ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

চিকিৎসকের অবহেলা

সন্তানকে এক নজর দেখার আগেই পৃথিবী ছাড়তে হলো প্রসূতিকে

প্রকাশিত: ০৬:২৩, ১০ আগস্ট ২০১৫

 সন্তানকে এক নজর দেখার  আগেই পৃথিবী ছাড়তে হলো প্রসূতিকে

নিজস্ব সংবাদদাতা, চুয়াডাঙ্গা, ৯ আগস্ট ॥ সন্তানকে এক নজর দেখার আগেই প্রসূতি মা চলে গেলেন পৃথিবী ছেড়ে। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে শুক্রবার রাতে প্রচুর রক্তক্ষরণের কারণেই নাজমা মারা গেছেন বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়। তবে নিহত নাজমিন আক্তার নাজমার (২০) স্বজনরা অভিযোগ করেন, চিকিৎসক ও নার্সের অবহেলায় তার মৃত্যু হয়েছে। জানা যায়, দামুড়হুদার প্রতাপপুর গ্রামের জাসদ আলীর স্ত্রী নাজমিন আক্তার নাজমার প্রসব বেদনা উঠলে শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টায় তাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গাইনি ওয়ার্ডের সেবিকা ও আয়া আশ্বস্ত করেন, সমস্যা নেই স্বাভাবিকভাবেই সন্তান প্রসব হয়ে যাবে। বেলা সাড়ে তিনটায় নাজমা পুত্রসন্তান প্রসব করেন। এটা তার প্রথম সন্তান। সন্তান প্রসবের পর অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ শুরু হয়। অচেতন হয়ে পড়েন নাজমা। দায়িত্বপ্রাপ্ত নার্স হাজেরা খাতুন চেষ্টা করেন রক্তক্ষরণ থামানোর। ডাক্তার আসার আগে তিনিই ছেঁড়া স্থানে প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে সেলাই দিয়ে রক্ত থামানোর চেষ্টা করেন। তাতেও শেষ রক্ষা হয় না। তিনি শেষে জরুরী বিভাগের ডাঃ এহসানুল হককে খবর দেন। চিকিৎসক এহসানুল হক রোগীর শরীরে রক্ত দেয়ার পরামর্শ দেন। রোগীর শরীরে রক্তও দেয়া হয়। কিন্তু কোনপ্রকার ক্রসমেসিং না করেই রক্ত দেয়া হয় নাজমার শরীরে। অবস্থা বেগতিক হয়ে ওঠে। খবর পেয়ে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে আসেন গাইনি কনসালটেন্ট ডাঃ আকলিমা খাতুন। তিনি নাজমাকে দ্রুত বাইরে নেয়ার পরামর্শ দেন। কিন্তু তাকে বাইরে নেয়ার আগেই রাত সাড়ে ১০টার দিকে প্রসূতি নাজমা মারা যান। ওই ওয়ার্ডের চিকিৎসক শিশু কনসালটেন্ট ডাঃ মাহবুবুর রহমান মিলন জানান, শিশুর ওজন চার কেজি। যা স্বাভাবিকের চেয়ে প্রায় দেড় কেজি বেশি। তাই সন্তান প্রসব করানোর আগে আলট্রাসনোর মাধ্যমে দেখে সিজারের ব্যবস্থা করা উচিত ছিল। অভিযোগ রয়েছে, গাইনি ওয়ার্ডে সময়মতো ডাক্তারের রাউন্ড হয় না। অধিকাংশ রোগীই হাসপাতাল থেকে রেফার করে দেয়া হয়।
×