ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বঙ্গবন্ধুকে নিবেদিত মোহাম্মদ রফিকের কবিতা

প্রকাশিত: ০৫:৫৫, ১৫ আগস্ট ২০১৫

বঙ্গবন্ধুকে নিবেদিত মোহাম্মদ রফিকের কবিতা

ব্যাঘ্রবিষয়ক আগস্টের পনেরো তারিখ উনিশ শ’ পঁচাত্তর; অতর্কিত শিকারির পদশব্দে অরণ্য শঙ্কিত বাদুড়ের ডানার ঝাপ্টায় গজারীর মৃত পাতা খসে পড়ে, বনের গোপন সঙ্কেতে সচকিত হরিণ-হরিণী, কাক কা-কা, ইতস্তত রাইফেলের প্রক্ষিপ্ত-উন্মত্ত গুলি, বিঘিœত বেজির সহবাস; বাঘের দু’চোখ বিদ্ধ সার্চলাইটে, হটে না এগোয় আহত প্রচণ্ড ক্ষোভ আলোর চাতুর্যে মানবিক ছলনায়, শাসায় মৃত্যুকে, জানে এই বেঁচে থাকা শিকারির আক্রমণে অরণ্য শঙ্কিত অযথাই; দীর্ঘদেহী সুন্দরী গরান শাল অতন্দ্র সেগুন পাহারায়, নিজস্ব শাবকগুলো দুঃখে আঁচড়ায় নখ, ফোঁসে; প্রমত্ত গর্জনে সাড়া তুলবে অকস্মাৎ; বাঙালির শুদ্ধ নাম শেখ মুজিবুর রহমান। তবে নিজে স্বপ্ন দেখেছিল, কাউকে কাউকে স্বপ্নও দেখিয়েছিল; আজ শুকনো গোবরের নিচে স্থলপদ্ম, মারা পড়ে আছে; একটি সারস্বত জীবনের জনপদাবলী; ভালোবাসার মাস সে তো পড়ে রইল ধলেশ্বরী পদ্মা বংশী বিষখালী পেরিয়ে যতদূর বিস্তৃত মেঘনা যমুনা গজারিয়া তিস্তা; কোথাও-বা তিরতির জলে হাই তুলছে বালি, বেগানা হাওয়ায় ঘোমটা খুলছে তৃণ! থমকে-যাওয়া মেঘে-মেঘে ক্ষয়ে-আসা চতুর্দিকে প্রক্ষিপ্ত সূর্যের ছায়াভস্ম, এতটাই নিরুদ্বিগ্ন; যেন সময়ের অশ্বক্ষুরধ্বনি থেমে আছে পলাশীর প্রান্তরসীমা ছুঁয়ে আম্রকাননে! শুধুমাত্র একপাল অভিবাসী পাখির দঙ্গল উড়ে চলে মাঠ-ঘাট-নদী, কচুরিপানার ঝাঁক, হোগলার ঝোট ছেড়ে; পায়ে কাদা, মুখে ধানশিষ! নিঃসাড় হয়ে এলো দেহ! এইমাত্র বেরিয়ে গেল শ্বাস! জল ভাবে, চুড়ি-শাঁখা-নোয়া ভেঙে শুরু হলো বেপথু হওয়ার কাল! পালটে নেয় জ্যোৎস্না-ধোয়া ধবধবে সাদা থান! রাত্তির কিন্তু গাঢ়স্বরে বলে, না! ওই দেখো, অন্ধকার বাঁশঝাড়ে, শটিবনে, দেহখানা নড়েচড়ে, হায় হায় জলগন্ধে ভুরভুর নিঃসীম পাথার!
×