ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ

নিহত নজরুলের স্ত্রীর কাছে ১২ কোটি টাকা চাঁদা দাবি

প্রকাশিত: ০৪:২৯, ৮ আগস্ট ২০১৫

নিহত নজরুলের স্ত্রীর কাছে ১২ কোটি টাকা চাঁদা দাবি

নিজস্ব সংবাদদাতা, সিদ্ধিরগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, ৭ আগস্ট ॥ নারায়ণগঞ্জে আলোচিত সাত খুন মামলার অভিযোগপত্র (চার্জশীট) থেকে অব্যাহতি পাওয়া ইয়াছিন মিয়ার লোকজন নিহত প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামের স্ত্রী ও স্বজনদের কাছে ১২ কোটি টাকা চাঁদা দাবি করেছে বলে সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেছেন নিহত নজরুলের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি। বিউটি অভিযোগ করেন, এ মামলার এজাহারভুক্ত আসামি ইয়াছিন মিয়া ও আমিনুল হক রাজু ১৫ মাস পরে এলাকায় ফিরে এসে আমার বাবা (নিহত নজরুলের শ্বশুর), ভাই, দেবর (নিহত নজরুলের ছোট ভাই), ভাগিনা, মামাশ্বশুর ও অন্যান্য আত্মীয়-স্বজনদের নামে তিনটি মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে। যাদের নামে এই তিনটি মামলা দেয়া হয় তারা ৭ খুন মামলার সাক্ষী। যাতে তারা সাত খুন মামলায় সাক্ষী দিতে না পারে সে জন্য এই মামলা করা হয়েছে। এ থেকে বোঝা যায় আমার স্বামীসহ সাতজনকে হত্যা করে আমাদের ওপর ক্ষোভ কমেনি। শুক্রবার বেলা ১১টায় সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি পশ্চিমপাড়া বুকস গার্ডেনে নিহত নজরুল ইসলামের বাসায় এক সাংবাদিক সম্মেলনে নিহত নজরুল ইসলামের স্ত্রী ও নাসিকের ২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সেলিনা ইসলাম বিউটি এ সব অভিযোগ করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন- নিহত নজরুল ইসলামের ছোট ভাই আব্দুস সালাম। সেলিনা ইসলাম বিউটি এ সময় লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। সেলিনা ইসলাম বিউটি সাংবাদিক সম্মেলনে অভিযোগ করে বলেন, তারা বলে বেড়াচ্ছে সাত খুন মামলা থেকে রেহাই পেতে ইয়াছিন মিয়ার ১২ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। এই ১২ কোটি টাকা আমাদেরই দিতে হবে। ইয়াছিন মিয়ার লোকজন আমাদের কাছে এসে এ ১২ কোটি টাকা চাঁদা দাবি করে। তিনি লিখিত বক্তব্যে বলেন, গত ২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল আমার স্বামী নজরুল ইসলামসহ ৭ জনকে অপহরণ করে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। কিন্তু আমরা ভেবেছিলাম তাদের জীবিত পাওয়া যাবে। তাই আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করেছিলাম। ৩০ মে আমার স্বামীসহ ৭ জনের লাশ শীতলক্ষ্যা নদীতে ভেসে উঠে তখন আমার ভাই, বোন, বাবা, দেবর ও অন্যান্য আত্মীয়-স্বজন সবাই নদীর পাড়ে ছিলাম। আপনজন হারিয়ে আমরা শোকে কাতর ছিলাম। তখন লাশ উদ্ধার, ময়নাতদন্ত ও লাশ দাফনের কাজে নিয়োজিত ছিলাম। তিনি আরও বলেন, নুর হোসেন, ইয়াছিন, হাসু, রাজু ও ইকবালের অত্যাচারে সারা সিদ্ধিরগঞ্জের বিক্ষিপ্ত জনতা ক্ষিপ্ত হয়ে হয়তোবা খুনীদের পাম্পে আগুন ও মাদক সাম্রাজ্য ধ্বংস করেছিল। সেই সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর নজরদারি ছিল। সেখানে ছিল সাধারণ জনতা। পরদিন আমার স্বামীর জানাজায় লক্ষাধিক মানুষ অংশগ্রহণ করেছিল। এই জানাজায় লক্ষাধিক মানুষের সমাগমেই ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ প্রমাণিত হয়। তিনি আরও বলেন, আমাদের মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে, বলছে নজরুলের মতো বালিশ ছাড়া শোয়াবে। আমরা আওয়ামী লীগ পরিবারের সন্তান। আমার স্বামী নজরুল ইসলাম শিক্ষা জীবন থেকে শুরু করে জীবনে শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত আওয়ামী লীগ করে গেছে। আমি প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি। গত ২৮ জুলাই সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইয়াছিন মিয়া ও স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা আমিনুল হক রাজু বাদী হয়ে নিহত নজরুলের স্বজনদের নামে নারায়ণগঞ্জের মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে (‘ক’ অঞ্চল) তিনটি মামলা দায়ের করেন।
×