ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ক্লার্কের অবসর প্রসঙ্গে ওয়ার্ন-লেহম্যান তর্ক

প্রকাশিত: ০৭:০৮, ২৫ আগস্ট ২০১৫

ক্লার্কের অবসর প্রসঙ্গে ওয়ার্ন-লেহম্যান তর্ক

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ মাইকেল ক্লার্কের অবসর নিয়ে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েছেন অস্ট্রেলিয়ার কিংবদন্তি ক্রিকেটার শেন ওয়ার্ন ও বর্তমান কোচ ড্যারেন লেহম্যান। ওয়ার্ন বলেন, ‘ক্লার্ক আমাদের ইতিহাসের অন্যতমসেরা ক্রিকেটার, কোচ লেহম্যানের অসহযোগিতা এবং বোর্ডের (সিএ) অদূরদর্শী দল নির্বাচনের জন্যই এ্যাশেজের ব্যর্থতা। অথচ দায়টা কেবল অধিনায়কের।’ জবাবে লেহম্যান বলেছেন, ওয়ার্নের কাজই সবসময় স্পর্শকাতরভাবে বিরূপ মন্তব্য করে লাইমলাইটে আসা! কিংস্টন ওভালে এ্যাশেজ সিরিজের শেষ ম্যাচ খেলে ক্রিকেটকে বিদায় জানান ক্লার্ক। অথচ সিরিজে পিছিয়ে পড়ার পরও অবসরের প্রসঙ্গ উড়িয়ে দিয়েছিলেন তিনি। সেই ক্লার্ক হুট করে সিদ্ধান্ত নেন। ওয়ার্ন বলেন, ‘ওরা অযথাই ক্লার্কের সমালোচনা করছে। তারা বুঝতে পারছে না যে, আমরা সেরা একটি ক্রিকেটার ও অধিনায়ককে হারালাম।’ তিনি আরও যোগ করেন, ‘সিএ প্রধান এবং কোচ তাকে পছন্দ করে না। এটা অন্যায়। ক্লার্কের প্রতি তাদের সম্মান থাকা উচিত। ক্লার্ক অসিদের হয়ে দু’বার বিশ্বকাপ জিতেছে। এ্যাশেজে ইংল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশও করেছে। দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রোটিয়াদের বিপক্ষে সিরিজ জিতেছে। সেই সঙ্গে তার টেস্টে ৮ হাজারের ওপরে রান রয়েছে।’ এমন কি ব্যাটসম্যান ক্লার্ককে কিংবদন্তি এ্যালান বর্ডারের সঙ্গে তুলনা করে ওয়ার্ন বলেন, ‘আমরা শুনেছি, যে কোন ম্যাচের আগে বর্ডার বিশেষ পরিকল্পনা করতেন। ঠিক এই জায়গাতেই ক্লার্ক এবং বর্ডার এক জায়গায়। ক্লার্কও প্রতি ম্যাচের আগে নানা ধরনের পরিকল্পনা করত। অধিনায়ক হিসেবে ও কতটা পরিণত ছিল, তা বলে বোঝানো যাবে না।’ এই প্রসঙ্গে তিনি প্রয়াত ফিল হিউজেসের ঘটনার কথা টেনে এনে ওয়ার্ন বলেন, ‘হিউজেসের মর্মান্তিক মৃত্যুর পর যেভাবে ও প্রয়াত ক্রিকেটারের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছিল, তাতে বোঝাই যায়, ক্লার্ক কত বড় অধিনায়ক। সতীর্থকে ভাইয়ের মর্যাদা দিয়েছে সে। অন্য ক্রিকেটারদের সঙ্গেও একই রকম সম্পর্ক ছিল।’ ওয়ার্না বলেন, ‘ব্যাটসম্যান হিসেবে ক্লার্ক অসাধারণ। স্পিনারদের বিপক্ষে ফুটওয়ার্ক ছিল দুরন্ত, ওর খেলা দেখাটাও ছিল দৃষ্টিসুখকর।’ দায় মাথায় নিয়ে বিদায় নেন ক্লার্ক। তবে শেষ টেস্টে বড় জয়ে সিরিজ হারের ব্যবধান (২-৩) কমান তিনি। ক্যারিয়ারের শেষ টেস্টের একমাত্র ইনিংসে যদিও ১৫ রান করে আউট হন। ‘এভাবে চলে যেতে চাইনি, এ্যাশেজে, এমনকি জাতীয় দলের হয়ে ব্যক্তিগতভাবে গত ১২ মাস ছিল খুবই হতাশার। ড্রেসিং রুমে কাউকে আর কষ্ট দিতে চাই না। দু’দিন অনেক ভেবেছি, মনে হয়েছে বিদায় বলার এটাই সময়।’ বিদায় বেলায় বলেন ক্লার্ক। তিনি আরও যোগ করেন, ‘অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ১শ’র বেশি টেস্ট খেলেছি। এটা বিরাট সৌভাগ্যের। সবসময় বলেছি, ক্রিকেট আমার কাছে ঋণী নয়, আমিই ক্রিকেটের কাছে ঋণী। এতদিন খেলতে পারলাম বলে কৃতজ্ঞ।’ ২০০৩ সালে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পা রাখার পর টেস্টে ১১৫ ম্যাচে ৪৯.১০ গড়ে করেছেন ৮,৬৪৩ রান। সেঞ্চুরি ২৮। ২৪৫ ওয়ানডেতে সংগ্রহ ৭,৯৮১। ক্লার্কের নেতৃত্বে ৪৭ টেস্টের ২৪টিতে জয় পেয়েছে অস্ট্রেলিয়া, হার ১৬টিতে। আর ৭৪ ওয়ানডের ৫০টিতে জয়, হার ২১। ১৩ টেস্ট সিরিজে অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করে জিতিয়েছেন ৮টিতে। চতুর্থ অস্ট্রেলীয় অধিনায়ক হিসেবে উপহার দিয়েছেন বিশ্বকাপও। সেই তাকেই বিদায় নিতে হলো অনেকটা ইচ্ছার বিপক্ষে!
×