ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

শিল্পকলায় ভাষার দ্যোতনায় নাটক ‘ক্যাসপার একজন আগন্তুক’

প্রকাশিত: ০৭:২৬, ২৫ আগস্ট ২০১৫

শিল্পকলায় ভাষার দ্যোতনায় নাটক ‘ক্যাসপার একজন আগন্তুক’

গৌতম পাণ্ডে ॥ মঞ্চটিকে ধরে নেয়া হয়েছে নুরেমবার্গ শহর। মৃদু আলোয় মাঝে মাঝে নিক্ষিপ্ত হচ্ছে তীব্র আলোর ঝলকানি। এ শহরের এক প্রান্তে নির্লিপ্তে শুয়ে আছে এক যুবক। এ পৃথিবী যেন তার কাছে অচেনা। শরীর দুর্বল, চলাফেরার সাধ্য নেই। যার যেমন খুশি তাকে নিয়ে তেমনভাবে ভাবার এক প্রতিযোগিতা চলছে। হঠাৎ তার কণ্ঠ থেকে বেরিয়ে এলো ‘আমি তার মতো হতে চাই, সে যেমন ছিল’। শুধুমাত্র এই বাক্যটিকে সম্বল করে এক প্রকার মৃতের ন্যায় পড়ে আছে। আর কিছুই জানে না সে। ‘ক্যাসপার একজন আগন্তুক’ নাটকের শুরুটাই ছিল এমন। জার্মান ও বাংলাদেশের ছয়জন নাট্যকর্মী দুই সপ্তাহব্যাপী কর্মশালার মধ্যদিয়ে অস্ট্রিয়ান লেখক পিটার হ্যানকের ‘ক্যাসপার’ নাটকটিকে বুঝার চেষ্টা করে। নাটকটি অনুবাদ হয়ে শিল্পকলার স্টুডিও থিয়েটার হলে মঞ্চস্থ হয় রবিবার সন্ধ্যায়। নাটকটি পরিচালনা করেছেন সিলকে শুমাখার ল্যাঙ্গে। এছাড়া মঞ্চসজ্জা আর পোশাক পরিকল্পনাও তারই। পোশাক এবং সেট নক্সাকার হিসেবে তিনি ২৫ বছর ধরে স্বনিয়োজিত। নির্দেশনায়ও রয়েছে তাঁর দক্ষতা। ব্রেমেনে তিনি ‘ইয়ং এ্যাকটরস’ নামের একটি থিয়েটার স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা। গত বছর ঢাকাতে তিনি ‘কুকুর-নারী-পুরুষ’ নামে একটি নাটকের সেট নক্সা করেন, যার নির্দেশনা দিয়েছিলেন ঋতু সাত্তার। নাটকটির প্রেক্ষাপট ছিল উনিশ শতকের জার্মানিতে সব থেকে বড় আলোড়ন জাগানো একটি অপরাধের ঘটনা। হ্যানকের কেবল গল্পটি বলে শেষ করেননি, বরং তিনি বোঝাতে চেয়েছেন ভাষা কিভাবে মানুষকে সামাজিক জীবনে যুক্ত করে আবার দূরেও ঠেলে দেয়। নাটকের শেষ পর্যায়ে নাট্যকার বোঝাতে চেয়েছেন, বিশাল এই পৃথিবীতে নিক্ষিপ্ত এ আগন্তুক চায় না এ নতুন জীবন। সে আবার ফিরে পেতে চায় তার হারানো জীবন। পৃথিবীর অসামঞ্জস্যতা তাঁর কাছে এক অসহনীয় বিষয় হয়ে ওঠে। নাটকটির বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন হাউকে ডিকাম্প, কার্লস রুহের বানদিশেসস্টাটস থিয়েটারের সদস্য জোহানেস শুমাখার, প্রাচ্যনাটের ফরহাদ আহমেদ, লোকনাট্য দলের মাহবুবুর রহমান সুজন, আরণ্যক নাট্যদলের রেজওয়ান পারভেজ ও সুরভি রায়। নাটকটির কোরিওগ্রাফি করেছেন জার্মান নৃত্যশিল্পী, শিক্ষক এবং কোরিওগ্রাফার টমাস বুঙ্গের, সহ-কোরিওগ্রাফার স্নাতা শাহরীন, সহ-মঞ্চসজ্জাকর ও আলোক পরিকল্পনায় ফয়েজ জহির।
×