ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সিদ্ধান্তের হেরফের হবে না ॥ হিলারি

বাইডেনের আগমন বার্তা

প্রকাশিত: ০৭:০২, ২৮ আগস্ট ২০১৫

বাইডেনের আগমন বার্তা

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক পার্টির মনোনয়ন প্রার্থিতার প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হওয়ার সম্ভাব্যতা যাচাই করতে ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন অধুনা প্রচুর লোকজনের সঙ্গে কথাবার্তা বলছেন। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন- ম্যাসাচুসেটসের প্রভাবশালী ডেমোক্রেটিক সিনেটর এলিজাবেথ ওয়ারেন, বড় অর্থদাতা এবং পার্টি সমর্থকবৃন্দ। তবে একজনের সঙ্গে তিনি কথা বলেননি, তিনি হলেন হিলাটি ক্লিনটন। খবর ইয়াহু নিউজ ও ওয়াশিংটন পোস্টের। আইওয়ার এ্যাঙ্কেনিতে বক্তৃতাদানের পর সাংবাদিকদের উদ্দেশে বক্তব্য রাখার সময় সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তিনি ডেমোক্রেটিক পার্টির মনোনয়ন লাভের প্রতিযোগিতায় জো বাইডেনের সম্ভাব্য যোগদানের ব্যাপারে বাইডেন কিংবা তাঁর টিমের কারও সঙ্গে কথা বলেননি। তিনি (বাইডেন) তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেননি। হিলারিও তাঁর সঙ্গে কথা বলেননি। তিনি আভাস দেন যে, বাইডেনকে ‘একটি অত্যন্ত কঠিন সিদ্ধান্ত’ নেয়ার ব্যাপারে সুযোগ করে দিতে হবে। হিলারি বলেন, আমি শুধু চাই ভাইস প্রেসিডেন্টই সিদ্ধান্ত নেবেন কোনটা তাঁর এবং তাঁর পরিবারের জন্য সঠিক। আমি মনে করি না যে, দৃশ্যের অন্তরালে থেকে একথা সেকথা বলা সহায়ক হতে পারে। আমি শুধু চাই তিনি ভেবেচিন্তে সঠিক সিদ্ধান্তটা গ্রহণ করুন। তাঁকেই এটি করতে হবে। এটি আসলেই কঠিন বিষয়। বাইডেনকে বন্ধু অভিহিত করে হিলারি বলেন, তিনি তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা ও প্রীতির মনোভাব পোষণ করেন। হিলারি আবেগপূর্ণ ভাষায় বাইডেনের ব্যক্তিগত কিছু শোকাবহ ঘটনার উল্লেখ করেন। যার মধ্যে আছে ১৯৭২-এ ডেলাওয়ার থেকে প্রথমবার সিনেটে নির্বাচিত হওয়ার পরপরই এক সড়ক দুর্ঘটনায় তিনি তাঁর প্রথম স্ত্রী ও কন্যাকে হারান এবং সম্প্রতি ব্রেন ক্যান্সারে তাঁর বড় ছেলে ডেলাওয়ারের এ্যাটর্নি জেনারেল বো বাইডেনের (৪৬) মৃত্যু হয়। হিলারি শান্ত কণ্ঠে বলেন, আমি তাঁর ছেলের শেষকৃত্যে উপস্থিত ছিলাম। আমি এই শোক ও হৃদয়বিদারক ঘটনার কথা চিন্তাই করতে পারি না। আমি বলতে চাই বেশিরভাগ মানুষ যা কল্পনাই করতে পারবেন না, জো এরকম ভয়ঙ্কর ঘটনার মুখোমুখি হয়েছেন। তবে তিনি বলেন, ওভাল অফিসের (হোয়াইট হাউস) জন্য তিনি (বাইডেন) যে উচ্চাকাক্সক্ষাই পোষণ করুন না কেন তাতে তাঁর পরিকল্পনার কোন বদল ঘটবে না। ‘যাই ঘটুক না কেন আমি এখনও প্রেসিডেন্ট পদের প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আছি।’ তিনি উল্লেখ করেন যে, তিনি সর্বদাই এটিকে একটি প্রতিযোগিতামূলক অভিযান হিসেবে দেখেছেন। ‘আমি যত কষ্টই হোক প্রতিযোগিতার লড়াইয়ে আছি। আমাকে সমর্থন করার জন্য যত বেশি মানুষকে সম্ভব বোঝাতে চেষ্টা করব। আমি যতদূর সম্ভব ভোট আনার চেষ্টা করব।’ ডেমোক্রেটিক দলের মধ্যে তার পদপ্রার্থিতা নিয়ে অস্থিরতা সৃষ্টির প্রেক্ষাপটে আইওয়ার প্রচারাভিযানে তিনি উপস্থিত ছিলেন। এসবের মধ্যে আছে তাঁর পররাষ্ট্র দফতরের দায়িত্বে থাকার সময় বিভিন্ন তদন্ত, যেমন ব্যক্তিগত ইমেইল এ্যাকাউন্ট ব্যবহার। তবে এসব বিষয় আইওয়াতে তাঁর অবস্থানকে ক্ষুণœ করছে না। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী বার্নি স্যান্ডার্স বেশ কয়েকটি নির্বাচনী সভায় বড় ধরনের জমায়েত ঘটাতে পারলেও এ সপ্তাহে সাফক বিশ্ববিদ্যালয়ের এক জরিপে দেখা গেছে, বাইডেন প্রতিযোগিতায় প্রবেশ করলেও হিলারি দলের নীতিনির্ধারক মহলে ৩৪ পয়েন্টে এগিয়ে আছেন। এদিকে ভাইস প্রেসিডেন্ট বাইডেনের প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থিতার প্রতিযোগিতায় নামার সম্ভাবনায় সম্পদশালী ডেমোক্রেটরা, যারা প্রেসিডেন্ট ওবামার হোয়াইট হাউসের দুই মেয়াদে তহবিল জুগিয়েছেন তারা নড়েচড়ে বসছেন। এই সম্ভাবনা তহবিল সংগ্রাহকদেরও। উজ্জীবিত করেছে হিলারি ক্লিনটনের প্রচার তৎপরতায় যাদের প্রভাবান্বিত করা যায়নি। দলের অর্থ সংস্থানকারীদের একটি বিরাট অংশ নিশ্চিত হয়েছেন যে, বাইডেন বিলম্বে প্রতিযোগিতায় নামছেন। অনেকেই বাইডেনকে সমর্থন দানের কথা ভাবছেন। তাদের মধ্যে এমন ব্যক্তিও আছেন যারা ইতোমধ্যে হিলারির শিবিরে শামিল হয়েছিলেন। দেশব্যাপী ১২ জনেরও বেশি শীর্ষ ডেমোক্রেটিক তহবিল সংগ্রাহকেরা একথা বলেছেন। হিলারি একটি ব্যাপক তহবিল সংগ্রহের ভিত্তি বজায় রেখেছেন। তার বিপুল অর্থবিত্ত বাইডেন এই শরতে প্রচারাভিযানে নামলে তার জন্য বিরাট চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে। সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রার্থী হিসেবে প্রথম তিন মাসে ৪ কোটি ৭০ লাখ ডলারের রেকর্ড পরিমাণ তহবিল গড়ে তুলেছিলেন। অপরদিকে বাইডেন সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে অর্থ সংগ্রহের জন্য কঠিন আঁটসাঁট অবস্থার মধ্যে পড়েছেন। কারণ দাতারা একটি প্রচারাভিযানে মাত্র ২ হাজার ৭শ’ ডলার পর্যন্ত দিতে পারেন। তাঁকে সম্ভবত ব্যাপকভাবে সুপার পলিটিক্যাল এ্যাকশন কমিটির (পিএসি) ওপর নির্ভর করতে হবে, যারা সীমাহীন অঙ্কের অর্থ গ্রহণ করতে পারেন। তবে, এই উদ্যোগ অনেক উদারনৈতিক ভোটারদের কাছে অরুচিকর ঠেকতে পারে।
×