ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

আজ প্রথম ফ্লাইট

এ বছর ৫১ হাজার হজযাত্রী পরিবহন করবে বিমান

প্রকাশিত: ০৫:৩৮, ১৬ আগস্ট ২০১৫

এ বছর ৫১ হাজার হজযাত্রী পরিবহন করবে বিমান

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আজ বিমানের প্রথম হজ ফ্লাইট। সকাল ৮টা ৩৫ মিনিটে ৪১৯ জন হজযাত্রী নিয়ে জেদ্দার উদ্দেশে ঢাকা ছেড়ে যাবে বিমান। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান, বিমান চেয়ারম্যান এয়ার মার্শাল (অব.) জামাল উদ্দিন আহম্মেদ এ সময় বিমানবন্দরে উপস্থিত থেকে উদ্বোধনী ফ্লাইটের হজযাত্রীদের বিদায় জানাবেন। একই দিনে হজ ফ্লাইট বিজি-৩০১১ দুপুর ২টা ৩৫ মিনিটে ৪১৯ জন এবং শেড্যুল ফ্লাইট বিজি-৫০১১ রাত ৮টা ৩৫ মিনিটে ৪১৯ জন এবং শেড্যুল ফ্লাইট বিজি-০০৩৫ রাত ১১টা ৫৯ মিনিটে জেদ্দার উদ্দেশে ঢাকা ছাড়বে। নির্ধারিত সময়ে, নির্বিঘেœ হজ ফ্লাইট পরিচালনার সকল প্রস্তুতি ইতিমধ্যেই সম্পন্ন করেছে বিমান। চট্টগ্রাম এবং সিলেট থেকেও এ বছর যথারীতি হজ ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে। গত বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আশকোনার হজ ক্যাম্পে হজ কার্যক্রমের উদ্বোধন ঘোষণা করেন। এ বছর হজ ফ্লাইট ও শেড্যুল ফ্লাইটে মোট ৫১ হাজার হজযাত্রী হজ পালনে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সে জেদ্দা যাবেন। এসব হজযাত্রীদের ঢাকা-জেদ্দা-ঢাকা রুটে পারাপারের জন্য বিমান ইতিমধ্যেই নিজস্ব সুপরিসর বোয়িং ৭৭৭ উড়োজাহাজ প্রস্তুত রেখেছে। ঢাকা-জেদ্দা-ঢাকা রুটে চলাচলকারী বিমানের নিয়মিত ফ্লাইটেও কিছু হজযাত্রী পবিত্র ভূমিতে যাবেন। এ বিষয়ে হজ অফিসার ডক্টর আবু সালেহ মোস্তফা কামাল বলেন, বিমান যেমন প্রস্তুতি নিয়েছে হজ অফিসও সেভাবেই সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। ইতোমধ্যে পর্যাপ্তসংখ্যক ভিসাও ইস্যু করেছে ঢাকার সৌদি দূতাবাস। বিমান চেয়ারম্যান এয়ার মার্শাল জামাল উদ্দিন জানান, পবিত্র হজের গুরুত্ব¡ ও ধর্মপ্রাণ মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স একটি সর্বাঙ্গ-সুন্দর হজ কার্যক্রম পরিচালনায় দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। বাংলাদেশ থেকে প্রায় ১ লাখ ১ হাজার ৭৫৮ জন হজযাত্রী পবিত্র হজব্রত পালনে সৌদি আরব যাবেন। এর মধ্যে সরকারী ব্যবস্থাপনায় যাবেন মোট ২ হাজার ৬শ অবশিষ্ট ৯৯ হাজার ১৫৮ জন যাবেন বেসরকারী ব্যবস্থাপনায়। সরকারী ব্যবস্থাপনায় এ বছর বিমানে যাবেন মোট ২ হাজার ৫৭৫ জন হজযাত্রী অবশিষ্ট ৪৮ হাজার ৪২৫ জন যাবেন বেসরকারী ব্যবস্থাপনায়। ঢাকা-জেদ্দা-ঢাকা রুটে হজযাত্রীদের ইকনোমি ক্লাসে বিমান ভাড়া ১ হাজার ৫১৫ মার্কিন ডলার এবং বিজনেস ক্লাসে বিমান ভাড়া ২ হাজার ৫শ’ মার্কিন ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে। এর সঙ্গে যোগ হবে দেয় অন্যান্য কর। ঢাকা থেকে জেদ্দা প্রতি ফ্লাইটের উড্ডয়নকাল হবে আনুমানিক ৭ ঘণ্টা। দুই মাসব্যাপী হজ-ফ্লাইট পরিচালনায় শেড্যুল ফ্লাইটসহ মোট ২৮৫টি ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে। এরমধ্যে ২২৪ ‘ডেডিকেটেড’ এবং ৬১টি শেড্যুল ফ্লাইট। ১৬ আগস্ট থেকে ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ‘প্রি-হজ’-এ মোট ১৪৫টি ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে (ডেডিকেটেড-১১৫ এবং শেড্যুল-৩০)। পোস্ট-হজে ১৪০টি ফ্লাইট চলবে ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত (ডেডিকেটেড-১০৯ এবং শেড্যুল-৩১)। ২ হাজার ৫৭৫ জন সরকারী ব্যবস্থাপনার যাত্রীসহ মোট ৫১ হাজার জন হজযাত্রী হজ পালনের জন্য ক্যারিয়ার হিসেবে বিমানকে ব্যবহার করবেন। হজ ফ্লাইট পরিচালনার জন্য বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ঢাকা-জেদ্দা উভয় স্থানেই বিশেষ ব্যবস্থার আয়োজন করেছে। প্রত্যেক হজযাত্রী বিনামূল্যে সর্বাধিক ২ পিস ৩২ কেজি মালামাল বিমানে ও বিজনেস ক্লাসের জন্য সর্বাধিক ২ পিস ৪২ কেজি এবং কেবিন ব্যাগেজে ০৭ কেজি মালামাল সঙ্গে নিতে পারবেন। কোন অবস্থাতেই প্রতি প্রিস ব্যাগেজের ওজন ২৫ কেজির বেশি হতে পারবে না। প্রত্যেক হজযাত্রীর জন্য ৫ লিটার জমজমের পানি ঢাকায় নিয়ে আসা হবে এবং হাজী সাহেবানরা ঢাকা ফেরত আসার পর তাঁদের তা প্রদান করা হবে। হাজী সাহেবানরা সঙ্গে করে বিমানে পানি বহন করতে পারবেন না। যে কোন ধারালো বস্তু যেমন ছুরি, কাঁচি, নেইল কাটার, ধাতব নির্মিত দাঁত খিলন, কান পরিষ্কারক, তাবিজ ও গ্যাস জাতীয় বস্তু যেমন এ্যারোসল এবং ১০০ এমএলের বেশি তরল পদার্থ হ্যান্ড ব্যাগেজে বহন করা যাবে না। নতুন নিয়ম অনুযায়ী হাজী সাহেবানদের কষ্ট লাঘব করার উদ্দেশে ফিরতি ফ্লাইটের (জেদ্দা থেকে বাংলাদেশ) ব্যাগেজ জেদ্দা এয়ারপোর্ট এ চেক-ইন এর সময় বিমানে গ্রহণ করা হবে না। পরিবর্তে এই ব্যাগেজ পূর্বেই মক্কা ও মদিনায় বিমান নির্ধারিত স্থানে ও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জমা দিতে হবে যা বিমানের ব্যবস্থাপনায় সংশ্লিষ্ট হাজী সাহেবানদের বহনকারী ফ্লাইটেই পরিবহন করা হবে। বিমান কর্তৃক পরিচালিত ডেডিকেটেড হজ ফ্লাইটসমূহের চেক-ইন, ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস আনুষ্ঠানিকতা প্রতিবারের ন্যায় এবারও হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সংলগ্ন হজ ক্যাম্পেই সম্পন্ন করা হবে। তবে শেড্যুল ফ্লাইটের হজ-যাত্রীদের যাত্রাপূর্ব আনুষ্ঠানিকতা যথানিয়মে বিমানবন্দরে সম্পন্ন করা হবে। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ও সাউদিয়া হজ-যাত্রীদের ঢাকা-জেদ্দা রুটে আনা-নেয়া করবে। এ দিকে হজ অফিসার ডক্টর আবু সালেহ মস্তোফা কামাল জনকণ্ঠকে বলেন, ভিসার সব প্রস্তুতিও সম্পন্ন। ভিসার অভাবে কোন ফ্লাইট খালি যাবে না। ভিসা জটিলতার অভিযোগ যারা করেন,এ জন্য মূলত তারাই দায়ী। এখন পর্যন্ত যে ভিসা পাওয়া গেছে তাতে কোন জটিলতাও হয়নি। ফ্লাইট নিয়েও কোন আশঙ্কা নেই।
×