ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

জাকারিয়া স্বপন

লজ্জা নিবারণ

প্রকাশিত: ০৫:১৫, ৩১ আগস্ট ২০১৫

লজ্জা নিবারণ

গত কয়েক সপ্তাহে বেশ মজার একটি বিষয় ঘটেছে। জাপানের এশিয়া-প্যাসিফিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মাত্র সাতজন ছাত্রছাত্রী বাংলাদেশে থাকাকালীন ঢাকা শহরের ময়লা পরিষ্কারের কাজে নেমে পড়ে। পাঁচ দিনে মোট পাঁচটি এলাকায় তারা এই অভিযান চালায়। বিষয়টি তেমন কিছুই না- শুধু এক জোড়া গ্লাভস এবং ময়লা ফেলার ব্যাগ নিয়ে রাস্তায় নেমে পড়া। কিন্তু এই সামান্য বিষয়টিই বাংলাদেশের অসংখ্য মানুষের হৃদয় ছুঁয়ে গেছে। তারা প্রথম দিন পরিষ্কার করে ঢাকার বনানীর ১১নং সড়ক। তাদের সঙ্গে যোগ দেয় ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের কর্মীরা। দ্বিতীয় দিন তারা বেছে নেয় গুলশান ২নং চক্কর। কিন্তু কিছুক্ষণ কাজ করার পর শুরু হয় বৃষ্টি। ফলে তাদের কাজ থামিয়ে দিতে হয়। তবে ততক্ষণে ফেসবুকে মানুষ তাদের কার্যক্রমকে অভিনন্দন জানাতে শুরু করে। কয়েকটি পত্রিকায় বেশ বড় ছবি ছাপা হয়। মানুষের আগ্রহ বেড়ে যায়। তারপর তৃতীয় দিন তারা পরিষ্কার করে ঢাকার ইন্দিরা রোড। চতুর্থ দিন ঢাকার আসাদ গেট। পঞ্চম দিন তারা পরিষ্কার করে গাবতলী (পর্বত সিনেমা হল) এলাকা। সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত চলে এই কার্যক্রম। বাংলাদেশে যেটা হয়Ñ কেউ কোন একটা কাজ শুরু করলে তার চারদিকে মানুষ ভিড় করতে থাকে। দূরে দাঁড়িয়ে তা দেখতে থাকে। কেউ কেউ নিজেদের মোবাইল দিয়ে ছবি তুলে তা ফেসবুকে শেয়ার করে এবং সেই ছবিগুলো নিয়ে বেশ সমালোচনা হয়। অসংখ্য মানুষ ফেসবুকে এই দাঁড়িয়ে থাকা এবং ছবি তোলার মানুষের সমালোচনা করেন। বিষয়টি চোখে পড়ার মতো ছিল এবং লজ্জারও বটে! ॥ দুই ॥ আমেরিকায় থাকার সময় শনিবারটা ছিল আমার খুবই মধুর একটা দিন। সপ্তাহের প্রথম ছুটির দিন। শুক্রবার রাতটা যতটা আকাক্সিক্ষত, শনিবার সকালটা আমার জন্য ছিল আরও বেশি রোমাঞ্চকর। সকালে একটু দেরি করে ঘুম থেকে ওঠা এবং তারপর নাস্তা সেরে বারান্দায় নরম তুলতুলে রোদের সঙ্গে বসে কফি খাওয়া। (আহ! আবার কবে যে পাব সেই শনিবার সকাল!) আমেরিকার সিলিকন ভ্যালি আমার দ্বিতীয় থাকার জায়গা। বাংলাদেশ এবং ক্যালিফোর্নিয়ার সিলিকন ভ্যালি- এই দুটো জায়গা ছাড়া পৃথিবী নামক গ্রহের আর কোথাও নিজেকে আপন মনে হয় না। কেন জানি না, নিজেকে যুক্ত করতে পারি না। বেড়াতে গেলে মনে হয় অতিথি। কিন্তু সানফ্রান্সিসকো বিমানবন্দরে নামার পর যে অনুভূতি হয়, একই রকম লাগে যখন ঢাকার মাটি ছুঁয়ে যায় বিমানের চাকাগুলো। সিলিকন ভ্যালির সবচে সুন্দর যে জিনিস তা হলো ওয়েদার। এর থেকে ভাল ওয়েদার পৃথিবীর খুব কম জায়গায় আছে। সারাটা বছর যেন এয়ার কন্ডিশনের ভেতরে রয়েছেন আপনি। হালকা টি-শার্ট পরে কাটিয়ে দেয়া যায় মাসের পর মাস। বছরে শীতকালটা কেবল পিচপিচে বৃষ্টি, যা আমার একটুও ভাল লাগে না। (বৃষ্টি হবে ঝুম বৃষ্টি!) বছরের এই একটি মাস ছাড়া এগারো মাস যেন পুরো শহরটাই শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। রাতে সারাবছর একটা কোমফোর্টার নিয়ে ঘুমানো- বাড়িতে এসির প্রয়োজন নেই। এমন তুলতুলে সকালে যখন কফির মগ নিয়ে বারান্দায় বসে থাকতাম, সামনের রাস্তায় দেখা যেত স্কুল-কলেজের ছেলেমেয়েরা ড্রেস পরে রাস্তা পরিষ্কার করতে এসেছে। সিলিকন ভ্যালি দরিদ্র শহর নয় যে, স্কুলের ছেলেমেয়েদের রাস্তা পরিষ্কার করতে হবে। কিন্তু বাচ্চাগুলো কত আগ্রহ নিয়েই না পাতা আর অন্যান্য ময়লা কালো প্লাস্টিকের ব্যাগে করে নিয়ে যেত, যেন নিজের বাগান পরিষ্কার করছে। আমেরিকার মতো ধনী দেশের ছেলেমেয়েরা রাস্তা পরিষ্কার করে কেন? তাও আবার ক্লাসের দিন নয়, ছুটির দিনÑ যেদিন তাদের সময়টা পরিবারের সঙ্গে কাটানোর কথা! ওখানকার সিটি কর্পোরেশনের বিশাল গাড়িগুলো তো নিয়মিত শহর পরিষ্কার করছেই, তবুও স্কুলের ছাত্রছাত্রী কেন? এর মাধ্যমে তারা তাদের দেশকে ভালবাসতে শেখে, তাদের ভেতর দায়িত্ববোধ তৈরি করে, যেন তারা নিজেরা রাস্তা ময়লা না করে। এর মাধ্যমে টিমওয়ার্ক তৈরি হয়, যেন একে অপরের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করতে পারে। এর ভেতর দিয়ে এক ধরনের ওনারশিপ তৈরি হয়, যা বাংলাদেশের মানুষের ভেতর প্রচ-ভাবে অনুপস্থিত। এখানে সবাই দর্শক হয়ে যায়, কর্মী হয়ে ওঠে না। কারণ তাদের ভেতর ওনারশিপ তৈরি হয়নি। বাংলাদেশের মানুষ এটাকে সরকারের কাজ মনে করে, এই দেশ এই শহর তাদের নিজেদের মনে করে না এবং এই পুরো কাজটি হচ্ছে স্বেচ্ছাসেবা। যে কারণে আমেরিকার একজন ছাত্রছাত্রী নিজে কাজ করে টাকা জমিয়ে আফ্রিকায় অন্যের বাড়ি তৈরি করতে চলে যায়। সেখানে নিজের খরচে মাসের পর মাস থাকে, বাড়ি বানায় দরিদ্র মানুষের জন্য এবং কোন রকম প্রতিদানের জন্য অপেক্ষা না করেই ফিরে আসে দেশে। কিন্তু বাংলাদেশে কখনও শুনবেন না যে, নিজের পয়সায় কোন ছাত্রছাত্রী খাগড়াছড়ি গিয়ে অন্যের জন্য মাসের পর মাস পড়ে আছে। এই প্রক্রিয়াগুলো মানুষকে ভলান্টারি কাজ করতে শেখায় এবং