ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

আট দুগ্ধ ও গবাদি পশু উন্নয়ন খামারে লোকসান ২৪ কোটি টাকা

প্রকাশিত: ০৮:০৭, ৩০ আগস্ট ২০১৫

আট দুগ্ধ ও গবাদি পশু উন্নয়ন খামারে লোকসান ২৪ কোটি টাকা

সংসদ রিপোর্টার ॥ গত দশ মাসে আটটি সরকারী দুগ্ধ ও গবাদী পশু উন্নয়ন খামারে লোকসান হয়েছে প্রায় ২৪ কোটি টাকা। ওইসব খামারে প্রয়োজনের চেয়ে ১০ গুণ বেশি ব্যয় হয়েছে। নানান অনিয়ম, দুর্নীতি ও অবহেলার কারণে প্রতিবছর সরকারকে এ বিপুল পরিমাণ লোকসান দিতে হচ্ছে উল্লেখ করে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। সম্প্রতি জাতীয় সংসদে অনুষ্ঠিত বৈঠকে সরকারী দুগ্ধ ও গবাদী উন্নয়ন খামারগুলোর সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে দেয়া এক প্রতিবেদনে খামারগুলোর ২০১৪ সালের জুলাই থেকে চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত ১০ মাসের আয়-ব্যয়ের হিসাব তুলে ধরা হয়। প্রতিবেদন অনুযায়ী, খামারগুলোতে ১০ মাসে ২৬ কোটি ৭৪ লাখ ১০ হাজার ৭০৫ টাকা ব্যয় হয়েছে। আর এই সময়ে মাত্র দুই কোটি ৭৮ লাখ ৩০ হাজার ৯৮ টাকা আয় হয়েছে। অর্থাৎ লোকসান হয়েছে ২৩ কোটি ৯৫ লাখ ৮০ হাজার ৬৬৭ টাকা। কমিটি সূত্রে জানা গেছে, ওই লোকসানের বিষয়ে সংসদীয় কমিটি জানতে চাইলে সন্তোষজনক কোন ব্যাখ্যা দিতে পারেননি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। পরে লোকসানের কারণ অনুসন্ধান ও করণীয় নির্ধারণে কমিটির সদস্য কামাল আহমেদ মজুমদারকে আহ্বায়ক করে দুই সদস্যের সাব কমিটি গঠন করা হয়েছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে সাব কমিটিকে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, সাভারের কেন্দ্রীয় গো-প্রজনন ও দুগ্ধ খামারে ১০ মাসে খামার পরিচালনায় সরকারের ১৩ কোটি ৮৮ লাখ ৫১ হাজার ১১৫ টাকা আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। যা আটটি খামারের মধ্যে সর্বোচ্চ লোকসান। অপরদিকে রাজশাহীর রাজবাড়ী হাট দুগ্ধ ও গবাদী পশু উন্নয়ন খামার লোকসানের দিক থেকে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। এই খামারে একই সময়ে দুই কোটি ৯৯ লাখ ৫৩ হাজার ৭৩২ টাকা লোকসান হয়েছে। এছাড়া বাগেরহাটের মহিষ প্রজনন ও উন্নয়ন খামারে এক কোটি ৬১ লাখ ৬৪ হাজার ১৪৭ টাকা, সিলেটের জেলা দুগ্ধ খামারে এক কোটি ৩৭ লাখ ৮ হাজার ৯৬০ টাকা, ফরিদপুরের দুগ্ধ ও গবাদী জাত উন্নয়ন খামারে এক কোটি ৫৩ লাখ ৮৫ হাজার ১৬৮ টাকা, বরিশালের কাশিপুরে দুগ্ধ ও গবাদী পশু উন্নয়ন খামারে এক কোটি ৪ লাখ ৬৬ হাজার ২৮১ টাকা, চট্টগ্রামের হাটহাজারী দুগ্ধ ও গবাদী পশু উন্নয়ন খামারে ৯৮ লাখ ৪৯ হাজার ৯৩৯ টাকা এবং বগুড়ার শেরপুরে দুগ্ধ ও গবাদী পশু উন্নয়ন খামারে ৫২ লাখ ৬০ হাজার ৯৩৯ টাকা লোকসান হয়েছে। এদিকে মন্ত্রণালয় এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, সাভারের কেন্দ্রীয় গো-প্রজনন ও দুগ্ধ খামার, সিলেটের জেলা দুগ্ধ খামার, রাজশাহীর রাজবাড়ী হাট দুগ্ধ ও গবাদী পশু উন্নয়ন খামার, ফরিদপুরের দুগ্ধ ও গবাদী জাত উন্নয়ন খামার, বাগেরহাটের মহিষ প্রজনন ও উন্নয়ন খামার, চট্টগ্রামের হাটহাজারী দুগ্ধ ও গবাদী পশু উন্নয়ন খামার, বগুড়ার শেরপুরে দুগ্ধ ও গবাদী পশু উন্নয়ন খামার এবং বরিশালের কাশিপুরে দুগ্ধ ও গবাদী পশু উন্নয়ন খামারে মোট এক হাজার ৭৩৬টি গাভী রয়েছে। যা থেকে ১০ মাসে ৫ লাখ ৩২ হাজার ৫৬৯ লিটার দুধ পাওয়া গেছে। এছাড়া খামারগুলোতে ৪২৯টি গবাদী পশুর বাচ্চা রয়েছে। এই খামারগুলোতে দুধ উৎপাদনের পাশাপাশি ষাঁড় উৎপাদন শুরু করা হয়েছে। তবে কোন খামারই লাভের মুখ দেখেনি। উল্টো সরকারের ভর্র্তুকি বাড়ছে।
×