চীনের উত্তরাঞ্চলীয় বন্দর শহর তিয়ানজিনে বুধবার রাতে ভয়াবহ বিস্ফোরণে অন্তত ৪৪ জন নিহত এবং পাঁচ শতাধিক লোক আহত হয়েছে। বন্দরের কাছে ‘দাহ্য পদার্থ ও রাসায়নিকের’ গুদামে এই জোড়া বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। দেশটির রাষ্ট্রীয় বার্তাসংস্থা সিনহুয়া এ খবর জানিয়েছে। খবর বিবিসি, এএফপি ও ওয়েবসাইট
রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যম চায়না সেন্ট্রাল টেলিভিশন (সিসিটিভি) জানিয়েছে, চীনের স্থানীয় সময় বুধবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে ‘বিস্ফোরকের একটি’ চালান পরিবহনের সময় একটি বিস্ফোরণ ঘটে। সেই বিস্ফোরণের ধাক্কা কয়েক মাইল দূর থেকেও অনুভূত হয়। প্রথম বিস্ফোরণের ৩০ সেকেন্ডের মাথায় দ্বিতীয় বিস্ফোরণটি ঘটে। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে আসা ছবি ও ভিডিওতে দেখা যায়, তিয়ানজিনের আকাশ আগুনের শিখায় আলোকিত হয়ে উঠেছে। দেশটির ডেলাইট পত্রিকা জানায়, বিস্ফোরণের ঘটনায় তিয়ানজিনে বহু ভবন ধসে পড়েছে এবং বন্দর এলাকায় কয়েক শ’ গাড়ি ধ্বংস হয়েছে। বিস্ফোরণে বন্দর এলাকায় শ্রমিকদের আবাসস্থলও ধ্বংস হয়েছে। চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং দ্রুত আগুন নিয়ন্ত্রণ এবং উদ্ধার তৎপরতা চালানোর জন্য সর্বশক্তি নিয়োগ করার নির্দেশ দিয়েছেন। তিয়ানজিন দমকল বিভাগের উদ্ধৃতি দিয়ে রাষ্ট্রীয় বেজিং সংবাদপত্র জানিয়েছে, ঘটনাস্থলে থাকা ৩৬ জন দমকল কর্মীর সঙ্গে কর্তৃপক্ষের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। হাসপাতালগুলো আহত লোকজনে উপচে পড়ার কথা জানিয়েছে। চীনের ভূমিকম্প নেটওয়ার্ক সেন্টার জানিয়েছে, প্রথম বিস্ফোরণের মাত্রা তিন টন টিএনটি (ট্রাই নাইট্রো টলুইন) বিস্ফোরকের সমতুল্য ছিল, আর দ্বিতীয়টি ২১ টন টিএনটির সমতুল্য। বড় বিস্ফোরণ দুটির পর আশপাশে আরও কয়েকটি বিস্ফোরণ ঘটেছে। নিহতদের মধ্যে চারজন দমকলকর্মী রয়েছেন, আর আহতদের মধ্যে ৩২ জনের অবস্থা গুরুতর। তবে ভয়াবহ বিস্ফোরণ সত্ত্বেও চীনের অন্যতম ব্যস্ত এ বন্দরটির কার্যক্রম স্বাভাবিক আছে বলে জানিয়েছেন বন্দরের একজন কর্মকর্তা। চীনের রাজধানী বেজিংয়ের দক্ষিণ-পূর্বের গুরুত্বপূর্ণ বন্দর ও শিল্পশহর তিয়ানজিনে দেড় কোটি মানুষ বসবাস করে। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছেন, বিস্ফোরণের পর আগুনের কু-লী রাতের আকাশকে একেবারে আলোকিত করে তোলে।
যা বহু দূর থেকে যা দেখা গেছে। অনেকে ভেবেছেন ভূমিকম্প হচ্ছে। বহু মানুষ আতঙ্কে বাইরে বের হয়ে আসে। এদিকে দিনের আলো ফোটার পর বোঝা যায় চারপাশে বেশকিছু ভবন গুঁড়িয়ে গেছে। দুমড়ে মুচড়ে পড়ে রয়েছে বহু কন্টেনার। বৃহস্পতিবার সকালেও আগুন জলতে দেখা গেছে। আশপাশে বিশাল এলাকাজুড়ে বিদ্যুত সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। উদ্ধারকর্মীরা ধ্বংসস্তূপের ভেতরে তল্লাশি অভিযান অব্যাহত রেখেছেন। সিসিটিভি আরও জানিয়েছে, এ ঘটনায় রুইহাই লজিস্টিকসের সিনিয়র ম্যানেজারদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে কর্তৃপক্ষ।