স্টাফ রিপোর্টার, দিনাজপুর ॥ রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক (রাকাব) ২০১৪-১৫ অর্থবছরে দিনাজপুরের ৩৭টি শাখায় ৪৬ হাজার ২৬৭ জনের মধ্যে ১৫৩ কোটি ৪৪ লাখ টাকার কৃষি ঋণ বিতরণ করেছে। ২৪টি শাখায় লাভের মুখ দেখলেও লোকসান গুনেছে ১৩টি শাখা। ১৪ কোটি ২৩ লাখ টাকার বকেয়া ঋণ পড়ে রয়েছে।
২০১৪-১৫ অর্থবছরে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক (রাকাব) দিনাজপুর জেলার ১৩টি উপজেলায় ৩৭টি শাখার মাধ্যমে লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করে কৃষি ঋণ বিতরণ ও বকেয়া ঋণ আদায় করেছে। উত্তর ও দক্ষিণ জোনের ৩৭টি শাখায় ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৩৫ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। আর ৪৬ হাজার ২৬৭ জনের মধ্যে ঋণ বিতরণ করা হয়েছে ১৫৩ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। বকেয়া ঋণ আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ১২৭ কোটি ৬৭ লাখ টাকা থাকলেও, অর্জিত হয়েছে ১৬৯ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। ২৪টি শাখা ৪ কোটি ৩৬ লাখ টাকা লাভ করেছে। ৩ কোটি ১৮ লাখ টাকা লোকসান গুনেছে ১৩টি শাখা । বকেয়া ঋণের পরিমাণ ১৪ কোটি ২৩ লাখ টাকা।
রাকাবের উত্তর জোনে ৭টি উপজেলা রয়েছে। দিনাজপুর সদর, বিরল, বোচাগঞ্জ, কাহারোল, বীরগঞ্জ, চিরিরবন্দর ও খানসামা উপজেলায় ১৭টি শাখা রয়েছে। এই জোনের ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা ৬৩ কোটি ৯০ লাখ টাকা থাকলেও, বিতরণ হয়েছে ৭৯ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। ১০ হাজার ১২৫ জনের মধ্যে এই ঋণ বিতরণ করা হয়। এরমধ্যে শস্যখাতে ৩৩ কোটি ২৯ লাখ টাকা, মৎস্যখাতে ২৭ লাখ টাকা, পশু সম্পদ খাতে ১ কোটি ৮২ লাখ টাকা, কৃষি ও সেচযন্ত্রপাতি ক্রয় খাতে ১৫ লাখ টাকা, এসএমই খাতে ৪ কোটি ১০ লাখ টাকা, দারিদ্র্যবিমোচনে ৫ লাখ টাকা, চলতি মূলধন খাতে ২৯ কোটি ৩৬ লাখ টাকা এবং অন্যান্য খাতে ১০ কোটি ৫৩ লাখ টাকার ঋণ বিতরণ করা হয়। উত্তর জোন লাভ করেছে ৬০ লাখ ৮২ হাজার টাকা। ১৭টি শাখার মধ্যে ২ কোটি ৬১ লাখ টাকা লাভ করেছে ১০টি শাখা। আর ৭টি শাখা লোকসান গুনেছে ২ কোটি ৫১ লাখ টাকা। এই জোনে এ্যাকাউন্টধারীর সংখ্যা ১ লাখ ৫৬ হাজার ১১৬ জন। ৭টি লোকসানী শাখা হচ্ছে দিনাজপুর, ভুলিয়াবাজার, রামডুবীর হাট, বিরল, সুলতানপুর, বটহাট ও রানীরবন্দর। আমানতের পরিমাণ ১২৩ কোটি ২২ লাখ টাকা। অর্থঋণ আদালতে ৪ কোটি ৬৩ লাখ ৫২ হাজার টাকার জন্য ১২৮টি এবং ২ কোটি ৭৬ লাখ ১৬ হাজার টাকার জন্য ৮১৪টি সার্টিফিকেট মামলা বিচারাধীন রয়েছে। ১৪-১৫ অর্থবছরে ১শ’টি সার্টিফিকেট মামলা নিষ্পত্তি করে ৩১ লাখ ৮৭ হাজার টাকা ও ৫২টি অর্থঋণের মামলা নিষ্পত্তি করে ব্যাংক আদায় করেছে ৮৭ লাখ টাকা।
২০টি শাখা নিয়ে গঠিত রাকাবের দক্ষিণ জোনের ৬টি উপজেলা হচ্ছে পার্বতীপুর, ফুলবাড়ী, বিরামপুর, নবাবগঞ্জ, হাকিমপুর ও ঘোড়াঘাট। এই জোনে ৭১ কোটি ৬৫ লাখ টাকার লক্ষ্যমাত্রার স্থলে ৩৬ হাজার ১৫২ জনের মধ্যে ঋণ বিতরণ হয়েছে ৭৩ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। ১৪-১৫ অর্থবছরে ৭৩ কোটি ৩৩ লাখ ৪১ হাজার টাকা বকেয়া আদায়ের বিপরীতে আদায় হয়েছে ৯১ কোটি ৭২ লাখ টাকা। ২০টি’র মধ্যে ১৪টি শাখা ১ কোটি ৭৫ লাখ টাকা লাভ করলেও ৬টি শাখা লোকসান দিয়েছে ৬৮ লাখ টাকা। লোকসানী ৬টি শাখা হচ্ছে মাঝিপাড়া, গোদাগাড়ী, পাঁচকুড়, মধ্যপাড়া বাজার, আটপুকুর হাট ও রতনপুর। ফুলবাড়ী শাখা সর্বোচ্চ ১ কোটি ৫৩ লাখ টাকা লাভ করেছে। এই জোনে আমানতের পরিমাণ ২৮ কোটি ২৭ লাখ টাকা। যদিও আমানত সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৯ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। ১ লাখ ৩৯ হাজার ৯৮০ জন এ্যাকাউন্ট হোল্ডার ২০টি শাখায় লেনদেন করেন। ঋণ বিতরণের ক্ষেত্রে শস্যখাতে সাড়ে ৩২ কোটি টাকা, মৎস্যখাতে ৩০ লাখ টাকা, পশু সম্পদখাতে ২ কোটি ৭৫ লাখ টাকা, কৃষি ও সেচযন্ত্রপাতি ক্রয়খাতে ২৫ লাখ টাকা, কৃষিভিত্তিক শিল্পখাতে ২৫ লাখ টাকা, এসএমই খাতে ৬ কোটি টাকা, দারিদ্র্যবিমোচনে ১০ লাখ টাকা এবং চলতি পুঁজি হিসেবে ২০ কোটি টাকা দেয়া হয়েছে। ২ কোটি ৮৩ লাখ টাকার বকেয়া ঋণ আদায়ের জন্য ৯১৭টি সার্টিফিকেট মামলা এবং ৩ কোটি ৫৮ লাখ টাকা আদায়ের জন্য ২৯৯টি মামলা অর্থঋণ আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।