ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

কাল রাজধানীতে মহানগর আওয়ামী লীগের সুবিশাল শোক র‌্যালি

প্রকাশিত: ০৫:৩৭, ২৯ আগস্ট ২০১৫

কাল রাজধানীতে মহানগর আওয়ামী লীগের সুবিশাল  শোক র‌্যালি

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আগামীকাল রবিবার রাজধানীতে সুবিশাল শোক শোভাযাত্রা বের করবে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ। হাজার হাজার নেতাকর্মীর সমাগম ঘটিয়ে ওই দিন বিকেলে কালো পতাকা হাতে নিয়ে পায়ে হেঁটে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকে ধানম-ির ৩২ নম্বর বঙ্গবন্ধু ভবনের সামনে গিয়ে শেষ হবে শোভাযাত্রা। আর ৯ সেপ্টেম্বর ৪০ দিনব্যাপী আওয়ামী লীগের শোকের কর্মসূচীর সমাপনী দিনে তারা ঢাকায় আলোচনা সভার আয়োজন করবে। শুক্রবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের এক বর্ধিত সভায় এসব কর্মসূচী চূড়ান্ত করা হয়। বৈঠকে নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম বলেন, ষড়যন্ত্র অব্যাহত আছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ষড়যন্ত্রকারীরা যে কোন সময় আঘাত করতে পারে। তাই দলীয় নেতাকর্মীদের সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে। তিনি বলেন, ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছিল সেই সত্তরের নির্বাচন থেকে। একাত্তরে ষড়যন্ত্র হয়েছে, ’৭৫-এ তারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে। এখন শেখ হাসিনা তাদের টার্গেট। তারা জানে বঙ্গবন্ধুর রক্ত বেইমানি করে না। এ কারণে তারা শেখ হাসিনাকে টার্গেট করে বার বার হত্যার চেষ্টা করেছে। ষড়যন্ত্র মোকাবেলা ও শেখ হাসিনাকে রক্ষা করতে আমাদের রাজপথে রক্ত দিতে প্রস্তুত থাকতে হবে। আর বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার হয়েছে। কিন্তু বঙ্গবন্ধু হত্যার পেছনে দেশী-বিদেশী যে ষড়যন্ত্র ছিল সেই ষড়যন্ত্রকারীদের আইনের আওতায় এনে বিচার করতে হবে। তিনি বলেন, কান্নাকাটি আর আবেগ দিয়ে রাজনীতি হয় না। রাজনীতি করতে হলে আন্দোলন সংগ্রাম করতে হয়। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও খাদ্যমন্ত্রী এ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেন, বিএনপির নেতা তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মামলা হওয়ায় বিএনপি যতই বিষোদগার করুক, সহিংসতার নির্দেশদাতা হিসেবে তারেক রহমান রেহাই পাবে না। সহিংসতায় সরাসরি জড়িত থাকার পাশাপাশি অর্থ যোগানদাতা ও পরিকল্পনাকারী সবাইকে শাস্তি পেতে হবে। তদন্তে যার বিরুদ্ধে অপরাধের তথ্য প্রমাণ পাওয়া যায় তার বিরুদ্ধেই মামলা হয়। অপরাধী কেউ পার পাবে না, বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়াতেই হবে। সাজা ভোগ করতেই হবে, কোন ছাড় নেই। যে অপরাধ করে সে যেমন অপরাধী, তেমনি যিনি অপরাধের নির্দেশ দেন তিনিও সমান অপরাধী। ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এম এ আজিজের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন ফয়েজউদ্দিন মিয়া, শেখ বজলুর রহমান, মুকুল চৌধুরী, হাজী মোহাম্মদ সেলিম, আওলাদ হোসেন ও শাহে আলম মুরাদ প্রমুখ। বিদ্যুত-গ্যাসের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করুন- সুরঞ্জিত ॥ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টাম-লীর সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধিকে ‘ন্যায়বিচারের পরিপন্থী ও অগ্রহণযোগ্য’ আখ্যায়িত করে সরকারকে বিষয়টি পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, বিদ্যুত ও গ্যাসের দাম বাড়তেই পারে। