স্টাফ রিপোর্টার সিলেট অফিস ॥ সিলেট ওসমানী বিমানবন্দর কনকোর্স হলের ইজারা প্রদান ন্ধ থাকায় সরকার প্রতিবছর কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে। অপর দিকে বিমানবন্দরে আগতদের কনকোর্স হলে প্রবেশের সুযোগ না থাকায় বাইরে রোদ বৃষ্টিতে ভিজে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এই সুযোগে লোকজনের কাছ থেকে টাকা নিয়ে কনকোর্স হলের ভেতরে প্রবেশের সুযোগ করে দেয়া হচ্ছে। এনিয়ে রমরমা ব্যবসা চলছে। সিভিল এ্যাভিয়েশনের শক্তিধর একটি সিন্ডিকেট এই ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করছে। এই সিন্ডিকেটের দুর্নীতি অনিয়মের কারণে ওসমানী বিমান বন্দরের পার্কিং গ্রাউন্ডের ইজারা নিয়ে ও জটিলতা তৈরি হয়েছে। এক পক্ষের হাইকোর্টে রিট পিটিশনের কারনে টেন্ডার প্রক্রিয়া ঝুলে আছে।
জানা যায়, ২০১৪ সালে টেন্ডারের মাধ্যমে কার পার্কিং ইজারা দেয়া হয়। মেসার্স দাইন এন্টারপ্রাইজ নামের প্রতিষ্ঠান ১৮/৭/১৪ থেকে এক বছরের জন্য ইজারা গ্রহণ করে। ১৭/৭/১৫ তারিখে ইজারার মেয়াদ পূর্ণ হবার আগেই ওই প্রতিষ্ঠান ১৫ সালের ৮মার্চ আরও এক বছর ইজারার মেয়াদ বৃদ্ধি চেয়ে আবেদনপত্র জমা দেয়। আবেদনের প্রেক্ষিতে টেন্ডার না করে গোপন আঁতাতের মাধ্যমে ওই প্রতিষ্ঠানের ইজারার মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। এই বিষয়টি অর্থমন্ত্রীর গোচরীভূত হলে বর্তমান প্রতিষ্ঠানের ইজারার মেয়াদ না বাড়িয়ে নতুনভাবে ইজারা দেয়ার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়। এই পর্যায়ে শক্তিধর সিন্ডিকেট নিজেদের পছন্দের লোককে ইজারা দেয়ার জন্য টেন্ডার প্রক্রিয়ায় দুর্নীতির আশ্রয় নেয়। যে পত্রিকায় টেন্ডার বিজ্ঞপ্তি ছাপা হয়েছে। সেটা আর মার্কেটে খোঁজে পাওয়া যায়নি। কৌশলে গোপনীয়তা রক্ষা করে টেন্ডার আহ্বান প্রক্রিয়া সম্পন্ন করায় অনেক প্রতিষ্ঠান টেন্ডারে অংশগ্রহণ করার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়। একই প্রতিষ্ঠান ভিন্ন ভিন্ন নামে দরপত্র দাখিল করে কাজ হাসিল করে নেয়। এদিকে বর্তমান ইজারার মেয়াদ বৃদ্ধির আবেদন গ্রহণ করে আবার সেটা নবায়নে অসম্মতি জানালে বর্তমান ইজারাদার আদালতের আশ্রয় নেন। আদালত এটার ওপর স্থগিতাদেশ প্রদান করেন। আদালতের স্থগিতাদেশ নিয়ে বর্তমান ইজারাদার এখন কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।
এদিকে ২০১৩সালের ২৫ নবেম্বরের পর থেকে কনকোর্স হলের ইজারা বন্ধ রয়েছে। বিমানবন্দরে আগতদের জন্য কনকোর্স হল ছাড়া বাইরে ছাদের নিচে দাঁড়ানোর আর কোন ব্যবস্থা নেই। তাই যাত্রীদের বিদায় দিতে ও এগিয়ে নিয়ে যেতে আগতদের রোদ বৃষ্টিতে ভিজে বাইরে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। এই পর্যয়ে অনেকেই অতিরিক্ত টাকা ঘুষ দিয়ে কর্মরতদের সঙ্গে লাইন করে কনকোর্স হলের ভেতরে প্রবেশের সুবিধা ভোগ করেন। আর রমরমা এই ব্যবসার জন্যই নানা অজুহাতে দীর্ঘদিন যাবত কনকোর্স হলের ইজারা বন্ধ রাখা হয়েছে।
টিকেট দিয়ে কনকোর্স হলে প্রবেশের ব্যবস্থা না থাকায় দীর্ঘদিন যাবত কনকোর্স হলের ভেতরে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো ক্রেতাশূন্যতায় ভোগছে। আর এই পরিস্থিতিতে মাসিক ২৫/৩০ হাজার টাকা ভাড়াসহ লোকসান গুনে এখন ব্যবসায়ীরা পাততাড়ি গুটিয়ে চলে যাবার চিন্তা করছেন। সম্প্রতি সরকারের রাজস্ব আয় ও জনসাধারণের সুবিধার কথা ভেবে কর্তৃপক্ষ কনকোর্স হল ইজারা দেয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করলে সিভিল এ্যাভিয়েশনের সুবিধাবাদী সিন্ডিকেট চক্র নানা অজুহাতে ইজারা প্রদানের বিরোধিতা করে। কনকোর্স হল ইজারা দেয়া হলে ভেতরে বিভিন্ন বিভাগের দাপ্তরিক কাজে ব্যাঘাত সৃষ্টি হবে বলে খোঁড়াযুক্তি উপস্থাপন করে ইজারা বন্ধ রাখার জন্য তৎপর হয়ে উঠে। সরকারের রাজস্ব আয়ের পাশাপাশি জনসাধারণের সুবিধার জন্য এ ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রয়োজন।