ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সরকারী খাল আটকে রাখা ও স্লুইসগেট অকেজো থাকায় পানি নিষ্কাশনে বিঘ্ন

জলাবদ্ধতায় বীজতলার ব্যাপক ক্ষতি

প্রকাশিত: ০৬:০৯, ৩ আগস্ট ২০১৫

জলাবদ্ধতায় বীজতলার ব্যাপক ক্ষতি

স্টাফ রিপোর্টার, বাগেরহাট ॥ অতি বৃষ্টিতে পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় জলাবদ্ধতায় বাগেরহাটের অধিকাংশ এলাকার আমন বীজতলা নষ্ট হয়ে গেছে। ফলে চলতি আমন চাষাবাদ মৌসুমে চারা সঙ্কটে কৃষকেরা বিপাকে পড়েছেন। ফকিরহাট, শরণখোলা, মোড়েলগঞ্জ, চিতলমারী, কচুয়া ও বাগেরহাট সদর উপজেলার শত শত হেক্টর জমির বীজতলা জলাবদ্ধতায় পচে গেছে। প্রতিবছর শ্রাবণ মাসের মাঝামাঝি এ সময় আমন চাষের অর্ধেক কাজ শেষ হলেও এবার এ ছয় উপজেলার অধিকাংশ এলাকায় চাষাবাদ শুরু হয়নি। পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় চাষাবাদের জমিও জলাবদ্ধ হয়ে আছে। এ সব এলাকার পান বরজ ও সবজি ক্ষেত মারত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাগেরহাটের শরণখোলা, ফকিরহাট, মোড়েলগঞ্জ, কচুয়া, চিতলমালী, ও সদর উপজেলার কৃষকদের অভিযোগ বর্ষার পানি আটকে থাকায় আমন চাষাবাদ হুমকির মুখে পড়েছে। মাছ চাষের নামে সরকারী খাল আটকে রাখায় এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের স্লুইজগেটগুলোর অধিকাংশ অকেজো থাকায় যথাযথ পানি নিষ্কাশন হচ্ছে না। ফলে জমিতে পানি জমে থাকায় বীজতলা তৈরি করা যাচ্ছে না। যে সব জমিতে বীজতলা তৈরি করা হয়েছিল, তার অধিকাংশ নষ্ট হয়ে গেছে। কোথাও কোথাও বীজ তৈরির উদ্দেশে মাঠে ফেলা ধান সম্পূর্ণ ভেসে গেছে। কৃষকেরা জানান, অপরিকল্পিত মৎস্য ঘের, বেড়ীবাঁধ নির্মাণ, অধিকাংশ নদী-খাল ভরাট হওয়া এবং স্লুইজগেটগুলো অকেজো হওয়ার ফলে মারত্মক জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। বাহিরদিয়া ইউনিয়নের সাতবাড়িয়া গ্রামের কৃষক আব্দুর রশিদ জানান, তিনি ২ বিঘা জমি চাষ করে জমিতে পাতো (বীজতলা) লাগিয়ে ছিলেন, কিন্তু পানি জমে থাকায় সব নষ্ট হয়ে গেছে। দেখা গেছে, ফকিরহাটের বাহিরদিয়ার চেচোডাঙ্গা বিল, গোয়ালের বিল, নান্দোর বিল, বাহিরদিয়া বিল, পিলজংগ ইউনিয়নের চামারে বিল, বালিয়াডাঙ্গা বিল, শ্যামবাগাত বিল, পিলজংগ বিল, বৈলতলী বিল, লখপুর ইউনিয়নের ভবনা বিল, ভট্টেখামার বিল, জাড়িয়া বিল, বেতাগা ইউনিয়নের মাসকাটা বিল, চাকুলী বিল, বেতাগা বিল, শুভদিয়া ইউনিয়নের শুভদিয়া বিল, ৮৪ বিল, বোরোইতলা বিল, সাপমারী বিল, সাতসাইয়া বিল, ভারাশিয়া বিল, কাঠালতলা বিলসহ মূলঘর নলধা-মৌভোগ ইউনিয়নের বিভিন্ন বিলে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। সেখানে বীজতলা তলিয়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। কাড়াপাড়া, ডেমা, বিষ্ণুপুর, বাধাল, রাঢ়িপাড়া ইউনিয়নের অবস্থা একই। এ সব এলাকার পানের বরজ ও শাকসবজিসহ অন্য ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এ বিষয়ে জেলা কৃষি অধিদফতরের ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক জানান, অতিবৃষ্টি ও জলাবদ্ধতায় বীজতলার কিছু ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতি নিরূপণের পাশাপাশি কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও সহায়তা দেয়া হচ্ছে। আমন চাষ স্বাভাবিক থাকবে বলে তিনি মনে করেন।
×