ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

রাজন হত্যা মামলা

পলাতক তিন আসামির বিরুদ্ধে পরোয়ানা ॥ মালামাল ক্রোকের নির্দেশ

প্রকাশিত: ০৬:০৭, ২৫ আগস্ট ২০১৫

পলাতক তিন আসামির বিরুদ্ধে পরোয়ানা ॥ মালামাল ক্রোকের নির্দেশ

স্টাফ রিপোর্টার, সিলেট অফিস ॥ সিলেটে বর্বর নির্যাতনে শিশু সামিউল আলম রাজন হত্যা মামলায় দাখিলকৃত চার্জশীট আমলে নিয়েছে আদালত। সোমবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত শুনানি শেষে মহানগর হাকিম আদালত-১ এর বিচারক সাহেদুল করিম এই চার্জশীট আমলে নেন। একই সঙ্গে চার্জশীটে অভিযুক্ত তিন পলাতক আসামি সৌদিতে আটক কামরুল ইসলাম, তার ভাই শামীম আহমদ এবং অপরজন পাভেলের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারিসহ তাদের মালামাল ক্রোকের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ৩১ আগস্ট নির্ধারণ করা হয়েছে। গত ১৬ আগস্ট রাজন হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিলেট মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক সুরঞ্জিত তালুকদার ১৩ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশীট দাখিল করেন। চার্জশীটে সৌদিতে আটককৃত কামরুল ইসলাম এবং তার ভাই শামীম আহমদ ও আরেক হোতা পাভেলকে পলাতক দেখানো হয়েছে। এছাড়া বাকি অভিযুক্তরা হচ্ছে কামরুলের ভাই আলী হায়দার, মুহিদ আলম, ময়না চৌকিদার, রুহুল আমিন, তাজউদ্দিন আহমদ বাদল, দুলাল আহমদ, নূর মিয়া, ফিরোজ মিয়া, আছমত উল্লাহ ও আয়াজ আলী। রাজন হত্যা মামলায় গ্রেফতারকৃত মুহিদ আলমের স্ত্রী লিপি বেগম এবং শ্যালক ইসমাইল হোসেন আবলুছের নাম চার্জশীটে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। ১০ আলামত ॥ রাজন হত্যার ১০টি আলামত সংগ্রহ করে আদালতে জমা দিয়েছে পুলিশ। মামলার তদন্ত কারী কর্মকর্তা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক সুরঞ্জিত তালুকদার চার্জশীটে এসব আলামতের বিবরণও তুলে ধরেছেন। প্রথম চার্জশীটে প্রথম আলামত হিসেবে দেখানো হয়েছে রাজনকে হত্যা করার পর লাশ বহনে ব্যবহৃত মাইক্রোবাসটি যার রেজিস্ট্রেশন নং মেট্রো-চ-৫৪-০৫১৬, ইঞ্জিন নং ৩৬৮৯১ ও চেসিস নং সিআর-২৭০১০২৯৩২। দ্বিতীয়, ভিকটিম রাজনের পরিহিত গোলাপী রঙের হাফহাতা গেঞ্জির অংশ বিশেষ এবং কালো রঙের ডোরা কাটা হাফ প্যান্টের অংশ বিশেষ। তৃতীয়, রাজন হত্যাকারীদের বিচার চাই, ফাঁসি চাই ইত্যাদি লেখা একটি পোস্টার। ওই পোস্টারে রাজনকে যারা হত্যা করেছে তাদের ছবি আছে বলে চার্জশীটে উল্লেখ করা হয়েছে। চতুর্থ, ওই আলামতে ৫টি ছবির কথা বলা হয়েছে। এর মধ্যে খুন হওয়া রাজনের ছবিও রয়েছে। এ ছাড়াও ময়না মিয়া, দুলাল, কামরুল ও পাবেলের ছবিও রয়েছে। পঞ্চম, রাজন হত্যার একটি ভিডিও ফুটেজ। ষষ্ঠ , ওই আলমতে যে মোবাইল দিয়ে রাজনের নির্যাতনের চিত্র ধারণ করা হয়েছিল সেটির বিবরণ দেয়া হয়েছে। ওই মোবাইল দিয়ে নূর মিয়া নির্যাতনের চিত্র ধারণ করেছিল বলে উল্লেখ করা হয়েছে। সপ্তম, ২ জিবি মাইক্রো লেখাযুক্ত একটি মেমোরি কার্ড। অষ্টম, গ্রামীণফোনের লোগোযুক্ত একটি সিমকার্ড। নবম ৩.৭ ভোল্টের একটি নকিয়া মোবাইলের ব্যাটারি। দশম , আলামতে বলা হয়েছে, ভিডিও ফুটেজ সংবলিত ১টি ডিভিডি। যাতে রাজনকে নির্যাতনের ১ মিনিট ৫৮ সেকেন্ড ধারণকৃত ভিডিও রের্কড রয়েছে। রাজনের পরিবারকে সিএনজি অটোরিক্সা প্রদান ॥ রাজনের বাবা আজিজুর রহমানকে একটি সিএনজি অটোরিক্সা প্রদান করেছে ‘কমিউনিটি এগেইনস্ট প্রভারটি (ক্যাপ) ফাউন্ডেশন ইউকে। সোমবার সিলেট পুলিশ লাইন মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সংগঠনের নেতাকর্মীরা রাজনের বাবার হাতে অটোরিক্সার চাবি তুলে দেন। রাজন হত্যার পর সহানুভূতি দেখিয়ে তার পরিবারের পাশে দাঁড়ান বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ও হৃদয়বানরা। প্রবাসীরাও এগিয়ে আসেন রাজনের পরিবারকে সহায়তা করতে। প্রবাসী একটি সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রায় ১৬ লাখ টাকা ব্যয়ে পাকা ঘর নির্মাণ করে দেয়া হচ্ছে ও রাজনের বাবাকে সরকারী, বেসরকারী সব মিলিয়ে ইতোমধ্যে রাজনের পরিবার প্রায় অর্ধ কোটি টাকার অনুদান পেয়েছে বলে জানা গেছে।
×