ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বিদেশেও ভাল খেলার প্রত্যয় মাশরাফির

প্রকাশিত: ০৬:২০, ১৬ আগস্ট ২০১৫

বিদেশেও ভাল খেলার প্রত্যয় মাশরাফির

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ টেস্ট, টি২০’র চেয়ে ওয়ানডেতে বাংলাদেশ এখন অনেক শক্তিশালী দল। দেশের মাটিতে ওয়ানডেতে যেখানে শক্তিশালী দল হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ, সেখানে বিদেশের মাটিতে খুবই দুর্বল দল এখনও। আর তাই বাংলাদেশ ওয়ানডে দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা এখন বিদেশে ভাল খেলার দিকেই মনোযোগ দিচ্ছেন। বলেছেন, ‘আমরা নিজেদের (দেশের মাটিতে) সেরা দল হিসেবে প্রমাণ করেছি। তবে সামনে আরও বড় চ্যালেঞ্জ আছে। দেশের বাইরে ভাল করাটাই বড় চ্যালেঞ্জ। ঘরের মতো বিদেশেও আমাদের ভাল খেলতে হবে।’ গত বছরের নবেম্বর থেকে বাংলাদেশ দল তুখোড় নৈপুণ্যের মধ্যে আছে। জিম্বাবুইয়েকে ৫-০ ব্যবধানে ওয়ানডে সিরিজে হারানোর পর থেকেই বাংলাদেশের ক্রিকেটের চেহারাই যেন পাল্টে যায়। এরপর অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডের মাটিতে হওয়া বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো কোয়ার্টার ফাইনালে উঠে ইতিহাস গড়েছে। বিশ্বকাপ শেষে পাকিস্তানকেও ৩-০ ব্যবধানে হারিয়ে ‘বাংলাওয়াশ’ করেছে। ভারতকেও ২-১ ব্যবধানে হারিয়ে সিরিজ জিতেছে। সর্বশেষ দক্ষিণ আফ্রিকাকেও সিরিজে মাত করেছে। দেশের মাটিতে যেন ওয়ানডে সিরিজে অপ্রতিদ্বন্দ্বী দল হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ, যে কাজটি দেশের বাইরে করা যাচ্ছে না। দেশের মাটিতে ১৪৯ ওয়ানডে খেলে যেখানে ৫৮টি ম্যাচে জয় আছে, সেখানে দেশের বাইরে ১০১ ম্যাচে জয় ২৩টিতে। আর নিরপেক্ষ ভেন্যুতে ৫৯ ম্যাচে জয় ১৪টি। দেশের মাটিতে দুর্দান্ত সাফল্য। কিন্তু বিদেশের মাটিতে ব্যর্থতা আছে। আর তাই মাশরাফি সেই দিকটিতেই এবার দৃষ্টি দিচ্ছেন। দ্বিপক্ষীয় সিরিজে দেশের বাইওে তো ২৫টি সিরিজ খেলে জিম্বাবুইয়ে, কেনিয়া ও দুর্বল ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ছাড়া আর কোন দলের বিপক্ষেই সিরিজ জিততে পারেনি বাংলাদেশ। অথচ দেশের মাটিতে ৩৪টি ওয়ানডে সিরিজ খেলে জিম্বাবুইয়ে, কেনিয়া, আয়ারল্যান্ড, স্কটল্যান্ডকে হারানোর সঙ্গে ওয়েস্ট ইন্ডিজ, নিউজিল্যান্ড, পাকিস্তান, ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়েছে। দেশের মাটিতে যে বাংলাদেশ কতটা শক্তিশালী দল তা বুঝিয়ে দিয়েছে। এবার বিদেশের মাটিতে সেই শক্তি দেখানোর পালা। ঘরের মাটিতে টানা ৪ ওয়ানডে সিরিজ জয়ের পরও পা মাটিতেই রাখছেন বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। তিনি মনে করছেন, দেশের মাটিতে ভাল করলেও