জীবনের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টে দেয়। আমি এবং আমার স্ত্রী বারান্দায় বসে ওই বাচ্চাগুলোকে দেখতাম আর নিজেদের মধ্যে বলতাম, ইস বাংলাদেশেও যদি এমনটা করা যেত! কিন্তু বাংলাদেশে কাজ করা এতটাই কঠিন যে, বেঁচে থাকার জন্য যেটুকু প্রয়োজন তা মেটাতেই পুরো সময়টা চলে যাচ্ছে। অনেকবার অফিসের সহকর্মীদের সঙ্গে আলাপ করেছি, আমরা প্রতি মাসে আমাদের অফিসের সামনের রাস্তাটুকু পরিষ্কার করতে পারি কি-না! রাস্তায় এত ময়লা আর সহ্য হয় না। কিন্তু হয়ে উঠছিল না। তাই যেদিন শুনলাম আমাদের অফিসের কাছেই আসছে ‘ক্লিন আপ ঢাকা’ দলÑ আমরা ঝাঁপ দিয়ে পড়লাম। অফিসের একজন সহকর্মী খবরটা দিল। আমরা আর দেরি না করে পরদিন সকালেই তাদের সহযোগিতা করার জন্য নেমে পড়লাম। আহ, এর থেকে প্রশান্তির আর কী হতে পারে! ॥ তিন ॥ আমরা কাজ করছিলাম ঢাকার আসাদ গেট এলাকায়। ‘ক্লিন আপ ঢাকা’ দলের সঙ্গে যোগ দিয়েছিল মোহাম্মদপুরের গ্রীন হ্যারাল্ড স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা। তাদের সঙ্গে কয়েকজন শিক্ষকও রয়েছেন, যেন ছাত্রছাত্রীদের কোন সমস্যা না হয়। একই সঙ্গে হাত লাগিয়েছেন সিটি কর্পোরেশনের কর্মীরা। আমরা গ্লাভস পরে যখন রাস্তা পরিষ্কারে নেমে যাই তখন সকালে মানুষ অফিসের জন্য ছুটছে। আর এদিকে ফুটপাথ পরিষ্কারে হাত লাগাচ্ছে সবাই। আমাদের পরিচয় এবং উদ্দেশ্য বলার পর আমাদের স্বাগত জানালো ‘ক্লিন আপ ঢাকা’র প্রতিষ্ঠাতা জাওয়াদ মোবাশ্বির। আমাদের কাছে ব্যাগ ছিল না। আমরা স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের কাছে থাকা ব্যাগ ব্যবহার করতে শুরু করলাম। কয়েকজন ছাত্রছাত্রী গ্লাভস চাইল। আমাদের কাছে কিছু বাড়তি গ্লাভস ছিল, সেগুলো দিয়ে দিলাম। ছেলেমেয়েগুলোর সঙ্গে কথা বলছিলাম আর রাস্তা থেকে ময়লা তুলে সেই ব্যাগে রাখছিলাম। আমার নিজেকে এত সুখী মানুষ আর কখনই মনে হয়নি। গ্রীন হ্যারাল্ড স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের জন্য রইল অনেক অনেক ভালবাসা। আমি তাদের এটিচিউড দেখে এতই মুগ্ধ যে, ঠিক করেছি আমার নিজের মেয়েকে গ্রীন হ্যারাল্ডে ভর্তি করানোর চেষ্টা করব। ঢাকার ফুটপাথে কী থাকে, জানেন কেউ? সবচে বেশি থাকে সিগারেটের ফেলে দেয়া অংশ আর সিগারেটের প্যাকেট। বাংলাদেশের মানুষ যদি সিগারেট খাওয়া বন্ধ করতে পারত কিংবা সিগারেটের খাওয়া অংশটুকু রাস্তায় না ফেলত তাহলে ঢাকা শহর অর্ধেক পরিষ্কার হয়ে যেত। তারপর থাকে প্রস্রাব বা মূত্র। ঢাকা শহরে প্রস্রাব করার জায়গা নেই। তাই রাস্তার ধারেই দাঁড়িয়ে যায় মানুষ। তারপর সেগুলোর ওপর এসে জড়ো হয় আবর্জনা, ঠোঙ্গা, কাগজ, কাঁচের ভগ্নাংশ, লোহার টুকরো, কনডম ও কনডমের কভার এবং আরও কত কী! এগুলো আমাদের নির্দিষ্ট কোথাও ফেলার জায়গা নেই। পুরো শহরটাই যেন একটা ডাস্টবিন। সেই ডাস্টবিন পরিষ্কার করে সাধ্য কার! ॥ চার ॥ বাংলাদেশের মানুষের নখরার শেষ নেই। জাপানী সাতজন ছাত্রছাত্রী এই কাজটি করে আমাদের চোখে যেমন আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিল এই শহরটি কতটা ময়লা এবং সেই কাজটি করে সমালোচনার মুখেও পড়েছে তারা। আর তাদের সঙ্গে যুক্ত হয়ে আমরাও যেন পাপ করে ফেলেছি! কত রকমের প্রশ্ন মানুষের মনে! এটা লোক দেখানো পরিষ্কার, ক্যামেরার জন্য করা, মিডিয়ার ফোকাসের জন্য করা হয়েছে। বিদেশীরা করেছে বলে এত কথা, আমরা করলে এই ফোকাস পেত না, নিজেদের অফিসের লোগোযুক্ত টি-শার্ট পরে গেছেন কেন, খালি গায়ে যাননি কেন, কতদিন আর থাকবে এই পরিষ্কার, এমন লোক দেখানো কাজ না করলেই কি নয়! এমন অসংখ্য দুশ্চিন্তায় রয়েছেন অনেক বাংলাদেশী। (আল্লাহ তাদেরকে কী দিয়ে যে তৈরি করেছেন, তা তিনিই কেবল জানেন!) যে মানুষগুলোর মনের ভেতরে অসংখ্য সন্দেহ তাদের জন্য কিছু কথা না বললেই নয়। পয়েন্ট করে কিছু কথা সোজা বলে দিইÑ ক) আমি নিজে কেন রাস্তা পরিষ্কার করতে গিয়েছিলাম, শুনতে চান? তাহলে শুনুনÑ আমার লজ্জা হয়েছিল। স্রষ্টা আমাকে কিছু লজ্জা দিয়ে এই পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন। সেই লজ্জা নিবারণ করতে রাস্তায় নেমেছিলাম। বিদেশী কিছু তরুণ-তরুণী এসে আমাদের শহর পরিষ্কার করে, আমাদের গু-মুত হাতড়ে বেড়ায় আর আমরা দূরে দাঁড়িয়ে থেকে সেলফি তুলি, চিড়িয়াখানার জীব দেখার মতো ভিড় করে দাঁড়িয়ে থাকি আর ফেসবুকে সেগুলো নিয়ে দিনরাত কচর কচর করিÑ লজ্জা হয় না? আমার লজ্জা হয়। আমি সেই লজ্জা ঢাকতে ওদের সাহায্য করতে গিয়েছিলাম। কাউকে জানিয়েও যাইনি, কাউকে ডাকও দিইনি। নিজের লজ্জা নিজেই নিবারণ করা ভাল। আপনাদের যদি লজ্জা থাকত তাহলে যে এলাকায় তারা গেছে তাদের সঙ্গে আপনারাও রাস্তায় নামতেন। খ) এরা কি পুরো ঢাকা শহর পরিষ্কার করে ফেলবে? না, এরা সেটা করবে না। কিন্তু এই প্রক্রিয়া আমাদের সবাইকে সচেতন হতে সহায়তা করবে। একটি শহরকে কিভাবে পরিষ্কার রাখতে হয় তা আমরা শিখিনি। আমরা একটা বাড়িই পরিষ্কার রাখতে পারি না, আর শহর! এসব কার্যক্রম আমাদের বিভিন্ন বিষয় শিখতে সহায়তা দেবে। আমাদের শহর পরিষ্কার রাখতে হবে আমাদেরই। গ) মিডিয়া কাভারেজের জন্য এটা করা হয়েছে বলে