ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

সুইস অষ্টাদশীর মুখেই সাফল্যের হাসি

প্রকাশিত: ০৬:৩৫, ১৮ আগস্ট ২০১৫

সুইস অষ্টাদশীর মুখেই সাফল্যের হাসি

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বেলিন্ডা বেনকিচই জিতলেন রজার্স কাপের শিরোপা। সেমিফাইনালে সেরেনা উইলিয়ামসকে হারিয়েই চ্যাম্পিয়ন হওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন তিনি। সুইজারল্যান্ডের এই বিস্ময় কন্যা তার প্রতিভার সাক্ষর রেখেছেন ফাইনালেও। রবিবার ফাইনালে টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় বাছাই সিমোনা হ্যালেপকেও পরাজয়ের স্বাদ উপহার দেন বেলিন্ডা বেনচিচ। সেইসঙ্গে ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো রজার্স কাপের শিরোপা নিজের শোকেসে তুললেন সুইজারল্যান্ডের এই তারকা। ক্যারিয়ারে এটি তার দ্বিতীয় ট্রফি। এর আগে প্রথম কোন প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ জিতেছিলেন গত জুনে। সেবার ইস্টবার্ন শিরোপা নিজের করে নিয়েছিলেন বেনকিচ। তবে রজার্স কাপের শিরোপাটা সহজে জিতেননি ১৮ বছর বয়সী এই সুইস সুন্দরী। রোমানিয়ার সিমোনার বিপক্ষে ৭-৬ গেমে প্রথম সেট ঠিকই জিতে নেন বেনকিচ। কিন্তু দ্বিতীয় সেটেই ঘুরে দাঁড়ান হ্যালেপ। ৭-৬ গেমে বেনকিচকে পরাজিত করেন তিনি। তৃতীয় সেটে আবারও ঘুরে দাঁড়ান সুইস তারকা। ৩-০ ব্যবধানে এগিয়ে থাকার সময়ই ম্যাচ থেকে অবসর নেয়ার সিদ্ধান্ত নেন হ্যালেপ। এর ফলে শিরোপা জিতেই কোর্ট ছাড়েন পুরো টুর্নামেন্ট জুড়েই একের পর এক চমক উপহার দেয়া এই সুইস কন্যা। আমেরিকান টেনিসের জীবন্ত কিংবদন্তি সেরেনার পর রোমানিয়ার দ্বিতীয় বাছাই হ্যালেপকেও পরাজিত করে রোমাঞ্চিত বেনকিচ। ম্যাচ শেষের সংবাদ সম্মেলনে অভিমত প্রকাশ করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘এখানে আমি আসলেই খুব উপভোগ করেছি। আমি যে এতটা ভাল খেলতে পারি তা এখনও বিশ্বাস করতে পারছি না। তবে প্রথমেই আমি সিমোনার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে চাই। কেননা সেই আমাকে দারুণ একটি সপ্তাহ উপহার দিয়েছে। এরপর আমার মা-বাবা এবং আমার দলের প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি। তবে এটা ঠিক যে যদি ফাইনালেও হেরে যেতাম তাহলেও এটা হতো আমার জন্য বিস্ময়কর এক অভিজ্ঞতা।’ কানাডার টরেন্টোর এই রজার্স কাপে প্রমীলা টেনিসের সব বড় বড় তারকারাই পারফর্ম করে থাকেন। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। আর টেনিস বিশ্বের সেরা ছয় খেলোয়াড়কে পরাজিত করেই টুর্নামেন্টের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেন বেনচিচ। ফাইনালে সিমোনা হ্যালেপকে পরাজয়ের স্বাদ উপহার দেয়ার আগেই আমেরিকান টেনিসের জীবন্ত কিংবদন্তি সেরেনা উইলিয়ামসকে রজার্স কাপের সেমিফাইনাল থেকেই বিদায় করেন তিনি। এছাড়াও হারিয়েছেন সাবেক নাম্বার ওয়ান তারকা ড্যানিশ কন্যা ক্যারোলিন ওজনিয়াকি, সার্বিয়ার আনা ইভানোভিচ, কানাডার ইউজেনি বাউচার্ড এবং জার্মানির সাবিনে লিসিকির মতো খেলোয়াড়দের। এই ছয়জনের সবাই গ্র্যান্ডসøামের ফাইনালিস্ট। একই টুর্নামেন্টে বিশ্ব টেনিসের সেরা ছয় খেলোয়াড়কে পরাজিত করাটা সহজ কথা নয়। কিন্তু কঠিন সেই কাজটাই করে দেখালেন বেনচিচ। সেইসঙ্গে রজার্স কাপের শিরোপা জিতে নতুন একটি মাইলফলকও স্পর্শ করেন তিনি। তার পরামর্শদাতা কিংবা কোচ মার্টিনা হিঙ্গিস যে অর্জন করেছিলেন তাই করে দেখালেন বেনচিচ। ১৯৯৯ সালে এই ১৮ বছর বয়সেই রজার্স কাপের শিরোপা জিতে টেনিস বিশ্বকে চমকে দিয়েছিলেন মার্টিনা হিঙ্গিস। টেনিসের জীবন্ত সেই কিংবদন্তির পথেই এবার হাঁটলেন সুইস তারকা। মৌসুমের শেষ গ্র্যান্ডসøাম টুর্নামেন্টের আগে কঠিন সেই কাজটা করেই আনন্দে-আত্মহারা বেনচিচ। ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ডব্লিউটিএ শিরোপা জয়ের পর টেনিস র‌্যাঙ্কিংয়েও ব্যাপক উন্নতি ঘটেছে তার। র‌্যাঙ্কিংয়ে ৮ ধাপ এগিয়ে বর্তমানে ১২তম স্থানে অবস্থান তার। বেনচিচের লক্ষ্য এখন শুধুই সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়া। আগস্টের শেষ সপ্তাহেই শুরু হবে মৌসুমের শেষ গ্র্যান্ডসøাম টুর্নামেন্ট ইউএস ওপেন। তারই প্রস্তুতি-মঞ্চ হিসেবে বিবেচনা করা হয় এই রজার্স কাপকে। আর রজার্স কাপের শিরোপা জেতায় স্বাভাবিকভাবেই ফেবারিট হিসেবে কোর্টে নামবেন ইউএস ওপেনের ফ্ল্যাশিং মিডোজে। আর ক্যারিয়ারের সোনালি সময় কাটাতে থাকা সেরেনা উইলিয়ামস কিংবা সিমোনা হ্যালেপদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ পরাজয়ের এই হতাশা থেকে বেরিয়ে আসা। তবে ইউএস ওপেনের আগেই তারা আবার নিজেদের স্বরূপে ফেরানোর সুযোগ পাচ্ছেন। সিনসিনাতি মাস্টার্সে যে খেলবেন তারা। মৌসুমের শেষ গ্র্যান্ডসøাম টুর্নামেন্টের আগে সিনসিনাতি মাস্টার্সই টেনিস খেলোয়াড়দের প্রস্তুতির শেষ মঞ্চ। এখানে সেরেনা-হ্যালেপদের সঙ্গে কোর্টে নামবেন রুশ সুন্দরী মারিয়া শারাপোভা এবং চেক প্রজাতন্ত্রের পেত্রা কেভিতোভাও। রাশিয়ান টেনিসের গ্ল্যামারগার্ল শারাপোভার এই ইভেন্টে খেলার কথা ছিল। কিন্তু ইনজুরির কারণে রজার্স কাপ থেকে নিজের নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন তিনি। উইম্বল্ডনের পর সিনসিনাতি মাস্টার্সেই প্রথমবারের মতো কোর্টে দেখা যাবে তাকে। পুরুষ এককে সিনসিনাতি মাস্টার্সে পারফর্ম করবেন টেনিসের জীবন্ত কিংবদন্তি রজার ফেদেরারও।
×