ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

বিদ্যুত ও গ্যাসের মূল্য সমন্বয় প্রয়োজন ॥ প্রতিমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৫:৪৬, ১০ আগস্ট ২০১৫

বিদ্যুত ও গ্যাসের মূল্য সমন্বয় প্রয়োজন ॥ প্রতিমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সরকার বিদ্যুত এবং গ্যাসের দাম বৃদ্ধি করতে চায়। জাতীয় জ্বালানি নিরাপত্তা দিবসের সেমিনারে বিষয়টি বিবেচনার জন্য বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনকে অনুরোধ করা হয়েছে। সরকারের তরফ থেকে বলা হচ্ছে ভবিষ্যত জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এখাতে বিপুল বিনিয়োগ প্রয়োজন। বিশাল পরিমাণ অর্থসংস্থানের বিষয়টি মাথায় রেখে বিদ্যুত ও গ্যাসের দাম বৃদ্ধি করার জরুরী বলে মনে করা হচ্ছে। সেমিনারে সভাপতির বক্তব্যে বিদ্যুত জ্বালানি এবং খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) চেয়ারম্যান এ আর খানকে উদ্দেশ্য করে বলেন, গ্যাস ও বিদ্যুতের মূল্য সমন্বয়ের প্রয়োজন আছে বলে মনে করি। বিদ্যুত উৎপাদন করতে গিয়ে প্রচুর অর্থের যোগান দিতে হয়। এজন্য আমাদের অনেক অবকাঠামো উন্নয়ন করতে হয়। তাতে প্রচুর অর্থের প্রয়োজন হয়। এছাড়া সরকারের নেয়া গ্যাস অনুসন্ধান ও উৎপাদন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে বিশাল অর্থের প্রয়োজন। এই অর্থ ঋণ থেকে আসে। তবে তা ফেরত দিতে হয়। তাই গ্যাস বিদ্যুতের মূল্য সমন্বয় করা দরকার। রবিবার জ্বালানি নিরাপত্তা দিবস পালিত হয়। এবারের প্রতিপাদ্য ছিল ‘সাশ্রয় কর জ্বালানি-বাঁচাও সম্পদ, বাঁচাও ধরনী’। পেট্রোসেন্টারে সেমিনারটি আয়োজন করে পেট্রোবাংলা। প্রতিমন্ত্রী বলেন, অনেকেই বলছেন, গ্যাস শেষ হয়ে যাবে। কিন্তু গ্যাস শেষ হবে না। কারণ আমাদের অনেক পরিকল্পনা আছে। আমাদের যে পরিমাণ গ্যাস আছে তা দিয়ে আগামী ১০-১২ বছর যাবে। এরমধ্যে নতুন গ্যাস ক্ষেত্র আবিষ্কারের বিষয়ে আমরা আশাবাদী। এছাড়া নতুন অনেক জায়গা পড়ে আছে। সেখানেও আমরা নতুন নতুন ক্ষেত্র পাব বলে আশা করি। প্রতিমন্ত্রী জানান, বর্তমানে আবাসিকে ১৩ শতাংশ, সিএনজিতে ৬ শতাংশ এবং ক্যাভটিবে ১৭-১৮ শতাংশ গ্যাস ব্যবহার হয়। এসব ক্ষেত্রে তেল ব্যবহার করে গ্যাস সাশ্রয় করতে পারি। সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাখেন প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেন, জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সাশ্রয়ী ব্যবহারের পাশাপাশি নতুন নতুন উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিদ্যুত জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক সংসদীয় কমিটির সভাপতি মোঃ তাজুল ইসলাম দেশজুড়ে অবৈধ গ্যাস সংযোগ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, জাতীয় জ্বালানি নিরাপত্তা দিবস পালন করা হচ্ছে অথচ দেশ জুড়ে যেভাবে অবৈধ গ্যাস সংযোগ নেয়া হচ্ছে তাতে দেশে কোন গবর্নেন্স আছে বলে মনে হয় না। তিনি বলেন, গ্যাসখাতে অরাজকতা চলছে। এভাবে চলতে পারে না। অবৈধ সংযোগ যেকোন মূল্যেই বন্ধ করতে হবে। বিইআরসির চেয়ারম্যান এ আর খান বলেন, বিদ্যুত ও গ্যাসখাতে প্রচুর চুরি হচ্ছে। চুরি বাদ দিয়ে বৈধ উপায়ে যারা বিদ্যুত ও গ্যাস ব্যবহার করছেন এরাও যদি চায় তবু ৩০ শতাংশ জ্বালানি সাশ্রয় করা যাবে। বিপিসির চেয়ারম্যান এএম বদরুদ্দোজা বলেন, বিপিসি গত ১৪ বছরে ২৯ হাজার কোটি টাকা ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। এই টাকা পরিশোধ করতে হবে। বিশ্ববাজারে তেলের দাম কমার কারণে জানুয়ারি থেকে তেল বিক্রিতে লাভ করছে। অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, জ্বালানি বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সচিব নাজিম উদ্দিন চৌধুরী, পেট্রো বাংলার চেয়ারম্যান ড. ইশতিয়াক আহমদ, ভূ-তত্ত্ব জরিপ অধিফতরের মহাপরিচালক ড. নেহাল উদ্দিন, পেট্রোবাংলার পরিচালক (পিএসপি) প্রকৌশলী মোঃ কামরুজ্জামান সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
×