ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

রাজধানীতে গণপরিবহন সঙ্কট ;###;মহাসড়কে তিন চাকা বন্ধের বিরুদ্ধে নানা কর্মসূচী চলছে

ফিটনেসবিহীন গাড়ির বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত

প্রকাশিত: ০৬:০৯, ৭ আগস্ট ২০১৫

ফিটনেসবিহীন গাড়ির বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ফিটনেসবিহীন পরিবহন চলাচলের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় দিনের মতো রাজধানীতে অভিযান চালানো হয়েছে। অভিযানের কারণে গণপরিবহন সঙ্কট দেখা দেয়। বিভিন্ন রুটে বাস মালিকদের বিরুদ্ধে গাড়ি বসিয়ে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে জনদুর্ভোগ বাড়ে। দিনভর অভিযানে ৬৪টি মামলা ও ২৪টি গাড়ি ডাম্পিংয়ে পাঠানো হয়েছে। এদিকে জাতীয় মহাসড়কে তিন চাকার স্বল্পগতির পরিবহন চলাচল বন্ধের প্রতিবাদে দেশের বিভিন্ন স্থানে মানববন্ধন-সড়ক অবরোধসহ নানা কর্মসূচী পালিত হয়েছে। এদিকে সড়ক পরিবহন মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সড়ক দুর্ঘটনারোধে সরকার বদ্ধ পরিকর। অটোরিক্সাসহ তিন চাকার পরিবহন মহাসড়কে চলতে দেয়া হবে না। তবে পর্যায়ক্রমে মহাসড়কের পাশে বাই লেন করা হবে। তিনি বলেন, আগে জীবন, পরে জীবিকা। এদিকে মহাসড়ক সংলগ্ন সিএনজি ফিলিং স্টেশন থেকে ভোর ছয়টা থেকে আটটা পর্যন্ত দুই ঘণ্টা সিএনজি অটোরিক্সা গ্যাস সংগ্রহ করতে পারবে বলে জানান মন্ত্রী। নগরজুড়ে অভিযান ॥ ফিটনেসবিহীন যানবাহনের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় দিনের মতো রাজধানীতে অভিযান পরিচালনা করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) ও বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ)। এতে গণপরিবহন সঙ্কট দেখা দেয়। বিভিন্ন রুটে মালিক সমিতি গাড়ি চলাচল কমিয়ে দেয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা গেছে, ফিটনেসবিহীন পরিবহনগুলো চলতে দেয়া হয়নি। অভিযানে দেখা গেছে, বেশিরভাগ পরিবহনের ২০১৬ সাল পর্যন্ত ফিটনেসের মেয়াদ থাকলেও আগে ভাগেই গাড়ি লক্কর ঝক্কর। এ নিয়ে কারও কোন মাথা ব্যথা নেই। রাজধানীর দনিয়া এলাকায় দিনভর অভিযান পরিচালনা করেন, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ মশিয়ার রহমান। তিনি বলেন, ফিটনেস ছাড়া যানবাহনের সংখ্যা অনেক বেশি। শুধুমাত্র বাসই নয়, অন্যান্য পরিবহনগুলোও মোবাইলকোর্ট ধরছে। ধারাবাহিক এ অভিযান চলার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, দিনভর অভিযানে একজন চালককে ৬ মাসের কারাদ- ও দুটি গাড়ি ডাম্পিংয়ে পাঠানো হয়েছে। ঢাকা-তারাবো ভায়া কাঁচপুর সড়কে চলা মায়ের দোয়া পরিবহনটি কোন ফিটনেস নেই। অথচ ২০১৬ সাল পর্যন্ত ফিটনেস সার্টিফিকেট রয়েছে এই বাসটির। মোবাইল কোর্টে ধরার পর গাড়িটি ডাম্পিংয়ে পাঠানো হয়। ম্যাজিস্ট্রেট জানান, বাসটিকে থামানোর জন্য সিগন্যাল দেয়া হলে বেপরোয়া গতিতে গাড়িটি চলে যায়। পরে মোটরসাইকেলে গিয়ে বাসটি আটকানো হয় এবং চালককে ৬ মাসের দ- দেয়া হয়। বিআরটিএ পক্ষ থেকে রাজধানীতে চারটি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়। ম্যাজিস্ট্রেট দেবাশীষ নাগ জনকণ্ঠকে বলেন, অভিযানে ১৬টি মামলা, ১৫ হাজার টাকা জরিমানা, ৫ জনকে দ- ও তিনটি গাড়ি ডাম্পিংয়ে পাঠানো হয়। এছাড়াও ম্যাজিস্ট্রেট আবুল বাশার, মোবাশ্বের ও আলামিন পৃথক পৃথকভাবে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন। রাতে বিআরটিএ সূত্রে জানা গেছে, চারটি মোবাইল কোর্ট পৃথক অভিযানে, ৬৪টি মামলা, ৮২ হাজার ৪০০ টাকা জরিমানা, ১৮ জনকে দ- ও ২২টি গাড়ি ডাম্পিংয়ে পাঠায়। বিআরটিএ সচিব শওকত আলী জনকণ্ঠকে জানান, রাজধানীতে চারটি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হচ্ছে। ফিটনেসবিহীন যানবাহন ধরতে অভিযান অব্যাহত রাখার কথাও জানান তিনি। বিকল্প যোগাযোগ ব্যবস্থার দাবি চার সংগঠনের ॥ যাত্রী দুর্ভোগ লাঘবে ও অর্থনীতি বাঁচাতে ১৩ লাখ যানের চাহিদা পূরণের বিকল্প যোগাযোগ ব্যবস্থার দাবি জানিয়েছে চারটি পরিবেশবাদী নাগরিক সংগঠন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের সামনে বৃহস্পতিবার পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা), নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ ফোরাম (নাসফ), আইনের পাঠশালা ও পরিবেশ উন্নয়ন সোসাইটি মানববন্ধন করে এ দাবি জানায়। সম্প্রতি মহাসড়কে অটোরিক্সা ও অটোটেম্পো বন্ধের সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় সংগঠনগুলো বিকল্প যোগাযোগ ব্যবস্থার দাবি জানায়। পবার চেয়ারম্যান আবু নাসের খানের সভাপতিত্বে এ সময় আইনের পাঠশালার চেয়ারম্যান সুব্রত দাস খোকন, পবার সহসম্পাদক মোঃ সেলিম, আইনের পাঠশালার সদস্য মীর ইফতিয়ার হোসেন, পুরান ঢাকা নাগরিক উদ্যোগের সভাপতি নাজিম উদ্দিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। ১৬ আগস্ট থেকে সিলেটে কঠোর আন্দোলনের হুমকি ॥ স্টাফ রিপোর্টার সিলেট অফিস থেকে আগামী ১৫ আগস্টের মধ্যে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ না নিলে ১৬ আগস্ট কাফনের কাপড় পরে মহাসড়কে নামবেন সিলেটের সিএনজি চালকরা। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত জেলা উপজেলা পর্যায়ে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট চলবে। বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে জেলা অটোরিক্সা (সিএনজি) শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ এ ঘোষণা দেন। তারা জানান, সিলেটের আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ, পুলিশ ও জেলা প্রশাসন কর্মকর্তাদের অনুরোধে সিলেটে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে কর্মসূচী স্থগিত করা হয়েছে। এ কারণে আপাতত কোন কঠোর আন্দোলন করবেন না তারা। লিখিত বক্তব্যে সংগঠনের সভাপতি মোহাম্মদ জাকারিয়া উল্লেখ করেন, সিলেটে প্রায় ৭ হাজার সিএনজি অটোরিক্সা চলাচল করছে। ৪Ñ৫টি উপজেলার ১০Ñ১২ লাখ যাত্রী সিএনজি অটোরিক্সাযোগে যাতায়াত করেন। মহাসড়ক ব্যবহার ছাড়া এ সব উপজেলার চালকদের কোন বিকল্প পথ নেই। অনেক সিএনজি ফিলিং স্টেশনও মহাসড়কের পাশে। বিআরটিএ অফিসে আসতে হলে মহাসড়ক দিয়ে আসতে হয়। সরকারী সিদ্ধান্তের কারণে সারাদেশের মতো সিলেটের চালকরাও পড়েছেন বিপাকে। সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেনÑ সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মোঃ আজাদ মিয়া, কার্যকরি সভাপতি সুন্দর আলী খান, মানিক খান, জিলু মিয়া, শাহাব উদ্দিন, ইকবাল আহমদ, খছরু মিয়া, আব্দুল আহাদ, মাসুক মিয়া, মামুনুর রশীদ, কয়ছর আহমদ প্রমুখ।
×