বিশেষ প্রতিনিধি ॥ শোকাবহ পরিবেশে এবং গ্রেনেড হামলার মূল পরিকল্পনাকারীদের বিচারের দাবির মধ্য দিয়ে শুক্রবার ঢাকাসহ সারাদেশে পালিত হয়েছে ভয়াল-রক্তাক্ত ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার একাদশ বর্ষপূর্তি দিবস। আওয়ামী লীগসহ স্বাধীনতার পক্ষের রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের নেতাকর্মীরা শহীদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদনের পাশাপাশি সন্ত্রাস-জঙ্গীবাদী সকল সাম্প্রদায়িক অপশক্তির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন।
আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের গ্রেনেড হামলার স্থলে স্থাপিত অস্থায়ী শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শুরু হয় দিনের কর্মসূচী। কঠোর নিরাপত্তা বলয়ে প্রথমে ওই হামলায় মৃত্যুজাল ছিন্ন করে প্রাণে বেঁচে যাওয়া বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করেন। এরপর আওয়ামী লীগ সভানেত্রী হিসেবে দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ, উপদেষ্টা পরিষদ, মন্ত্রিপরিষদ সদস্য ও জাতীয় সংসদ সদস্যেদের সঙ্গে নিয়ে শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এ সময় সেখানে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। সমন্বয়ক ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় ১৪ দলের পক্ষ থেকেও শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়।
এ সময় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টাম-লীর সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, ড. মহিউদ্দিন খান আলমগীর, এইচটি ইমাম, সভাপতিম-লীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, মোহাম্মদ নাসিম, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, এ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন, সতীশ চন্দ্র রায়, মাহবুব উল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, ড. আবদুর রাজ্জাক, ফারুক খান, আফম বাহাউদ্দিন নাছিম, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, মেজবাহউদ্দিন সিরাজ, ওয়ার্কার্স পার্টির রাশেদ খান মেনন, জাসদের শরিফ নুরুল আম্বিয়া, সাম্যবাদী দলের ডাঃ দিলীপ বড়ুয়াসহ বিপুলসংখ্যক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রীর পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে বঙ্গবন্ধুসহ ১৫ আগস্টের নিহত সকল শহীদ, ৩ নবেম্বর কারাগারে নিহত জাতীয় চার নেতা এবং ২১ আগস্টের শহীদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করার পরপরই বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতা-কর্মীরা বঙ্গবন্ধু এ্যাভিনিউর অস্থায়ী শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
এম এ আজিজ ও মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রমের নেতৃত্বে মহানগর আওয়ামী লীগ, রাশেদ খান মেননের নেতৃত্বে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, ওমর ফারুক চৌধুরী ও হারুনুর রশিদের যুবলীগ, নাজমা আখতার ও অপু উকিলের নেতৃত্বে যুব মহিলা লীগ, মোল্লা মোঃ আবু কাওছার ও পংকজ দেবনাথের নেতৃত্বে আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ, মোতাহার হোসেন মোল্লা ও খন্দকার শামসুল হক রেজার নেতৃত্বে কৃষক লীগ, সাইফুর রহমান সোহাগ ও এসএম জাকির হোসাইনের নেতৃত্বে ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা অস্থায়ী বেদীতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এছাড়াও মহিলা আওয়ামী লীগ, জাতীয় শ্রমিক লীগ, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদ, যুবলীগ ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ, ছাত্রলীগ মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ, ঢাকা সিটি কর্পোরেশন দক্ষিণ, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট, জয়বাংলা সাংস্কৃতিক ঐক্যজোট, জাতীয় গণতান্ত্রিক লীগ, বাংলাদেশ নারী মুক্তি আন্দোলন, মুক্তিযোদ্ধা যুব কমান্ড, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক পরিষদ, আওয়ামী সাংস্কৃতিক ফোরাম, আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ, ঢাকা সড়ক পরিবহন শ্রমিক লীগ, আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগ, হকার্স লীগ, বঙ্গবন্ধু সাহিত্য পরিষদ, আওয়ামী সাংস্কৃতিক ফোরাম, মুক্তিযোদ্ধা জনতা লীগ, বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদ, আওয়ামী শিশু-কিশোর যুব জোট, রিক্সা-ভ্যান শ্রমিক লীগ, মোটরচালক লীগসহ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে শহীদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করা হয়।
এর আগে ২১ আগস্ট প্রথম প্রহরে ‘আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান’ নামক সংগঠনের ব্যানারে রাত ১২টা ১ মিনিটে বঙ্গবন্ধু এ্যাভিনিউয়ের আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে মোমবাতি প্রজ্বলনের মাধ্যমে শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।