বিদেশে ভাল করাটাই বাংলাদেশের জন্য মূল চ্যালেঞ্জ। বনানীতে সম্প্রতি একটি রেস্টেুরেন্টের উদ্বোধন করার পর মাশরাফি বিদেশে ভাল করা নিয়ে নিজের মনের কথা জানিয়েছেন। জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা এখন ছুটি কাটাচ্ছেন। যে যার মতো ঘুরে বেড়াচ্ছেন। পরিবার, আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধবদের সময় দিচ্ছেন। ২১ আগস্ট থেকে আবার প্রস্তুতিতে নেমে যেতে হবে। ততদিন ছুটি আছে। কেউ দেশে আবার কেউ বিদেশে ঘুরতে বেরিয়ে পড়েছেন। ছুটির মধ্যেও মাশরাফি আবার ফর্ম-ফিটনেস ধরে রাখার মিশন হোম অব ক্রিকেট মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে চালিয়ে যাচ্ছেন। ৩ আগস্ট দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজ শেষে ক্রিকেটাররা ছুটিতে থাকায় একেবারেই যারা অনুশীলনের মধ্যে নেই, দীর্ঘ বিশ্রামের পর ক্যাম্প শুরু হলে শারীরিকভাবে প্রভাব পড়তে পারে তাদের। তবে মাশরাফি এতে একমত নন। কারণ জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে হোম সিরিজ থেকে শুরু করে ৮ মাসের ক্লান্তি। সেই ক্লান্তি দূর করতে বিশ্রামটা কাজে লাগবে বলে মনে করছেন তিনি। বলেছেন, ‘টানা ৮ মাস শরীরের ওপর দিয়ে ধকল গেছে ক্রিকেটারদের। এই বিশ্রামটা খেলোয়াড়দের শারীরিক এবং মানসিকভাবে চাঙ্গা হতে সাহায্য করবে।’ বাংলাদেশ আর ছোট দল নয়- এ কথা বলে বাংলাদেশের প্রশংসা করেছেন দক্ষিণ আফ্রিকা সফররত নিউজিল্যান্ড দলের ক্রিকেটার গ্র্যান্ট ইলিয়ট। বলেছেন, ‘বাংলাদেশের মাটিতে খেলা কঠিন কাজ।’ ইলিয়টের এই প্রশংসাসূচক মন্তব্য সম্পর্কে জানতে চাইলে মাশরাফি বলেন, ‘বাংলাদেশ প্রমাণ করেছে তারা সেরা দল। তবে সামনে আরও বড় চ্যালেঞ্জ আছে। ঘরের মতো বিদেশেও আমাদের ভাল খেলতে হবে।’ তবে এই সুযোগটিও তো পেতে হবে। সামনে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজ। সেটি টেস্ট সিরিজ। অর্থাৎ মাশরাফির খেলা হচ্ছে না। সেই সঙ্গে ওয়ানডে দলে থাকা ক্রিকেটারদেরও খেলা হচ্ছে না। এ বছরই আর খেলা হবে না। কোন ওয়ানডে খেলা যে এ বছর আর নেই। তাই ওয়ানডে খেলতে হলে ওয়ানডে ক্রিকেটারদের সেই ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। তখন জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ রয়েছে। তাও সেটি হবে দেশে। বাংলাদেশকে বিদেশের মাটিতে ওয়ানডে খেলতে হলে আগামী বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। নিউজিল্যান্ডে গিয়ে খেলবে বাংলাদেশ। এর আগে বিদেশের মাটিতে আর কোন সিরিজ আয়োজন করা না গেলে সেই আগামী বছরের ডিসেম্বর পর্যন্তই বাংলাদেশকে অপেক্ষা করতে হবে। সেই সঙ্গে দেশের বাইরেও ওয়ানডে সিরিজে ভাল করার চ্যালেঞ্জের জন্যও দীর্ঘ অপেক্ষাতেই থাকতে হবে।
×