ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ব্লগার নিলয় হত্যা ॥ তেরো বিশিষ্ট জনের ক্ষোভ, ঘৃণা

প্রকাশিত: ০৫:৪৬, ১০ আগস্ট ২০১৫

ব্লগার নিলয় হত্যা ॥ তেরো বিশিষ্ট জনের  ক্ষোভ, ঘৃণা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ব্লগার নিলয় হত্যায় গভীর উদ্বেগ, ক্ষোভ আর ঘৃণা প্রকাশ করে যৌথ বিবৃতি দিয়েছেন দেশের ১৩ বিশিষ্ট নাগরিক। সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক সালেহ আহমেদ স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে নিলয়সহ সকল ব্লগার হত্যার বিচার নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে সোচ্চার হবার জন্য দেশবাসীকে আহ্বান জানানো হয়েছে। বিবৃতিদাতারা হলেন, প্রফেসর আনিসুজ্জামান, সুলতানা কামাল, বিচারপতি এবাদুল হক, অজয় রায়, ড. আকবর আলী খান, কামাল লোহানী, ডাঃ সারওয়ার আলী, অধ্যাপক ড. অজয় রায়, আবেদ খান, রামেন্দু মজুমদার, অধ্যাপক এম এম আকাশ, জিয়াউদ্দিন তারেক আলী, প্রফেসর ড. নুর মোহাম্মদ তালুকদার। বিবৃতিদাতারা বলেন, ভীরু উদ্বেগ, ক্ষোভ আর ঘৃণার সঙ্গে আমরা দেখলাম গত মে মাসে সিলেটের অনন্ত বিজয়ের পর ঢাকায় ৭ আগস্ট ২০১৫ তারিখে প্রকাশ্য দিনের আলোয় বাড়িতে ঢুকে হত্যা করা হয়েছে অনলাইন এ্যাক্টিভিস্ট নীলাদ্রি চ্যাটার্র্জিকে। সংবাদপত্রে প্রকাশিত খবরে জানা যায়, আল-কায়দা ভারতীয় উপমহাদেশ বাংলাদেশ শাখা গণমাধ্যমে পাঠানো এক ই-মেইল বার্তায় এই হত্যাকা-ের দায় স্বীকার করেছে। সংবাদপত্রের খবরে আমরা আরও জানতে পারলাম নীলাদ্রি জীবন আশঙ্কা করে থানায় জিডি করতে গিয়েছিলেন। সেই জিডি গ্রহণ না করে তাঁকে দ্রুত দেশ ছেড়ে চলে যাবার পরামর্শ দিয়েছিলেন সংশ্লিষ্ট থানা কর্তৃপক্ষ। মুক্তচিন্তা প্রকাশ করার জন্য গত দুই বছর থেকে দেশে সক্রিয় একটি উগ্রবাদী ধর্মান্ধ গোষ্ঠী নিয়মিত ব্যবধানে অনলাইন এ্যাক্টিভিস্টদের হত্যা করে চলেছে। প্রতিটি হত্যাকা-ের পর দেশবাসীর সঙ্গে আমরাও হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ ও ঘৃণা প্রকাশ করে দায়ীদের বিচার ও শাস্তির দাবি করে আসছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত এদের কাউকে বিচারের আওতায় আনা সম্ভব হয়নি। আমরা মনে করি এই ব্যর্থতা একের পর এক হত্যাকা- চালিয়ে যেতে ঘাতকদের উৎসাহিত করছে এবং তার ফলেই নীলান্দ্রিকে হত্যা করতে সাহসী হয়েছে তারা। আমরা সুস্পষ্টভাবে বলতে চাই কোন গোষ্ঠী দ্বারা অপরের ধর্মবিশ্বাসে আঘাত দেয়ার বিরুদ্ধে আমরা। কিন্তু তাই বলে এই প্রশ্নে সংক্ষুব্ধতার জন্য প্রতিকারের পথ হত্যাকা- হতে পারে না। বস্তুতঃ ধর্ম রক্ষার নামে হত্যাকা- ইসলাম ধর্মের মর্মবাণীরও বিরুদ্ধে। হত্যাকা-ের পথ হলো মধ্যযুগীয় বর্বরতা। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আজ আমরা এই ধারার বিস্তার লক্ষ্য করছি। বাংলাদেশেও তার বিস্তৃতির লক্ষণ দেখা যাচ্ছে আর সেজন্যই আমরা আরও বেশি উদ্বিগ্ন। এই পটভূমিতে সরকারের কাছে আমাদের দাবি হলো সর্বশেষ নীলাদ্রিসহ ইতোপূর্বের সমস্ত মুক্তচিন্তার অধিকারী অনলাইন এ্যাক্টিভিস্টদের হত্যার দ্রুত বিচার করে দোষীদের আইনের আওতায় আনা হোক। একই সঙ্গে দলমত নির্বিশেষে সমস্ত দেশবাসীর কাছে এই ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে সোচ্চার হবার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি আমরা।
×