ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বরিশালে রাসেলের দাফন সম্পন্ন

মাদকের টাকা আত্মসাতের জন্য গুলির নাটক সাজিয়ে খুন

প্রকাশিত: ০৪:০৯, ৯ আগস্ট ২০১৫

মাদকের টাকা আত্মসাতের জন্য গুলির নাটক সাজিয়ে খুন

স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ মাদক বিক্রির টাকা আত্মসাতের জন্য বিক্রেতা সাগর সেরনিয়াবাত গুলির নাটক সাজিয়ে এলাকাবাসীকে ক্ষিপ্ত করে অপর মাদক বিক্রেতাদের গণপিটুনি দিয়ে ও কুপিয়ে একজনকে হত্যা এবং অপর একজনকে গুরুতর জখম করেছে। ঘটনাটি আগৈলঝাড়া উপজেলার দক্ষিণ শিহিপাশা গ্রামের। উভয় মাদক বিক্রেতাই এলাকার কথিত ছাত্রলীগ কর্মী ও ক্যাডার। শুক্রবার রাতে নিহত ছাত্রলীগ কর্মী রাসেল বেপারীর (২২) লাশের ময়নাতদন্ত শেষে শনিবার বাদ আছর পারিবারিক গোরস্তানে দাফন করা হয়। সূত্রে জানা গেছে, গৌরনদী উপজেলার দক্ষিণ পালরদী গ্রামের নুর ইসলাম বেপারীর পুত্র রাসেল বেপারী, হিরা বেপারী ও রাজ্জাক বেপারী এলাকার চিহ্নিত মাদক বিক্রেতা এবং পুলিশের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী। তাদের বিরুদ্ধে থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। সম্প্রতি মাদক বিক্রিতে বাধা দেয়ায় ওই তিন সহোদর হামলা চালিয়ে তার চাচা যুবলীগ নেতা লিটন বেপারীকে কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে। এতে তার (লিটনের) হাতের কয়েকটি আঙ্গুল বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এছাড়া পুলিশ তাদের (হিরা, রাসেল ও রাজ্জাকের) বাড়ির গোপন বাঙ্কার থেকে বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্যও উদ্ধার করে। সূত্রমতে, এক লাখ টাকা চাঁদার দাবিতে গত ৬ আগস্ট দুপুরে গৌরনদীর সেন্ট পিটার ফিলিং স্টেশনে হামলা চালিয়ে একজনকে পিটিয়ে আহত ও লুটপাটের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় তারা তিন সহোদরই আসামি। ওই মামলায় ৬ আগস্ট রাতে পুলিশ হিরা বেপারী ও রাজ্জাক বেপারীকে গ্রেফতার করে শুক্রবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করে। জানা গেছে, রাসেল বেপারীর সঙ্গে সম্প্রতি পার্শ্ববর্তী আগৈলঝাড়া উপজেলার সেরাল গ্রামের কথিত ছাত্রলীগ কর্মী সাগর সেরনিয়াবাতের মাদক বিক্রির পাওনা টাকা নিয়ে বিরোধ দেখা দেয়। যে কারণে গত ১৫ দিন আগে রাসেল তার পাওনা টাকার জন্য সাগরকে গৌরনদীতে আটক করে রেখেছিল। এরইমধ্যে রাসেলের দু’সহোদর (হিরা ও রাজ্জাক) পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়ে কারাগারে যাওয়ায় তাদের ছাড়ানোর জন্য রাসেল টাকার প্রয়োজনে সাগরের সাথে যোগাযোগ করে। সূত্রটি আরও জানিয়েছে, সাগরের কথা অনুযায়ী শুক্রবার বিকেলে রাসেল তার বন্ধু রিংকু সরদারকে নিয়ে দক্ষিণ শিহিপাশা এলাকায় অবস্থান করে। সুযোগ বুঝে পূর্ব বিরোধের জের ও মাদক বিক্রির পাওনা টাকা আত্মসাতের জন্য সাগর ওই এলাকায় রটিয়ে দেয় তার ওপর সন্ত্রাসীরা গুলিবর্ষণ করেছে। একপর্যায়ে সাগর ও তার সহযোগীরা কতিপয় এলাকাবাসীকে নিয়ে ধাওয়া করে রাসেল ও রিংকুকে আটক করে গণপিটুনি দিয়ে এবং কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে রাস্তার ওপর ফেলে দ্রুত সটকে পড়ে। পুলিশ দু’জনকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে আগৈলঝাড়া ও তাৎক্ষণিক বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। সেখানে নেয়ার পর কর্ত্যবরত চিকিৎসকরা রাত সাড়ে আটটার দিকে রাসেলকে মৃত বলে ঘোষণা করে। নিহত রাসেলের মা নুরুন্নাহার বেগম অভিযোগ করেন, সাগরের কাছে পাওনা টাকা চাইতে গেলে সে (সাগর) নাটকীয়ভাবে তার সহযোগীদের নিয়ে রাসেল ও তার বন্ধু রিংকুকে কুপিয়ে জখম করে হত্যা করেছে। এ ঘটনায় শনিবার দুপুরে তিনি বাদী হয়ে আটজনকে আসামি করে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
×