ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

জামালকে ট্রফি দিয়েই চলে গেলেন ওয়েডসন

প্রকাশিত: ০৫:৫৭, ১ আগস্ট ২০১৫

জামালকে ট্রফি দিয়েই চলে গেলেন  ওয়েডসন

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ‘আমি ইতোমধ্যেই মিস করছি আমার সব সতীর্থদের, বিশেষ করে মামুনুল ইসলাম, সোহেল রানা, আলমগীর কবির রানা, রায়হান হাসান, ইয়াসিন, ইয়ামিন, দিদারুলকে। সবাইকে অশেষ ধন্যবাদ। একটা চমৎকার মৌসুম কাটালাম। তোমাদের সাহায্যই আমার যা কিছু সাফল্য। আশা করি আবারও শীঘ্রই তোমাদের সঙ্গে আবারও দেখা হবে।’ নিজের ফেসবুক ওয়ালে এমনই স্ট্যাটাস দিয়েছেন ওয়েডসন এ্যানসেলমে। হাইতিয়ান এই ফরোয়ার্ড নিজ দল শেখ জামাল ধানম-িকে লীগ শিরোপা পাইয়ে দিয়ে চলে গেছেন ক্লাব ছেড়ে যুক্তরাষ্ট্রে। পাঠকের কাছে নিশ্চয়ই পরিষ্কার হচ্ছে না বিষয়টা, ওয়েডসন নিজ দেশ হাইতিতে না গিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে চলে গেলেন কেন? মূল বিষয়টা হচ্ছেÑ আগামী ৫ আগস্টের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকতে হবে, এমন ভিসা ছিল ওয়েডসনের। তাই বৃহস্পতিবার রাতেই লীগ শিরোপা নিশ্চিত এবং শিরোপা জয়ের বাঁধভাঙ্গা উল্লাসের পরেই তাকে বিদায় দিয়েছে ক্লাব কর্তৃপক্ষ। এ প্রসঙ্গে শেখ জামালের ম্যানেজার আনোয়ারুল করিম হেলাল বলেন, ‘ওই ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই ওই সমস্যার জন্যই চলে গেছে ওয়েডসন।’ গত জুনের শেষ সপ্তাহে এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশনের (এএফসি) সদর দফতর মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে অনুষ্ঠিত হয় ‘২০১৬ এএফসি কাপ’-এর গ্রুপিং ড্র। এতে ‘বি’ গ্রুপে পড়েছে বাংলাদেশের শীর্ষ ক্লাব শেখ জামাল ধানম-ি ক্লাব লিমিটেড। তাদের অপর দুই প্রতিপক্ষ হলো কিরগিজস্তানের এফসি আলগা বিশকেক এবং ম্যাকাওয়ের এসএল বেনফিকা ডি ম্যাকাও ক্লাব। খেলা হবে কিরগিজস্তানে। খেলার তারিখ ঠিক হলেও সময় এবং ভেন্যু এখনও নির্ধারণ করা হয়নি। শেখ জামাল তাদের প্রথম ম্যাচ খেলবে আগামী ১৩ আগস্ট বেনফিকা এবং ১৬ আগস্ট আলগার বিপক্ষে। এখন ওয়েডসনের চলে যাওয়াতে শেখ জামালের আক্রমণভাগে যে শূন্যতার সৃষ্টি হয়েছে, সেটা পূরণ হবে কিভাবে? ‘হ্যাঁ, সামনেই এএফসি কাপ। এখন ওয়েডসন যদি এ আসরে আমাদের ক্লাবে আবারও খেলতে চায়, তাহলে অবশ্যই তার জন্য আমাদের দরজা খোলা।’ হেলারের ভাষ্য। দুই ম্যাচ হাতে রেখে জামাল লীগ চ্যাম্পিয়নশিপ অক্ষুণœ রেখেছে। সর্বোচ্চ গোলদাতার তালিকায় আপাতত ওয়েডসনই আছেন এক নম্বরে। করেছেন একটি হ্যাটট্রিকও। গত ২৮ জুন বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে ফরাশগঞ্জকে ৯-১ গোলে বিধ্বস্ত করে শেখ জামাল। ওয়েডসন হ্যাটট্রিকসহ করেন চার গোল। উল্লেখ্য, জামালের হয়েই গত ২০১৩-১৪ মৌসুমের লীগে ২৬ গোল করে সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়েছিলেন ওয়েডসন। ১ গোলের জন্য স্পর্শ করতে পারেননি ১৯৮২ লীগে ঢাকা মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব লিমিটেডের প্রখ্যাত ফরোয়ার্ড আব্দুস সালাম মুর্শেদীর ২৭ গোলের রেকর্ডটি। হাতে আর দুই ম্যাচ ছিল। এই দুই ম্যাচে ওয়েডসনের ১০ গোল করাটা কষ্টসাধ্য হলেও যেখানে অসম্ভব ছিল না, সেখানে তার হুট করেই এভাবে চলে যাওয়ায় লাভবানই হবেন এমেকারা। ওয়েডসনের ক্লাব সতীর্থ নাইজিরিয়ান ফরোয়ার্ড এমেকা ডার্র্লিংটনেরও গোল ১৭। এছাড়া মোহামেডানের গিনির ফরোয়ার্ড ইসমাইল বাঙ্গুরা ১৬ ও ব্রাদার্সের হাইতিয়ান ফরোয়ার্ড অগাস্টিন ওয়ালসনের গোল ১৫টি। পাখি উড়ে যায়, রেখে যায় তার পালক। ওয়েডসন চলে গেছেন, রেখে গেছেন তার কীর্তি। তবে এটাই যে তার শেষ যাওয়া, তা এখনই বলা যাচ্ছে না। ‘আবার দেখা হবে, এ দেখাই শেষ দেখা নয়’Ñ ওয়েডসনের বেলাতেও কি ফলে যাবে গানের এই লাইনটি?
×