ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

স্পেনের রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাত

বিদ্যুত জ্বালানি ও জাহাজ নির্মাণ খাতে বিনিয়োগ করুন ॥ প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৬:০৩, ২৮ আগস্ট ২০১৫

বিদ্যুত জ্বালানি ও জাহাজ নির্মাণ খাতে বিনিয়োগ করুন ॥ প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং অর্থনৈতিক অগ্রগতির জন্য দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিশেষ অর্থনৈতিক জোনে (এসইজেড) স্পেনের বিনিয়োগকে স্বাগত জানানো হবে। শেখ হাসিনা বলেন, স্পেন দু’দেশের পারস্পরিক স্বার্থে বাংলাদেশের বিভিন্ন সেক্টরে বিশেষ করে বিদ্যুত, জ্বালানি ও জাহাজ নির্মাণ সেক্টরে বিনিয়োগ করতে পারে। বাংলাদেশে সদ্য নিযুক্ত স্পেনের রাষ্ট্রদূত এডুয়ার্ডো দ্য লাইজিয়েসিয়া ডেল রোসাল বৃহস্পতিবার তেজগাঁওয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাত করলে তিনি একথা বলেন। খবর বাসসর। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশে সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত স্পেনের রাষ্ট্রদূতকে স্বাগত জানিয়ে ঢাকায় তার দায়িত্ব পালনকালে তাকে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন। শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর সরকারের লক্ষ্য হচ্ছে ভিশন-২০২১ বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশকে মধ্যম আয়ের দেশে রূপান্তরিত করা এবং এলক্ষ্যে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। প্রেস সচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ লক্ষ্যে পৌঁছতে সক্ষম হবে বলে স্পেনের দূত বৈঠকে দৃঢ় আশা প্রকাশ করেন। বৈঠকে শেখ হাসিনা গত পাঁচ বছরে বিভিন্ন সেক্টরে তাঁর সরকারের সাফল্য তুলে ধরে বলেন, বাংলাদেশ গত কয়েক বছরে প্রবৃদ্ধি ৬ শতাংশের বেশি করতে সক্ষম হয়েছে। পাশাপাশি কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ায় এবং তাঁর সরকার গণমুখী কর্মসূচী বাস্তবায়ন করায় দারিদ্র্য ইতোমধ্যে ৪০ শতাংশ থেকে কমে ২২.৪ শতাংশে নেমে এসেছে। প্রধানমন্ত্রী বিদ্যুত উৎপাদন বৃদ্ধিতে তাঁর সরকারের সাফল্যের উল্লেখ করে বলেন, বাংলাদেশ বর্তমানে ১৩ হাজারের বেশি মেগাওয়াট বিদ্যুত উৎপাদনের সক্ষমতা অর্জন করেছে। অথচ ২০০৯ সালের শুরুতে বিদ্যুত উৎপাদন হতো মাত্র ৩ হাজার ২শ’ মেগাওয়াট। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, তাঁর সরকার কয়লাভিত্তিক পাওয়ার প্লান্ট এবং সোলার পাওয়ারসহ বিভিন্ন উৎস থেকে আরও বিদ্যুত উৎপাদন করতে কাজ করে যাচ্ছে। শেখ হাসিনা ব্লু-ইকোনমির বিষয়ে তাঁর সরকারের নীতি সম্পর্কে বলেন, বাংলাদেশ সাগরে বিশাল জলসীমা লাভের পর বিপুল পরিমাণ সমুদ্র সম্পদের ব্যবহার করতে চায়। শেখ হাসিনা বলেন, ভৌগোলিকভাবে বাংলাদেশের অবস্থান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে দীর্ঘদিনের সীমানা বিরোধের সমাধান হয়েছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ায় একটি শান্তিবাদী ও উন্নত দেশ হতে চায়। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী ঢাকায় সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত স্পেনের রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালনকালে দু’দেশের মধ্যকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও জোরদার হবে বলে আশা প্রকাশ করেন এবং এ ক্ষেত্রে উচ্চ পর্যায়ের সফর বিনিময়ের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। স্পেনের রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশ ও স্পেনের মধ্যকার সম্পর্ককে ঐতিহাসিক হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, দু’দেশের মধ্যকার অর্থনৈতিক সম্পর্কও ভাল। তিনি এই সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। এ প্রসঙ্গে দূত বলেন, বিদ্যুত, জ্বালানি এবং রেলওয়ে সেক্টরে দু’দেশের মধ্যে আরও সহযোগিতা হতে পারে। তিনি বলেন, গ্রীন এনার্জিতে তার দেশের অভিজ্ঞতা রয়েছে এবং দ্রুতগতিসম্পন্ন ট্রেনেও তাদের অভিজ্ঞতা রয়েছে। মুখ্য সচিব মোঃ আবুল কালাম আজাদ এবং পিএমও সচিব সুরাইয়া বেগম এ সময় উপস্থিত ছিলেন। অনলাইনে তথ্য পেতে জনগণকে উৎসাহিত করুন ॥ তথ্য কমিশনকে প্রধানমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারী ও বেসরকারী সংস্থা থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে তথ্য পেতে বা এ ব্যাপারে কোন অভিযোগ দিতে ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহারে জনগণকে উৎসাহিত করতে তথ্য কমিশনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী তথ্য কমিশনের বার্ষিক রিপোর্ট গ্রহণের পর বলেন, তথ্য পেতে মানুষকে লেখার পরিবর্তে অনলাইন ব্যবহারে উৎসাহিত করতে হবে। প্রধান তথ্য কমিশনার মোহাম্মাদ ফারুক বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর কাছে তাঁর তেজগাঁও কার্যালয়ে এ রিপোর্ট পেশ করেন। খবর বাসসর। এ সময় অপর দুই কমিশনার নেপাল চন্দ্র সরকার ও প্রফেসর ড. খুরশিদা বেগম সৈয়দ উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম বলেন, প্রধানমন্ত্রী তথ্য কমিশনের কর্মকা-ের প্রশংসা করে বলেন, তাঁর সরকার অবাধ তথ্য প্রবাহে বিশ্বাসী। তিনি স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় সব তথ্যের প্রচারের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। প্রধান তথ্য কমিশনার বলেন, জনগণকে তথ্য দিতে বর্তমান সরকারী অফিসগুলোতে ২১ হাজার কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। মানুষ সাধারণত ভূমি, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাত সম্পর্কে তথ্য জানতে আগ্রহী। মোহাম্মাদ ফারুক বলেন, গত বছর ৭০ হাজার তথ্য সম্পর্কে আবেদন পাওয়া গেছে এবং ১০৯৫টি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগের অধিকাংশই নিষ্পত্তি হয়েছে।
×