ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

৫১ ঘণ্টা পর গামার বাবার মামলা দায়ের

বাড্ডায় ট্রিপল মার্ডার পুলিশের ভূমিকা নিয়ে নানা প্রশ্ন

প্রকাশিত: ০৫:৪৭, ১৭ আগস্ট ২০১৫

বাড্ডায় ট্রিপল মার্ডার পুলিশের ভূমিকা নিয়ে নানা প্রশ্ন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানীর বাড্ডায় দুই আওয়ামী লীগ নেতাসহ তিন খুনের ঘটনায় নিয়ে পুলিশের রহস্যজনক ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তিনদিনে পুলিশ এ চাঞ্চল্যকর খুনের ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। তবে ৫১ ঘণ্টা পর শনিবার রাতে এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। নিহত ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা শামসু মোল্লার পরিবার অভিযোগ করে, এই খুনে এলাকার চার চিহ্নিত সন্ত্রাসী জড়িত। এলাকাবাসী তাদের সবাইকে সন্ত্রাসী হিসেবে চেনে। পুলিশও সব জানে। অথচ পুলিশ কাউকে ধরছে না। উল্টো তদন্ত নিয়ে গড়িমসি করছে। শনিবার রাত বারোটার দিকে নিহত স্বেচ্ছাসেবক লীগের ঢাকা মহানগর উত্তরের সাহিত্য বিষয়ক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান গামার বাবা মতিউর রহমান বাদী হয়ে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। বাড্ডা থানার ওসি এম এ জলিল জনকণ্ঠকে জানান, মামলায় ১০ থেকে ১২ জনকে আসামি করা হয়েছে। তবে কারও নাম উল্লেখ করা হয়নি। নিহত ৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক শামসু মোল্লার বোনের স্বামী মোঃ পলাশ জানান, এই হত্যাকা-ের ঘটনায় সোহেল রানা, জুনায়েদ হোসেন জুয়েল, রনি ও বিজয়ের নাম উল্লেখ করে মামলা করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু পুলিশ মামলা নেয়নি। সোহেল ও য়েল বাড্ডা থানা ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক পরিচয়ে এলাকায় ব্যানার টাঙ্গিয়েছে। তিনি জানান, এই চারজনই এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী। তাদের সবাইকে এলাকাবাসী সন্ত্রাসী হিসেবে চেনে। এরা বাউল সুমনের সহযোগী ছিল। এদের ব্যবহার করেই বাউল সুমন এলাকায় ঝুট ব্যবসার নিয়ন্ত্রণসহ বিভিন্ন অপকর্ম করত। পলাশ জানান, হত্যাকা-ের পরদিন নিহতদের একজনের পরিবারের পক্ষ থেকে হত্যাকা-ে জড়িত ৭ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছিল। তবে বাড্ডা থানার ওসি এম এ জলিল জানান, যেহেতু ট্রিপল মার্ডারের ঘটনায় নিহত গামার পরিবারের পক্ষ থেকে এরই মধ্যে একটি মামলা হয়েছে। তাই নতুন করে আর মামলার দরকার নেই। তবে তাদের পরিবারের পক্ষ থেকে যাদের নাম উল্লেখ করেছে। তাদের ব্যাপারে তদন্ত চলছে। তাদের নামের মধ্যে কয়েক সন্দেহভাজন আসামি রয়েছে। সবাই পুলিশের নজরদারিতে রয়েছে। দ্রুত তাদের গ্রেফতার করা হবে বলে ওসি জানান। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, দীর্ঘদিন ধরে নিহত স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা মাহবুবুর রহমান গামার সঙ্গে ফারুক হোসেন মিলনের গরুর হাটের ইজারা ও রাজনৈতিক কারণে বিরোধ চলে আসছিল। গামার পরিবার অভিযোগ করে, আর ওই বিরোধের জেরেই পরিকল্পিতভাবে তাকে খুন করা হতে পারে। আটক ফারুক হোসেন মিলনের বাসা ছ-৬৩/৫ উত্তর বাড্ডায়। তিনি যুবলীগ নেতা মিল্কী হত্যার অন্যতম পলাতক আসামি চঞ্চলের সহযোগী। ঘটনার পর থেকে মিলন পলাতক রয়েছে। উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার রাতে বাড্ডার আদর্শনগর পানির পাম্পের কাছে স্বেচ্ছাসেবক লীগের ঢাকা মহানগর উত্তরের সাহিত্য বিষয়ক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান গামাসহ কয়েকজন আড্ডা দেয়ার সময় সন্ত্রাসীরা হামলা চালায়। তাদের গুলিতে আহত চারজনের মধ্যে তিনজনকে ইউনাইটেড হাসপাতালে নেয়া হলে রাতেই ঢাকার ৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক শামসু মোল্লা (৪৫) এবং উত্তর বাড্ডার একটি বেসরকারী হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ফিরোজ আহমেদ মানিক (৪৫) মারা যান। পরদিন সকালে গামার (৪০) মৃত্যু হয়।
×