ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

ভিন্ন মতাবলম্বীদের শূরা গঠন

নয়া প্রধান নির্বাচন করবেন তালেবান নেতারা

প্রকাশিত: ০৫:৫৫, ৩ আগস্ট ২০১৫

নয়া প্রধান নির্বাচন করবেন তালেবান নেতারা

মোল্লা আখতার মোহাম্মদ মনসুরকে দলের প্রধান নির্বাচিত করার বিষয়টি সমালোচিত হওয়ায় ভিন্ন মতাবলম্বী আফগান তালেবান নেতারা নতুন প্রধান নির্বাচনের জন্য সুরা বা কাউন্সিল গঠন করেছেন। শনিবার এক শূরা সদস্য এ তথ্য জানান। এই ভিন্ন মতাবলম্বীদের মধ্যে সাবেক প্রধান মোল্লা ওমরের পুত্র এবং ভাই রয়েছেন। খবর এফপি ও বিবিসির। সুরার জ্যেষ্ঠ এক সদস্য বলেন, আখতার মনসুরকে সময় দেয়া হবে সর্বোচ্চ পদটি ছেড়ে দেয়ার জন্য। এতে তিনি যদি রাজি না হন, তাহলে শূরা সংগঠনটির জন্য নতুন প্রধান নির্বাচন করবেন বলেও জানান তিনি। সংগঠনটি মোল্লা ওমরের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করার পর তালেবান সরকারের সাবেক বিমানমন্ত্রী মনসুরকে চলতি সপ্তাহেই দলটির প্রধান নির্বাচিত করা হয়। এর একদিন আগে আফগানিস্তান সরকার পাকিস্তানের করাচীতে মোল্লা ওমর মারা গেছেন বলে ঘোষণা দেয়। বর্তমান নেতার মৃত্যুর খবর এবং নতুন নেতার নাম ঘোষণা করার আগেরদিন বুধবার জঙ্গী সংগঠনটির জ্যেষ্ঠ নেতারা বৈঠকে বসেছিলেন। বৈঠকে নতুন নেতা হিসেবে মোল্লা মনসুরের নাম ঘোষণা করার পর একটি পক্ষ এতে আপত্তি জানায় এবং প্রতিবাদে বৈঠক ছেড়ে বেরিয়ে যায়। দীর্ঘদিন মোল্লা ওমরের সহকারী হিসেবে কাজ করেছেন ৫০ বছর বয়সী মোল্লা মনসুর। গত কয়েক বছর ধরে কার্যত তিনিই দল পরিচালনা করছিলেন। ১৩ বছরের যুদ্ধের অবসান ঘটিয়ে সম্প্রতি পাকিস্তান সরকারের উদ্যোগে তালেবান ও আফগান সরকারের মধ্যে শান্তি আলোচনা শুরু হয়। শান্তি আলোচনা বিষয়ক প্রথম বৈঠকে প্রতিনিধি পাঠিয়েছিলেন মনসুর। কিন্তু তালেবানের শক্তিশালী একটি অংশ শান্তি আলোচনা বিরোধী। তারা চাইছে ওমরের ছেলে ইয়াকুব দলের দায়িত্ব গ্রহণ করুক। বুধবারের বৈঠক থেকে ইয়াকুব, ওমরের ছোটভাই আবদুল মানানসহ বেশ কয়েকজন নেতা বের হয়ে যান। তালেবানের এক মুখপাত্র মোল্লা আবদুল মানান নিয়াজি বলেন, ‘ইসলামি আইন অনুসারে, যখন একজন শীর্ষ নেতা মারা যাবেন, তখন সর্বোচ্চ পরিষদের (শূরা) বৈঠক আহ্বান করা হবে। ওই পরিষদ নতুন প্রধানকে নিয়োগ দেবে। মনসুরকে শূরা পরিষদ নিয়োগ দেয়নি।’ তালেবানের জ্যেষ্ঠ এক সদস্য বলেন, ‘এটা আসলে তালেবান প্রধান নেতা নির্বাচন করার বৈঠক ছিল না। বরং কিভাবে নেতা নির্বাচন করা হবে সেই বিষয়ে আলোচনার জন্য মনসুর দলের জ্যেষ্ঠ সদস্যদের ডেকেছিলেন। বিষয়টি টের পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ইয়াকুব ও মানান সভা ছেড়ে বেরিয়ে যান।’ শান্তি আলোচনা নিয়ে এমনিতেই তালেবানের মধ্যে বিরোধ দেখা দিয়েছে। ইসলামিক স্টেটও দলটির জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই পরিস্থিতিতে মনসুর এক অডিও বার্তায় দলের নেতাদের একজোট থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, তারা লড়াই চালিয়ে যাবেন। মনসুর বলেন, ‘যোদ্ধাদের একজোট থাকা উচিত। কারণ আমাদের মধ্যে বিভক্তি শুধুমাত্র আমাদের শত্রুদের খুশি করতে পারবে।’ তিনি বলেন, ‘আফগানিস্তানে ইসলামিক আইন প্রতিষ্ঠা না করা পর্যন্ত আমাদের ‘জিহাদ’ অব্যাহত থাকবে।’ বিরোধীদের অভিযোগ মনসুরকে দলের প্রধান করার পেছনে পাকিস্তানের হাত রয়েছে। ওই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে মনসুর বলেন, ‘শত্রুরা এই প্রচারণা চালাচ্ছে।’
×