ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

দ. আফ্রিকার সঙ্গে টেস্ট সিরিজ ড্র

প্রকাশিত: ০৫:৪৬, ৪ আগস্ট ২০১৫

দ. আফ্রিকার সঙ্গে টেস্ট সিরিজ  ড্র

মিথুন আশরাফ ॥ ‘আমার খেলা টেস্ট সিরিজের মধ্যে এটাই সবচেয়ে অদ্ভুত টেস্ট সিরিজ!’ কথাটি বলেছেন দক্ষিণ আফ্রিকা অধিনায়ক হাশিম আমলা। আসলেই তাই। সোমবার দ্বিতীয় টেস্টের পঞ্চমদিনও পরিত্যক্ত হলো। তাতে করে দ্বিতীয় টেস্টও ড্র হলো। দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজও ড্র হয়ে গেল। তবে পুরো টেস্ট সিরিজে যেভাবে বৃষ্টি হানা দিয়েছে, তাতে দুই দল তো ঠিকমত খেলতেই পারল না। দক্ষিণ আফ্রিকা দুই টেস্ট মিলিয়ে এক ইনিংস ঠিক মতো খেলতে পারল। তাই আমলার কাছে অদ্ভুত লাগারই কথা। ১০ দিনের টেস্টের ৬ দিনই বৃষ্টিতে ভেসে গেছে। বৃষ্টিতে দুই টেস্টই ড্র হওয়ায় দক্ষিণ আফ্রিকার ক্ষতি হলেও বাংলাদেশের কিন্তু লাভই হয়েছে। রেটিং পয়েন্ট বেড়েছে। যেটি পুঁজি করে সামনে এগিয়ে যেতে পারবে বাংলাদেশ। যে কারণেই হোক টানা যে টেস্টেও বাংলাদেশ দল ভাল করে চলেছে, সেটি সামনে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজেও কাজে দেবে। সেই গত বছর নবেম্বর থেকেই ওয়ানডে ও টেস্টে সাফল্য পাচ্ছে বাংলাদেশ। জিম্বাবুইয়েকে ৩ ম্যাচের টেস্ট সিরিজে হোয়াইটওয়াশ করেছে বাংলাদেশ। এরপর পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম টেস্টে দাপটে খেলে ড্র করেছে। ভারতের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টটিও ড্র হয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টানা দুটি টেস্টই ড্র হয়েছে। গত বছর নবেম্বর থেকে ৮ টেস্ট খেলে হার হয়েছে মাত্র ১টিতে। অসাধারণ পারফর্মেন্স। এ পারফর্মেন্স নিয়ে ভবিষ্যতে আরও ভাল খেলার প্রত্যয়ও বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটারদের মধ্যে আছে। তবে হতাশ দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেটাররা। হাশিম আমলাই যেমন বলেছেন, ‘আমার মনে হয় না ১০ দিনের ৬ দিনই বৃষ্টিতে ভেসে গেছে এমন কোন টেস্ট সিরিজ খেলেছি আমি। সেদিক থেকে এটা একেবারেই আলাদা। কিন্তু ভেজা থাকায় আমাদের বেশি কিছু করার নেই।’ ম্যাচটি দক্ষিণ আফ্রিকায় হলে রবিবারই নাকি পরত্যিক্ত করা হতো বলেও জানালেন ডানহাতি এই ক্ল্যাসিক ব্যাটসম্যান। এরপরই মিরপুরের মাঠের প্রশংসা করতে দেখা গেল তাকে, ‘আমি আগেই বলেছি দক্ষিণ আফ্রিকা হলে ম্যাচটা রবিবারই পরিত্যক্ত করা হতো। পুরো মাঠ খেলার অনুপযোগী ছিল। ড্রেনেজ দারুণ ছিল। এখন যদিও বৃষ্টি নেই তারপরও মাঠ অনেক ভেজা। এমন অবস্থায় খেলাটা বিপজ্জনক ছিল।’ এমন মৌসুমে বাংলাদেশ ক্রিকেট খেলার জন্য কতটা উপযোগী। উত্তরে আমলা জানালেন, ‘বাংলাদেশের আবহাওয়া সম্পর্কে আমি জানি না। কিন্তু এখন যা দেখছি এমন অবস্থা হলে ক্রিকেট খেলার জন্য উপযোগী নয়। তবে এই সিদ্ধান্ত দেয়ার আমি কেউ নই। যারা সিদ্ধান্ত নেয়ার তারাই নেবে। তবে আমরা ওয়ানডে খেলেছি, যা শেষ করতে পেরেছি। হয় তো ওয়ানডে একটু বেশি উপযোগী।’ সঙ্গে যোগ করেছেন, ‘সত্যিই এই বাস্তবতা বোঝা কঠিন। যদি এটা ১-১ ড্র হতো, খেলার যথেষ্ট সুযোগ পেতাম, যেটার সত্যিকার প্রতিফলন মাঠে পড়ত, তাহলে হয়ত বোঝা যেত। আইসিসিও তখন হয় তো এই দিকটা দেখতে পারত। কিন্তু; খারাপ আবহাওয়ার বিষয়টিও আইসিসির দেখা উচিত। এমন কিছু থাকা উচিত যা ন্যায্য এবং সব দলকে সমান পাল্লায় মাপে। এ ক্ষেত্রে (এই সিরিজে) আমাদের পয়েন্ট হারানো খুব অদ্ভুত মনে হচ্ছে, খেলার সুযোগই পেলাম না! আমি নিশ্চিত, আইসিসি হয় তো এ বিষয়টা দেখবে।’ তবে বাংলাদেশ অধিনায়ক মুশফিকুর রহীম কিন্তু খুশি। এখন এ ফলকে পুঁজি করে উপভোগ করতে চান। বলেছেন, ‘আমরা বাংলাদেশ দল একটা বেঞ্চমার্ক সেট করেছি। শেষ চারটা ওয়ানডে সিরিজ জিতেছি, টেস্টেও শেষ আট ম্যাচ খুবই ভাল খেলেছে বাংলাদেশ। যদিও উন্নতির এখনও বহু জায়গা আছে। আমরা যেন এর ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারি। এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, জানেন দুই মাস পর আমাদের অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে খেলা। এটাও বড় একটা চ্যালেঞ্জ। এখন সময় গত চার-পাঁচ মাসে আমরা যা অর্জন করেছি সেটা উপভোগ করার। আমাদের মনে হয় সেটা সবাই করবে। আমার মনে হয় একটা বিরতি আছে, সেটা খুব দরকার ছিল। এরপর ফিটনেস ট্রেনিং আছে এরপর স্কিল অনুশীলন করব। আমাদের সামনে অনেক সময় আছে। আমরা যেন পুনরায় ভালভাবে ফিরে আসতে পারি, দল হিসেবে পারফর্ম করতে পারি।’ মুশফিকের আনন্দ হওয়ারই কথা। সেই আনন্দ উপভোগও করতে চাইতেই পারেন। শুধু মুশফিক কেন নির্ধারিত ওভার ও টেস্ট দলের সব ক্রিকেটারই এখন টানা সাফল্য পাওয়াকে উপভোগ করতে চান। টি২০ সিরিজে হারের পর ওয়ানডে সিরিজ জয়টিই এ সিরিজে বাংলাদেশের বড় সাফল্য। দক্ষিণ আফ্রিকার মতো দলকে হারিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ। এরপর টেস্ট সিরিজও যখন ড্র হয়ে গেল, তখন সাফল্য বাংলাদেশের গায়েই জড়িয়ে গেছে। এখন সামনে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজে সেই সাফল্যের ধারাবাহিকতা ধরে রাখা গেলেই হয়।
×