স্টাফ রিপোর্টার ॥ অবশেষে ব্যাটালিয়ন থেকে প্রত্যাহার করা হলো র্যাব-২ অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এস এম মাসুদ রানাকে। তাকে এখন র্যাব সদর দফতরে সংযুক্ত করা হয়েছে। র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান সোমবার সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। কি কারণে তাকে প্রত্যাহার করা হয়েছে সেটা জানাতে পারেননি।
তবে নিহত আরজুর মিলাদ মাহফিলে স্থানীয় আওয়ামী লীগ দলীয় সাংসদ ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস কঠোর ভাষায় র্যাবের সমালোচনা করেন এবং দায়ী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনা হবে বলে মন্তব্য করেন। তাঁর এ বক্তৃতার দুদিন পরই প্রত্যাহার করা হলো র্যাব অধিনায়ক এস এম মাসুদ রানাকে।
উল্লেখ্য, মোবাইল ফোন চুরির অভিযোগ তুলে গত ১৬ আগস্ট হাজারীবাগের মোহাম্মদ রাজা নামের এক কিশোরকে গনকটুলি এলাকায় পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এরপর হাজারীবাগ থানা ছাত্রলীগ সভাপতি আরজু মিয়া ওই হত্যাকা-ে নেতৃত্ব দেন বলে দাবি করে তার বোন রেশমা বেগম মামলা করলে ওই রাতেই আরজুকে আটক করে র্যাব। এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই বন্দুকযুদ্ধে তার মৃত্যু হয় বলে দাবি করে র্যাব।
এ ঘটনায় আরজু মিয়াকে অপহরণের পর হত্যার অভিযোগে র্যাব-২ এর অধিনায়কসহ চারজনের বিরুদ্ধে রবিবার মামলার আবেদনের পরদিনই এস এম মাসুদ রানাকে প্রত্যাহার করা হলো। মামলার আবেদনের বাদীর নামও মাসুদ রানা।
ঢাকা মহানগর হাকিম শাহরিয়ার মাহমুদ আদনানের আদালতে রবিবার আরজু মিয়ার বড় ভাই মাসুদ রানা ওই আবেদন করেন। মামলায় র্যাব-২ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাসুদ রানা, র্যাব-২-এর ডিএডি শাহেদুর রহমান ও পরিদর্শক ওয়াহিদ এবং র্যাব-২-এর সোর্স রতনকে অভিযুক্ত করা হয়।
মামলার আরজি থেকে জানা যায়, ১৭ আগস্ট মোবাইল চুরির অপবাদ দিয়ে রাজা মিয়াকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় হাজারীবাগ থানা ছাত্রলীগের সভাপতি আরজু মিয়াকে প্রধান আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। ওই দিন বিকেল ৫টার দিকে পূর্বপরিকল্পনা মাফিক আরজুকে হাজারীবাগ পার্কের মূল ফটক থেকে হত্যার উদ্দেশে অপহরণ করে কোন অজ্ঞাত স্থানে লুকিয়ে রাখা হয়। অপহরণের কোন এক সময় পরিকল্পিতভাবে আরজুকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এরপর সিকদার মেডিক্যালের পেছনে খোলা জায়গায় ফেলে রাখে তিন র্যাব কর্মকর্তা।
মামলার বাদী হাজারীবাগ থানায় গিয়ে বলেন-তথাকথিত বন্দুকযুদ্ধে তার ভাই আরজু মিয়াকে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনাস্থলের আশপাশের লোকদের আমি জিজ্ঞাসা করলে তারা জানান, বিকেল ৫টা থেকে পরদিন সকাল সাড়ে ৮টা পর্যন্ত ওই এলাকায় কোন বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটেনি। ১৯ আগস্ট র্যাব-২ অধিনায়ক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে স্বীকার করেন, আরজু মিয়া বন্দুকযুদ্ধে মারা গেছেন। এর পর আমি হাজারীবাগ থানায় মামলা দায়ের করতে গেলে থানা মামলাটি গ্রহণ করেনি। থানায় মামলা গ্রহণ না করায় আদালতে মামলাটি করেছি।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: