ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সৈয়দ আশরাফের আশা

আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে খালেদা আর ভুল করবেন না

প্রকাশিত: ০৫:৩৪, ১ আগস্ট ২০১৫

আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে খালেদা আর ভুল করবেন না

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জনপ্রশাসন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন, বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া গত পাঁচ জানুয়ারির নির্বাচনে অংশ না নিয়ে ভুল করেছেন। আশা করি, তিনি আগামীতে এ ভুল আর করবেন না। শুক্রবার সকালে রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমিতে যুবলীগ আয়োজিত এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, বিএনপি হয়তো ভুল বুঝতে পেরে তত্ত্বাবধায়ক সরকার দাবি থেকে সরে এসেছে। আগামী নির্বাচন সংবিধান অনুসারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারের অধীনেই হবে। ওই নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে। শোকাবহ ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ৪০তম শাহাদাত বাষির্কী ও জাতীয় শোক দিবস ২০১৫ উপলক্ষে ‘বাঙালীর হৃদয়ের ফ্রেমে জাতির পিতা’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন ও সংবাদচিত্র প্রদর্শনীর এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করে আওয়ামী যুবলীগ। শোকের মাস আগস্ট উপলক্ষে এই প্রদর্শনী মাসব্যাপী চলবে। প্রদর্শনীতে বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রশ্নে জাতির পিতার দীর্ঘ ২৩ বছরের আন্দোলন-সংগ্রাম, স্বাধীনতা এবং স্বাধীনতা পরবর্তী সরকার পরিচালনার অসংখ্য দুর্লভ আলোকচিত্র প্রদর্শনীতে স্থান পেয়েছে। বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি থেকে সরে আসার ইঙ্গিত কি না, এমন প্রশ্নের সৈয়দ আশরাফ বলেন, বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া তত্ত্বাবধায়কের দাবি থেকে সরে এসেছেন কি না, তা তো স্পষ্ট করেননি। তবে বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী বিএনপিসহ সকল দলের আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ রয়েছে। আশাকরি সকল দল আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। তবে কেউ যদি নির্বাচনে না আসে সেটা তাদের ইচ্ছা। তিনি বলেন, গতবারের নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় আসার জন্য প্রতিটি রাজনৈতিক দলকে আহ্বান জানানো হয়েছিল, এবারও প্রধানমন্ত্রী বার বার বলেছেন। সৈয়দ আশরাফ বলেন, ’৭০ সালের নির্বাচনের সময় আওয়ামী লীগের এত সদস্য ছিল না। কিন্তু ছাত্রলীগ ছিল সংগঠিত। ঘরে ঘরে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ দাওয়াত পৌঁছে দিত। তাই নির্বাচনের প্রচারও করতে হয়েছে ছাত্রলীগকেই। তিনি বলেন, ৭০ সালের নির্বাচনের আগে বঙ্গবন্ধু নেত্রকোনায় এক সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়েছিলেন। আমি তখন বৃহত্তর ময়মনসিংহ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি। আমিও ওই সভায় গিয়েছিলাম। সভা শেষে যখন রাত ৩টার দিকে ফিরে আসছিলাম সার্কিট হাউসে, তখন রাস্তায় গাছ ফেলা হয়েছিল। আমরা বুঝতে পারলাম কুচক্রীমহল বঙ্গবন্ধুকে ঢাকায় ফিরতে না দেয়ার ষড়যন্ত্র করছে। আমরা তখন সবাই মিলে গাছগুলো সরিয়ে ফেললাম। পরে সার্কিট হাউসে আসলাম। আশরাফ বলেন, ওই সময় তৎকালীন ডেপুটি কমিশনারকে তলব করলেন বঙ্গবন্ধু। তিনি বললেন- আমি এখনই ইয়াহিয়ার সঙ্গে কথা বলব। কমিশনার বললেন- এখন তো রাত ৩টা বাজে। তাছাড়া ইয়াহিয়া খান রাওয়ালপি-িতে থাকেন। বঙ্গবন্ধু বললেন, আমি এসব বুঝি না। আপনি ব্যবস্থা করুন কথা বলার জন্য। প্রায় তিন ঘণ্টা পর বঙ্গবন্ধু ইয়াহিয়া খানের সঙ্গে কথা বলেন। তখন বঙ্গবন্ধু ফোনে বলছিলেন, আপনি কি পাকিস্তানে নির্বাচন চান কি চান না? আর যদি নির্বাচন চান তাহলে রাতে আমার যাওয়ার সময় গাছ ফেললেন কেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে ইয়াহিয়া খান বললেন, নির্বাচন হবে। আপনি শান্ত হোন। এর সঙ্গে আমি জড়িত নই। ওই সময় বঙ্গবন্ধু যেভাবে কথা বললেন আমি আশ্চর্য হয়ে গিয়েছিলাম। এমনই ছিল বঙ্গবন্ধুর দৃঢ়তা। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সৈয়দ আশরাফ বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিচারণ করে বলেন, একটি ছবি হাজারো শব্দের চেয়ে শক্তিশালী। যুবলীগের বইয়ে বঙ্গবন্ধুর অনেক ছবি সন্নিবেশিত করা হয়েছে। এটা তরুণ প্রজন্মের জন্য শিক্ষণীয়। এ সময় তরুণ ও যুব সমাজের মধ্যে বইটি পৌঁছে দেয়ার জন্য যুবলীগের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এতে তরুণ প্রজম্ম বঙ্গবন্ধুকে আরও গভীরভাবে জানতে পারবে। যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ইডেন কলেজের অধ্যক্ষ হোসনে আরা, যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশীদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য শহীদ সেরনিয়াবাত, ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এইচ এম বদিউজ্জামান সোহাগ প্রমুখ। ২০২০ সালের মধ্যে বিএনপি বিলীন হবে- সুরঞ্জিত ॥ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টাম-লীর সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেছেন, বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া ও তাঁর পুত্র তারেক রহমান আজও তাঁদের রাজনীতি পরিষ্কার করতে পারেননি। আর এ কারণেই বিএনপির এমন দৈন্যদশা। বিএনপির রাজনীতির চলমান ধারা অব্যাহত থাকলে আগামী ২০২০ সালের মধ্যে দলটি বিলীন হয়ে যাবে। শুক্রবার রাজধানীর কাকরাইলে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বঙ্গবন্ধু একাডেমি আয়োজিত চলমান রাজনীতি বিষয়ক এক আলোচন সভায় তিনি আরও বলেন, তারা (বিএনপি) মনে করে মুক্তিযুদ্ধও ঠিক, মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাও ঠিক। এ নীতি অবলম্বন করে দক্ষিণ এশিয়ায় আর রাজনীতি করা যাবে না। বঙ্গবন্ধু একাডেমির সহ-সভাপতি চিত্তরঞ্জন দাসের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাজী মোহাম্মদ সেলিম এমপি, সাম্যবাদী দলের নেতা হারুন-অর রশিদ চৌধুরী প্রমুখ।
×