যারা ভাবছেন তাদের জন্য বলিÑ মিডিয়া কাভারেজ না হলে আপনি বিষয়টি জানতেন কিভাবে? এটা কি দান-খয়রাত নাকি যে, গোপনে করতে হবে? এটা তো সবাইকে ডেকে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিতে হবে যে, দ্যাখ তোদের গু-মুত পরিষ্কার করে কে! আমি তো মনে করি, মিডিয়া যথেষ্ট কাভারেজ দেয়নি। মিডিয়ার উচিত ছিল এটাকে সামনে রেখে জনগণকে আরও সক্রিয় করা। মানুষ যদি না পাল্টায় কারো ক্ষমতা নেই এই শহরকে পরিষ্কার রাখে। ঘ) ঢাকা শহর কি সহসাই সুন্দর বাসযোগ্য একটি শহরে পরিণত হবে? সোজা উত্তর হলোÑ না। ঢাকা শহর মোটেও বাসযোগ্য একটি শহর নয়। বিগত ২০ বছরের ট্রেন্ড দেখলে বোঝা যাবে, ঢাকা শহর প্রতি বছর থাকার মানের দিক থেকে নিচের দিকে গেছে। দালানকোঠা ওঠা মানেই যদি হয় ভাল জীবনযাপন তাহলে আর কথা নেই। মাঝে-মধ্যে ভাবি, এই শহর ছেড়ে যদি অন্যত্র গিয়ে থাকতে পারতাম তবুও কিছুটা শারীরিকভাবে ভাল থাকতাম। এত পলিউশন এই শহরেÑ নিজের আয়ুর বিনিময়ে থাকা এবং এসব অনুষ্ঠান করার পরও সহসা ঢাকা শহর থাকার যোগ্য হয়ে উঠবে না। ভাল থাকার জন্য একটা সম্মিলিত প্রচেষ্টা থাকতে হয়। বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত এমন একটি উদাহরণ দেখাতে পারেনি যেখানে সবাই একমত হয়েছে কিংবা হয়েছিল। একটি উদাহরণও নেই। যারা এফোর্ড করতে পারছে তারা এই দেশ, এই শহর ছেড়ে চলে যাচ্ছে। তবে এই নেতিবাচক মানসিকতার ভেতরও আমি একটা আশার আলো দেখতে পেয়েছি। জাপানী ছাত্রছাত্রীদের এই ছোট একটি কর্মকা- অসংখ্য মানুষকে লজ্জার মধ্যে ফেলেছে। বেশিরভাগ মানুষ এটাকে ইতিবাচক হিসেবে নিয়েছে এবং কিভাবে এটাকে একটা স্থায়ী কার্যক্রমে নিয়ে যাওয়া যায় তা নিয়ে ভাবতে শুরু করেছে। এটা খুবই ভাল একটা দিক বলে আমি মনে করি। একটা যে পরিবর্তন প্রয়োজন তা সর্বস্তরের মানুষ বুঝতে পেরেছে। এই বোঝার বিষয়টিই প্রথম দরকার ছিল। পরিশেষে কেবল একটি কথাই বলব, যতদিন না মানুষ এই মাটিকে নিজের মনে করবে, এই দেশকে নিজের মনে করবে, এই শহরকে নিজের মনে করবেÑ ততদিন এই সন্দেহপ্রবণ বাঙালীকে নিয়ে এভাবেই খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলবে আমাদের জীবন। এই শহর পরিষ্কার করার আগে নিজের মনকে পরিষ্কার করুন, নিজের চিন্তাকে স্বচ্ছ করুন, আরও বিস্তৃত করুন। চলুন, আমরা যে যার জায়গা থেকে নিজের স্থানটুকু পরিষ্কার রাখি। পুরো শহর এমনিতেই পরিষ্কার থাকবে। ২৮ আগস্ট ২০১৫ লেখক : তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ এবং সম্পাদক, প্রিয়.কম ুং@ঢ়ৎরুড়.পড়স
×