স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ রাজশাহীর পদ্মায় আবারও ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। বছরের পর বছর ধরে সর্বগ্রাসী পদ্মার ভাঙ্গনে ভিটেমাটি হারিয়ে রাজশাহীর চারঘাট ও বাঘার পদ্মা পাড়ের মানুষ এখন শঙ্কায় দিশেহারা। কোনভাবেই যেন পদ্মার ভাঙ্গন থেকে নিজেদের ভিটেমাটি ও আবাদী জমি রক্ষা করতে পারছেন না এ দুটি উপজেলার নদীর পাড়ে বসবাসকারী লোকজন। বিভিন্ন সময় জনপ্রতিনিধিরা ভাঙ্গন প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও বাস্তবায়ন হয় না কোন দিনই।
ফলে বর্ষা মৌসুম এলেই ভয়াবহ ভাঙ্গনের মুখে পড়ে নিঃস্ব হচ্ছেন পদ্মা পাড়ের হাজার হাজার জনবসতী। এভাবে চলতে থাকলে একদিন মানচিত্র থেকে মুছে যেতে পারে পদ্মা পাড়ের কয়েকটি গ্রামের নাম। ইতোমধ্যে আতারপাড়া নামের একটি গ্রাম নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।
গত কয়েক বছরের ভাঙ্গনে প্রায় দেড় শ’ বিঘা আবাদী জমি হারিয়ে এখন পথের ভিক্ষারী বাঘা উপজেলার আলাইপুর গ্রামের ৮৫ বছর বয়সী সোবহান আলী মোল্লা। তিনি এখন চেয়ে থাকেন পদ্মায় হারিয়ে যাওয়া ভিটেমাটির দিকে।
সোবহান মোল্লা জানান, বাড়িতে এখনও ধান বোঝায় করা গোলা রয়েছে। তবে সেটি এখন পুরোপুরি ফাঁকা। তিনি জানান, চোখের সামনে গত ১০টি বছরের ভাঙ্গনে তার প্রায় দেড় শ’ বিঘা জমি বিলীন হয়ে গেছে। এখন অবশিষ্ট রয়েছে মাত্র ৬ বিঘা জমি। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে তার আরও ২ বিঘা জমি চলে গেছে। শুধু আলাইপুর এলাকার সোবহান মোল্লার জমিই নদীগর্ভে বিলীন হয়নি, হয়েছে হরিরামপুর এলাকার রমজান আলী, আলতাফ আলীসহ হাজার হাজার মানুষের।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চারঘাট উপজেলার টাঙ্গন থেকে শুরু করে ইউসুফপুর, মোক্তারপুর, গৌরশহরপুর, গোপালপুর, চন্দনশহর, পিরোজপুর, রাওথা, বাঘার মীরগঞ্জ, বারশত দিয়াড়, হরিরামপুর, আলাইপুর ও কিশোরপুর জুড়ে আবারও পদ্মায় দেখা দিয়েছে ভয়াবহ ভাঙ্গন। প্রতিদিনই হাজার হাজার একর জমি বিলীন হয়ে যাচ্ছে।
কুড়িগ্রামে তিস্তার ভাঙ্গনে হারিয়ে যাচ্ছে দুই মৌজা
স্টাফ রিপোর্টার কুড়িগ্রাম থেকে জানান, রাজারহাট উপজেলার নাজিমখান ইউনিয়নের সোমনারায়ণ এবং দলদলিয়া ইউনিয়নের মহাদেব মৌজা তিস্তা নদীর তীব্র স্রোতে ব্যাপক ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। গত দু’সপ্তাহের ভাঙ্গনে ওই এলাকা দুটির প্রায় অর্ধশতাধিক পরিবারের বসতভিটা, ফসলি জমি, বাগানবাড়ি বিলীন হয়ে গেছে।
ভাঙ্গনের মুখে পরেছে ঠুটাপাইকর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, ঠুটাপাইকর দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়, ঠুটাপাইকর নেছারিয়া জামে মসজিদ, ঠুটাপাইকর বাজার জামে মসজিদসহ নদীর তীরবর্তী আড়াই শতাধিক পরিবারের বসতবাড়ি। ভাঙ্গনকবলিত পরিবারগুলো স্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সরকারী রাস্তাসংলগ্ন এলাকায় খড় ও টিনেরগুলোতে থাকে। সেখানে গিয়ে দেখা গেছে, তিস্তা নদীর পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে সোমনাথ ও মহাদের মৌজা দুটিতে ব্যাপক ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে তিস্তা নদী প্রায় দেড় কি.মি এলাকা ভিতরে প্রবেশ করেছে। লোকজন ঘড়বাড়ি সরিয়ে নেয়ারও সময় পাচ্ছে না। ভাঙ্গনকবলিত পরিবারগুলো বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। গত দুইদিনের বৃষ্টিতে নদীর পাড়ের মাটি দেবে যাচ্ছে।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: