নিজস্ব সংবাদদাতা, কুষ্টিয়া, ১৭ আগস্ট ॥ জননিরাপত্তা বিঘিœত হওয়ায় কুষ্টিয়ায় আওয়ামী লীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ চার নেতার ৬টি আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে। জাতীয় শোক দিবসের কর্মসূচী পালনকালে কুষ্টিয়া শহরের কেন্দ্রস্থল মজমপুর গেটে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দেয়া ও শ্রদ্ধা নিবেদনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনার দুই দিন পর সংশ্লিষ্ট নেতাদের আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্সে বাতিল করা হলো।
সোমবার এক আদেশে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দ বেলাল হোসেন আওয়ামী লীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ চার নেতার ৬টি আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স বাতিল এবং বাতিলকৃত আগ্নেয়াস্ত্র জব্দের নির্দেশ দেন। বাতিলের তালিকায় রয়েছেন বহিষ্কৃৃত আওয়ামী লীগ নেতা মোমিনুর রহমান মোমিজের দু’টি, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ সাজ্জাদ হোসেন সবুজের ২টি, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আক্তারুজ্জামান লাবু’র একটি, ও শনিবার র্যাবের হাতে একটি শটগান ও গুলিসহ গ্রেফতার হওয়া মোমিজের ঘনিষ্ট সহযোগী মোস্তাফিজুর রহমান মধুর ১টি। জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দ বেলাল হোসেন জানান, জননিরাপত্তা বিঘিœত হওয়ায় কুষ্টিয়ায় ৪ জনের ৬টি আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে।
জেলা পুলিশ সুপার প্রলয় চিসিম জানান, আওয়ামী লীগ নেতা মোমিনুর রহমান মোমিজের বাতিল করা অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে একটি পিস্তল ও একটি শটগান। জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সাধারণ সম্পাদক শেখ সাজ্জাদ হোসেন সবুজের বাতিল করা অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে একটি পিস্তল ও একটি শটগান এবং জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আক্তারুজ্জামান লাবুর একটি পয়েন্ট টুটু বোর রাইফেল ও মোস্তাফিজুর রহমানের একটি শটগানের লাইসেন্স বাতিল করা হয়। এদিকে, গত শনিবার শোক দিবসের কর্মসূচী চলাকালে পুলিশের সামনেই প্রকাশ্যে শটগান বের করে গুলি ছুঁড়তে থাকা ঢাকার কাফরুল থানার বরখাস্ত হওয়া আলোচিত সেই পুলিশ কর্মকর্তা আনিসুর রহমান আনিসকে এখনও আইনের আওতায় আনা সম্ভব হয়নি। পুলিশ সুপার জানান, ঘটনার পর থেকে আনিস আত্মগোপনে রয়েছে। তবে পুলিশ তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
পুলিশের একটি সূত্র জানায়, ১৫ আগস্ট শোক দিবসের কর্মসূচীতে কাফরুল থানার বরখাস্ত হওয়া আলোচিত এএসআই আনিসুর রহমান আনিস যে শটগান দিয়ে গুলি ছুঁড়েছিল সেটি আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃৃত নেতা মোমিনুর রহমান মোমিজের লাইসেন্সকৃত শটগান। পুলিশ সুপারের দফতর থেকে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আক্তারুজ্জামান লাবু, সাধারণ সম্পাদক শেখ সাজ্জাদ হোসেন সবুজ, কুষ্টিয়া শহর আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোমিনুর রহমান মোমিজ ও তার অন্যতম সহযোগী মোস্তাফিজুর রহমান মধুসহ বেশ কয়েক জন আওয়ামী লীগ নেতার অস্ত্রের লাইসেন্স বাতিলের সুপারিশ করা হয়। শনিবারের ওই সংঘর্ষে যুবলীগকর্মী সবুজ হোসেন (২২) নিহত ও ৫ জন আহত হয়। এ ঘটনার পর রবিবার বিকেলে নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে কুষ্টিয়া মডেল থানায় জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন সবুজকে প্রধান আসামি করে মোট ২০ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। তবে আসামিরা কেউ গ্রেফতার হয়নি।
কুষ্টিয়ার চার আওয়ামী ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার অস্ত্রের লাইসেন্স বাতিল
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: