ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

এলজিইডির ৯শ’ কর্মচারীকে আত্মীকরণ করা হয়নি

প্রকাশিত: ০৫:৫১, ১ আগস্ট ২০১৫

এলজিইডির ৯শ’ কর্মচারীকে আত্মীকরণ করা হয়নি

নিজস্ব সংবাদদাতা, কুষ্টিয়া, ৩১ জুলাই ॥ মহামান্য হাইকোর্ট ও সুপ্রীম কোর্টের নির্দেশ উপেক্ষা করে কুষ্টিয়ায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদফতরে (এলজিইডি) দীর্ঘদিন ধরে মাস্টাররোলে কর্মরত ৭২ কর্মচারীর চাকরি আজও আত্মীকরণ করা হয়নি। এমনটি তাদের বকেয়া বেতনও পরিশোধ করা হয়নি। এসব কর্মচারীর মধ্যে ১০ থেকে ২০ বছর যাবত মাস্টাররোলে কাজ করছেন এমন কর্মচারীও রয়েছেন। দীর্ঘ ১৩ মাস যাবত তারা কোন বেতন-ভাতাদি না পেয়ে চরম কষ্টের মধ্যদিয়ে দিন যাপন করছেন। কুষ্টিয়াসহ সারা দেশে এলজিইডি’র মাস্টাররোলে কর্মরত রয়েছেন এমন কর্মচারীর সংখ্যা মোট ৮৯০ জন। যাদের চাকরি এখনও আত্মীকরণ হয়নি। চাকরি আত্মীকরণ ও বকেয়া বেতন-ভাতাদি না পাওয়ায় এসব কর্মচারীর মধ্যে বিরাজ করছে চাপা ক্ষোভ। তারা এ দাবি আদায়ের লক্ষ্যে বৃহত্তর আন্দোলন-কর্মসূচী ঘোষণার আল্টিমেটাম দিয়েছে। জানা যায়, কুষ্টিয়ায় ৭২ জনসহ সারা দেশে বিভিন্ন পদে মাস্টাররোলে এলজিইডিতে কর্মরত রয়েছে মোট ৮৯০ জন কর্মচারী। এসব কর্মচারীর মধ্যে কেউ গাড়ি চালক, কেউ বা রোলার চালক, আবার কেউ অফিস সহকারী, হিসাব সহকারী, কম্পিউটার অপারেটর, অফিস সহায়ক ও কেউ গার্ড পদে কাজ করছেন। এদের মধ্যে দীর্ঘ ১০ থেকে ২০ বছর যাবত কাজ করছেন এমন কর্মচারীও রয়েছেন। প্রতিমাসের বেতন-ভাতাও তারা নিয়মিত পান না। অনেকেরই বেতন গত ২০১৪ সালের জুলাই থেকে চলতি বছরের জুলাই পর্যন্ত ১৩ মাস বকেয়া রয়েছে। এমনকি গত ঈদ-উল-ফিতরের উৎসবেও তাদের কোন উৎসব ভাতাবেতন প্রদান করা হয়নি। ভুক্তভোগী কর্মচারীরা জানান, এ ব্যাপারে ২০১০ সালে হাইকোর্টে রিট পিটিশন দাখিল করা হলে মহামান্য হাইকোর্ট ২০১২ সালের ১ অক্টোবর ওই কর্মচারীদের পক্ষে নিয়োগ প্রদানের নির্দেশনা প্রদান করেন। বিষয়টি নিয়ে পরে সুপ্রীম কোর্টে আপীল করা হলে সুপ্রীম কোর্ট ২০১৩ সালের ২০ জানুয়ারি রায় প্রদান করেন। ওই রায়ে হাইকোর্টের দেয়া আদেশ বহাল রাখা হয়। এর প্রেক্ষিতে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব মোহাম্মদ হোসেন এলজিইডি’র প্রধান প্রকৌশলীকে আদালতের নির্দেশনা ও শর্তসমূহ পূরণ করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদফতরের আওতায় বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে কর্মরত দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর বিভিন্ন পদের ৮৯০ জন কর্মচারীকে রাজস্ব খাতে শূন্য পদে আত্মীকরণের/নিয়মিতকরণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন। কিন্তু আজ পর্যন্ত আদালত ও সহকারী সচিবের ওই নির্দেশ কার্যকর হয়নি। এদিকে বর্তমান দুর্মূল্যের বাজারে মাস্টাররোল কর্মচারীদের পক্ষে ছেলেমেয়ে ও বাবা-মাসহ সবাইকে নিয়ে জীবন যাপন করা কঠিন হয়ে পড়েছে। বেতন-ভাতা ঠিক মতো না হওয়ায় ছেলে মেয়েদের লেখাপড়াও বন্ধের উপক্রম হয়েছে। দীর্ঘ দিন যাবত চাকরি করার কারণে সরকারী চাকরির বয়স সীমাও ছাড়িয়ে যাওয়ায় আর কোথাও চাকরির আবেদনও তারা করতে পারছেন না। এমতাবস্থায় তারা হতাশাগ্রস্ত জীবনযাপন করছে। আগামী ১৫ কর্ম দিবসের তাদের চাকরি আত্মীকরণ/নিয়মিতকরণ করা না হলে তারা বৃহত্তর আন্দোলন-কর্মসূচীর ঘোষণা দিয়েছে। এ ব্যাপারে এলজিইডি কুষ্টিয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী মোশাররফ হোসেন জানান, আদালতের নির্দশনায় বলা হয়েছে রাজস্ব খাতে শূন্য পদ সৃষ্টি হলে সেখানে মাস্টাররোল কর্মচারীদের আত্মীকরণ/নিয়মিতকরণ করার। কিন্তু বর্তমানে শূন্য পদ না থাকায় ওই কর্মচারীদের আত্মীকরণ করার বিষয়টি জটিলতার মধ্যে রয়েছে।
×