ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

অনেক সেরা কলেজে এবার ফল খারাপ

প্রকাশিত: ০৫:৪৭, ১০ আগস্ট ২০১৫

অনেক সেরা কলেজে এবার ফল খারাপ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় প্রতিবছর সেরা কলেজের তালিকায় থাকা অনেক প্রতিষ্ঠানে এবার ফল বিপর্যয় ঘটেছে। রাজধানীর মতিঝিল আইডিয়াল কলেজে স্মরণকালের ফল বিপর্যয় হয়েছে। পরীক্ষায় আইডিয়াল কলেজের ২৫ শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হয়েছে। মতিঝিল আইডিয়াল কলেজ থেকে এক হাজার ৮৪ শিক্ষার্থী এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল। এদের মধ্যে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ৬২৪ জন, বাণিজ্য বিভাগ থেকে ৩০৪ ও মানবিক বিভাগ থেকে ১৫৬ পরীক্ষার্থী অংশ নিয়েছিল। প্রকাশিত ফল অনুযায়ী, ৬২৪ জন বিজ্ঞান বিভাগের পরীক্ষার্থীর মধ্যে দু’জন অকৃতকার্য হয়েছে। ১৫৬ জন মানবিক বিভাগের পরীক্ষার্থীর মধ্যে ২০ জন ও ৩০৪ জন বাণিজ্য বিভাগের পরীক্ষার্থীর মধ্যে তিনজন অকৃতকার্য হয়েছে। এবারই প্রথম বিজ্ঞান বিভাগে আইডিয়াল কলেজ থেকে কোন শিক্ষার্থী ফেল করেছে। মানবিক বিভাগে ২০ জন শিক্ষার্থীর অকৃতকার্য হওয়ার ঘটনাও এখন পর্যন্ত কলেজটিতে ঘটেনি। ফল প্রকাশের পর সাংবাদিকদের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় মতিঝিল আইডিয়াল কলেজের সহকারী প্রধান শিক্ষক মোঃ আব্দুস সালাম খান বলেন, এবার ফল একটু খারাপ হয়েছে। এবার কেন এমন খারাপ ফল হলো সেটা খতিয়ে দেখা হবে। জানা গেছে, গেল বছর এইচএসসি পরীক্ষায় মতিঝিল আইডিয়াল কলেজ থেকে এক হাজার ১৫৪ পরীক্ষাথী অংশ নিয়েছিল। এদের মধ্যে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ৫৯৪ জন অংশ নিয়ে শতভাগ কৃতকার্য, ব্যবসা শিক্ষা অনুষদ থেকে শতভাগ কৃতকার্য ও মানবিক বিভাগ থেকে ২০০ শিক্ষার্থীর মধ্যে ১৯৮ জন পরীক্ষায় অংশ নিয়ে সবাই কৃতকার্য হয়েছিল। কলেজের সহকারী অধ্যাপক মোঃ মিজানুর রহমান হতাশা প্রকাশ করে বলছিলেন, তথ্যপ্রযুক্তি যেমন এনেছে গতি, তেমনি এর নেতিবাচক প্রভাবে ডুবছে তরুণ সমাজ। বিশেষ করে শিক্ষার্থীরা। প্রযুক্তিনির্ভর যুগে ফেসবুক-ইন্টারনেট ছাড়া ছাত্রছাত্রী খুঁজে পাওয়াই দায়। শহরের ছেলে-মেয়েদের ক্ষেত্রে আরও বেশি। ফেসবুক-ইন্টারনেটেই ডুবছে শিক্ষা ব্যবস্থা। মিজানুর রহমান বলেন, আমাদের কলেজে মোবাইল ফোন নিষিদ্ধ থাকার পরও অনেক ছাত্রী লুকিয়ে ফোন নিয়ে আসে। ছাত্রছাত্রীরা ক্লাস ফাঁকি দিয়ে বাথরুমে গিয়ে মোবাইলে কথা বলে। মোবাইল আটকে রাখলে অভিভাবকরা কলেজে এসে অভিযোগ করেন, কেন মোবাইল ধরেছি। তাহলে আমরা কোথায় যাব! কিভাবে শিক্ষা দেব!। তিনি বলেন, অনেক অভিভাবক আবার এসে অভিযোগ করেন, তার মেয়ে রাত জেগে পড়ার নামে মোবাইলে ফেসবুক খুলে বসে থাকেন। এভাবে ফেসবুক ব্যবহার করার ফলে শিক্ষার মান দিন দিন খারাপের দিকেই যাবে। আগামীতে আরও খারাপ ফল হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ইন্টারনেটের কুফল দিন দিন আরও বাড়বে। পাশাপাশি পাসের হার আরও কমবে। ছাত্রছাত্রীরা ক্লাসে ঠিকমতো পড়ে না বলে জানান তিনি। এদিকে উচ্চ মাধ্যমিকে এবার রাজধানীর ভিকারুন্নিসা নূন স্কুল এ্যান্ড কলেজের ৯৩৩ জন শিক্ষার্থী জিপি-৫ পেয়েছেন। এ প্রতিষ্ঠানে পাসের হার ৯৯ দশমিক ০৪ শতাংশ। এ ফলাফল সন্তুষ্ট স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন ভাল ফলাফলের পিছনে কাজ করেছে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবকদের সমন্বিত প্রচেষ্টা। এবার বিজ্ঞানে ৯৮১ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৮৩৩ জন, ব্যবসায় শিক্ষায় ২৯২ জনের মধ্যে ৭৬ জন ও মানবিকে ১৬৯ জনের মধ্যে ২৪ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে। মানবিকে ৪ জন ও বিজ্ঞানে ২ জন শিক্ষার্থী ফেল করেছে প্রতিষ্ঠানটির।
×