ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

আতঙ্কিত খনি এলাকাবাসী

মধ্যপাড়া পাথরখনি বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা

প্রকাশিত: ০৬:১৪, ১০ আগস্ট ২০১৫

মধ্যপাড়া পাথরখনি বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা

স্টাফ রিপোর্টার, দিনাজপুর ॥ দিনাজপুরের মধ্যপাড়া কঠিন শিলা খনিটি বন্ধ হওয়ার আশঙ্কায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন সেখানে কর্মরত শ্রমিক কর্মচারী এবং খনি এলাকার কয়েক হাজার পরিবার। এতে করে প্রায় ৫ হাজার শ্রমিকের পরিবার হুমকির মধ্যে রয়েছেন। জানা গেছে, মধ্যপাড়া খনির ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জার্মাানিয়া-ট্রেস্ট কনসোর্টিয়াম (জিটিসি) খনির কার্যক্রম শুরুর করার পর থেকে প্রায় সোয়া ১ বছরে রেকর্ড পরিমানে পাথর উত্তোলন করে। প্রতিদিন তিন শিফটে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার মে. টন করে পাথর উত্তোলন হওয়ায় খনিতে কর্মরত কর্মকর্তা, কর্মচারীসহ খনি শ্রমিকের প্রায় ১ হাজার মানুষের প্রত্যক্ষভাবে কর্মসংস্থান হয়। পাশাপাশি খনির বাম্পার উৎপাদন এবং পাথর বিক্রি বেড়ে যাওয়ায় খনি এলাকার মানুষের মুখে হাসি ফুটে ওঠে। পাথরখনির এই সুদিন আসায় খনি এলাকার ব্যবসায়ী, কুলি ও শ্রমিকসহ আরও প্রায় ৫ হাজার পরিবারে খনির দ্বারা পরোক্ষভাবে আয়ের পথ তৈরি হয়। খনির একটি সূত্রে জানা যায়, খনির উৎপাদন, রক্ষণাবেক্ষণ এবং পরিচালনার দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জিটিসি যখন খনিটিকে একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করে। তখন খনির সদ্য অপসারিত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী আবুল বাশার ও ব্যবস্থাপক রফিজুল ইসলাম রিটু গং-এর ষড়যন্ত্র শুরু করে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে অসহযোগিতাসহ তাদের কার্যক্রমে নানা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হয়। পাথর উত্তোলনে প্রয়োজনীয় বিদেশী যন্ত্রপাতি আমদানি করতে টালবাহানা এবং সময়ক্ষেপণ করা হয়। যন্ত্রপাতির অভাবে খনির নতুন স্টোপ নির্মাণ (নতুন শিলা উৎপাদন ইউনিট) এবং খনি উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হয়। ফলে জিটিসি উৎপাদন কমাতে বাধ্য হয়। এতে তারা তাদের অধীনে কর্মরত প্রায় ৫ শত খনি শ্রমিক, কর্মচারী ও কর্মকর্তাকে ছুটি দিয়েছে। যার কারণে খনি শ্রমিকদের চাকরি অনিশ্চয়তায় পড়েছে। পাশাপাশি খনি এলাকায় খনির উপকারভোগী প্রায় আরো প্রায় ৩ হাজার পরিবারের আয়ের পথ বন্ধ হয়ে গেছে। সূত্রমতে, পাথরখনির নতুন স্টোপ নির্মাণ এবং খনি উন্নয়ন করে জিটিসি তাদের চুক্তির মেয়াদকাল ৬ বছরে প্রায় ৯২ লাখ মেট্রিক টন পাথর উত্তোলন করবে। গত আট মাস আগে তারা খনিতে প্রয়োজনীয় বিদেশী যন্ত্রপাতি এবং যন্ত্রাংশ সরবরাহের জন্য খনি কর্তৃপক্ষ (এমজিএমসিএর)কে চাহিদাপত্র দেন। কেননা চুক্তি অনুযায়ী প্রয়োজনীয় সকল দেশী বিদেশী মালামাল খনি কর্তৃপক্ষ সরবরাহ করবেন। কিন্তু খনি কর্তৃপক্ষ সময়মতো মালামাল সরবরাহ না করার কারনে জিটিসি এক শিফটে আসতে বাধ্য হয়েছে। তারা এই সমস্যার কারনে প্রায় ৫ শত শ্রমিক, কর্মচারী ও কর্মকর্তাকে সাময়িকভাবে কর্মবিরতি রেখেছেন। খনির কার্যক্রম আবার তিন শিফটে চালু হলে পুনরায় সকল শ্রমিককে স্ব-স্ব পদে ফিরিয়ে আনা হবে। তবে কতদিন পরে ওই দুই শিফট চালু করা হবে তা নির্ভর করছে খনি কর্তৃপক্ষ বা এমজিএমসিএল-এর যন্ত্রপাতি সরবরাহের ওপর। জিটিসি কর্তৃপক্ষ, খনির শ্রমিকদের বাইরের কোন প্রোপাগান্ডা বা প্রচারণায় বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য এবং পুনরায় চাকরিতে ফিরে আসার জন্য কারও সঙ্গে কোন আর্থিক লেনদেন না করতে সকল শ্রমিককে অনুরোধ জানিয়েছেন।
×