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো, যখন সারা পৃথিবীতে অবিশ্বাস্যভাবে জ্বালানি তেলের দাম কমছে, তখন আপনি দাম কমান না। যখন বাড়ে, তখন আপনি বলেন সমন্বয় করতে হবে, দাম বাড়াতে হবে। এটা ঠিক না। শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স মিলনায়তনে বঙ্গবন্ধু একাডেমি আয়োজিত এক আলোচনা সভায় শেখ হাসিনাকে নিয়ে নানা রকম ষড়যন্ত্রের যে বক্তৃতা আওয়ামী লীগের নেতারা করছেন সেটাকে উড়িয়ে দিয়ে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, আশির দশকের রাজনীতি একবিংশ শতাব্দীতে অচল। ওই সময় হত্যা-খুনের রাজনীতি করে সরকার পরিবর্তন করা যেত। এখন তার কোন সুযোগ নেই। আর আমাদের পক্ষ থেকে এ ধরনের কথা বলে সিমপ্যাথি নিয়ে মূলত ভীতি ছড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। এটার দরকার নেই। দেশের রাজনীতি স্থিতিশীল আছে। দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার কারণেই আওয়ামী লীগ সমর্থকরা বার কাউন্সিল নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে। তিনি বলেন, জাসদ-আওয়ামী লীগ নিয়ে সম্প্রতি বিতর্ক হচ্ছে। এটা অনভিপ্রেত, অপ্রাসঙ্গিক ও অরাজনৈতিক। জাসদের অতীত, ইতিহাস, ঐতিহ্য কী সেটা আপনারাও জানেন, আমরাও জানি। জেনেই আমরা জোট বেঁধেছি। এখন অতীত টেনে লাভ কী? অতীতের ভুল-ভ্রান্তি নিয়েই আমাদের এগুতে হবে। তাছাড়া কে কোথায় কখন কী করল, তা নিয়ে ভাবলে চলবে? বরং আমাদের সামনের দিকে এগুতে হবে। আসলে আগস্ট এলেই আওয়ামী লীগের আবেগ বেড়ে যায়। এই বিতর্ক আগস্টের আবেগ ছাড়া কিছুই নয়। তাই রাবারের মতো টেনে এটাকে আর বড় না করার জন্য তিনি দু’দলের নেতা ও গণমাধ্যমের প্রতি আহ্বান জানান। আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগ নেতা হাজী মোহাম্মদ সেলিম এমপি, জাকির আহমাদ, আবদুল হাই কানু, হুমায়ুন কবির মিজি প্রমুখ। আওয়ামী লীগের অনেক নেতা শেখ হাসিনাকে দুর্বল করতে চান- চীফ হুইপ ॥ আওয়ামী লীগের এমন অনেক নেতা আছেন যারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দুর্বল করতে চান এমন অভিযোগ করে জাতীয় সংসদের চীফ হুইপ আ স ম ফিরোজ বলেন, ষড়যন্ত্রকারীদের একটি অংশ আওয়ামী লীগের নাম নিয়ে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে। এদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। শুক্রবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির ভিআইপি লাউঞ্জে জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। বঙ্গবন্ধু নাগরিক সংহতি পরিষদের সভাপতি অধ্যক্ষ শেখ আবদুল হালিমের সভাপতিত্বে সভায় জাতীয় কবি নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মোহিত উল আলম, সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক এম এ জাফর মোল্লা প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। আ স ম ফিরোজ বলেন, কিছু কুচক্রীমহল আছে যারা দেশের স্বাধীনতায় চায়নি। এজন্য তারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে। আর এ হত্যাকা-ের মূলনায়ক ছিলেন জিয়াউর রহমান। জিয়ার ক্যান্টনমেন্টের বাসায় বসেই বঙ্গবন্ধুকে হত্যার ষড়যন্ত্র করা হয়। আর ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় শেখ হাসিনাকে হত্যা চেষ্টার মূলনায়ক ছিল তারেক রহমান। সেও ক্যান্টনমেন্টের বাসায় ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ছক কষে। তিনি বলেন, এই স্বাধীনতাবিরোধী চক্র নানা অজুহাতে নানা লেবাসে দলের মধ্যে ঢোকার চেষ্টা করছে। এরা শুধু আওয়ামী লীগের নয়, দেশ ও মানুষের শত্রু। এই দুষ্টচক্রের আমাদের কোন প্রয়োজন নেই। এদের সম্পর্কে সবাইকে সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে।
×