্ষমতায়নে জেন্ডার সমতা আনতে সব রাজনৈতিক দলের নারী নেতাকর্মীদের নিজদলীয় স্বার্থের উর্ধে উঠে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ। একই সঙ্গে জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনে সরাসরি নির্বাচনের ব্যবস্থা করা, একাদশ ও দ্বাদশ সংসদে নারী আসনসংখ্যা এক-তৃতীয়াংশে উন্নীত করা, সংসদের চলতি অধিবেশনে এ সংক্রান্ত বিল উত্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ এবং নারী সংসদ সদস্যদের সুনির্দিষ্ট দায়িত্ব পালনের জন্য এলাকা ও অর্থ বরাদ্দ রাখাসহ সাত দফা সুপারিশ করেছে সংগঠনটি। সোমবার বিকেলে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন : রাজনৈতিক দল ও জাতীয় সংসদে নারীর কার্যকর অংশগ্রহণ’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় এসব সুপারিশ তুলে ধরা হয়। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের এই আয়োজনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির বর্তমান ও সাবেক নির্বাচিত এবং সংরক্ষিত আসনের নারী সংসদ সদস্য, নারী নেত্রীরা অংশ নেন। আয়োজক সংগঠনের সভাপতি আয়শা খানম এতে সভাপতিত্ব করেন। বক্তব্য রাখেন বেগম সাগুফতা ইয়াসমিন এমপি, বেগম জেবুন্নেসা আফরোজ এমপি, বেগম ফজিলাতুন নেসা বাপ্পী এমপি, সাবেক সংসদ সদস্য রাশেদা বেগম হীরা, নারী ফোরামের সভাপতি রওশন জাহান সাথী, বাসদের ঢাকা মহানগর শাখার নেত্রী প্রকৌশলী শম্পা বসু প্রমুখ। সভায় সংগঠনের আন্দোলন উপপরিষদ সম্পাদক কাজী সুফিয়া আখতার মহিলা পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির লিখিত বক্তব্য ও সুপারিশমালা উপস্থাপন করেন। এতে বলা হয়, বিশ্বের মোট ৪৫ হাজার ৮ জন সংসদ সদস্যের মধ্যে নারী সংসদ সদস্য মাত্র ৯ হাজার ৮৩০ জন। শতাংশের হিসেবে নারীদের সংখ্যা মাত্র ২১ ভাগ। আমাদের দশম জাতীয় সংসদে মাত্র সাড়ে ৬ শতাংশ নারী (২১ জন) সরাসরি নির্বাচিত হয়েছেন। সংরক্ষিত আসনের নারীদের নিয়ে এ হার ২০ শতাংশ। ২০২০ সালের মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর সাংগঠনিক পর্যায়ের প্রতিটি স্তরে ৩৩ শতাংশ নারী অন্তর্ভুক্তির কথা বলা হলেও সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নে দৃশ্যমান ধারাবাহিক কোন উদ্যোগ নেই। এজন্য এসব দলের নারী নেতাকর্মী এবং সংসদ সদস্যদের দলীয় রাজনীতির উর্ধে উঠে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যে কাজ করতে হবে। সভায় আগামী নির্বাচনে প্রতিটি রাজনৈতিক দল থেকে এক-তৃতীয়াংশ নারী প্রার্থীর মনোনয়ন প্রদানের ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনকে আরও কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার অনুরোধ জানানো হয়। সাগুফতা ইয়াসমিন বলেন, শিক্ষা এবং অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জিত হলে নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। এজন্য ’৯৬ সালে প্রণীত নারী নীতির পরিপূর্ণ বাস্তবায়নে সকল রাজনৈতিক দলকে ঐকমত্য হতে হবে। তিনি বলেন, আফ্রিকার রুয়ান্ডার মতো উন্নয়নশীল একটি দেশ সিডও সনদের অধিকাংশ বিষয় বাস্তবায়ন করে ফেলেছে। তাদের কাছ থেকে শিক্ষা নেয়া উচিত। স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ের নির্বাচনগুলোতে অধিকসংখ্যক নারীর মনোনয়ন দেয়ার জন্য তিনি আহ্বান জানান। রাশেদা বেগম হীরা বলেন, দেশের বড় দুইটি দলের দুই নেত্রীর গ্রহণযোগ্যতা রাজনীতিতে নারীদের অংশগ্রহণে ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে। তবে দুই দলের নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে নারীদের অংশগ্রহণ আরও বাড়াতে হবে। ফজিলাতুন নেসা বাপ্পী বলেন, নারীর ক্ষমতায়নের বর্তমান সাফল্য নারী আন্দোলনের ফসল। সারাবিশ্বে এবং দক্ষিণ এশিয়ায় নারী উন্নয়নের বিভিন্ন সূচকে বাংলাদেশ উন্নতি করছে। এ ধারা অব্যাহত রাখতে বড় রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্য কাম্য।
×