ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

উন্নতির ধারায় বাপেক্স

প্রকাশিত: ০৫:১৭, ২২ আগস্ট ২০১৫

উন্নতির ধারায় বাপেক্স

রাষ্ট্রীয় তেল-গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন কোম্পানি বাপেক্সের ঝুলিতে অনেক সাফল্যই জমা পড়েছে। তবে প্রথমবারের মতো কূপ খননের জন্য আন্তর্জাতিক দরপত্রে অংশ নিয়ে বাঙ্গুরা গ্যাসক্ষেত্রের দুটি কূপ খননের কাজ পাওয়া তার ভেতর বিশেষ গৌরব করার মতোই। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বাপেক্সের আরেকটি সাফল্যের তথ্য আমরা স্মরণ করতে পারি। সেটি হলোÑ ২০০২ সালে আন্তর্জাতিক দরপত্রে অংশ নিয়ে একই গ্যাসক্ষেত্রে দ্বিমাত্রিক ভূকম্পন জরিপের কাজ পেয়েছিল বাপেক্স। তবে অধুনা সাফল্যটি বিশেষভাবে উল্লেখ করার মতো এ কারণে যে, এই দুটি কূপ খননের জন্য ১০টি কোম্পানি দরপত্র দলিল কিনেছিল। শেষ পর্যন্ত বাপেক্সসহ ছয়টি কোম্পানি দরপত্রে অংশ নেয়। এই দরপত্র প্রতিযোগিতায় বাপেক্সই যোগ্য বিবেচিত হয়েছে। প্রথমবার অংশ নিয়েই কাজ পাওয়ার বিষয়টি অবশ্যই বাপেক্সের জন্য বিশেষ কিছু। বাপেক্স এর আগে দেশে সাতটি গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কার করে উৎপাদন পর্যায়ে নিয়ে গিয়ে গ্যাসসম্পদ উন্নয়নে তার সক্ষমতা প্রমাণ করেছে। গ্যাসসম্পদ আহরণ ও উৎপাদনে বাংলাদেশের নিজস্ব কারিগরি, লোকবল ও আর্থিক ব্যবস্থাপনা যে সার্থকতা ধারণ করতে পারে, বাপেক্স তার উদাহরণ সৃষ্টি করে আত্মনির্ভরশীলতা অর্জন করার সম্ভাবনাকে দৃশ্যমান করেছে। নব্বইয়ের দশকে আমরা দেখেছি দেশের সর্বাপেক্ষা সম্ভাবনাময় এলাকাগুলো বিদেশীদের হাতে তুলে দিয়ে জাতীয় কোম্পানিকে কেবল অল্প সম্ভাবনাময় এলাকাগুলো দেয়া হয়। দেশের সর্বোচ্চ সম্ভাবনাময় সিলেট ও কুমিল্লা অঞ্চলের চারটি গ্যাস ব্লক বিদেশী কোম্পানিকে লিজ দেয়া হয়। এর ফলে বিদেশী কোম্পানির আবিষ্কারগুলো হয় বৃহৎ। যেমনÑ বিবিয়ানা, জালালাবাদ, বাঙ্গুরার মতো গ্যাসক্ষেত্র। বাঙ্গুরা গ্যাসক্ষেত্রের পাশেই বাপেক্স পরিচালিত শ্রীকাইল গ্যাসক্ষেত্র। সেখানে দুটি কূপের মাধ্যমে দৈনিক চার কোটি ঘনফুটের মতো গ্যাস তোলা হচ্ছে। বাঙ্গুরা ও শ্রীকাইল গ্যাসক্ষেত্রের কাঠামো অভিন্ন। তাই বাঙ্গুরা থেকে গ্যাস উত্তোলন বাড়ানো হলে শ্রীকাইলের গ্যাসও সেদিকে চলে যাবে। তাই শ্রীকাইলেও নতুন কূপ খনন করে উত্তোলন বাড়ানো দরকার। দীর্ঘদিন পর শ্রীকাইলে একটি নতুন কূপ খননের কাজ দেয়া হয় রাশিয়ার গ্যাজপ্রমকে, যা বাপেক্সের তুলনায় অধিক ব্যয়বহুল। অক্সিডেন্টাল ও নাইকোর মতো বিদেশী প্রতিষ্ঠান, যারা উন্নত প্রযুক্তির কথা বলে এ দেশে এসেছিল, তাদের কারণে মাগুরছড়া ও টেংরাটিলার মতো পরিবেশ ও সম্পদবিনাশী একাধিক দুর্ঘটনা ঘটেছে। বাপেক্স কখনও এ ধরনের ভয়াবহ দুর্ঘটনার কারণ হয়নি। বাপেক্স আমাদের দেশের সম্পদ। প্রতিষ্ঠানটির দক্ষতা, যোগ্যতা ও সক্ষমতা বাড়াতে হবে দেশের স্বার্থেই। আমাদের প্রত্যাশাÑ লোকবল, অর্থবল ও যান্ত্রিক সরঞ্জামাদিতে সমৃদ্ধির মাধ্যমে বাপেক্সের উন্নতির ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে।
×