ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

যাবজ্জীবন চার জনের

স্ত্রী হত্যার দায়ে গাজীপুর ও ফরিদপুরে তিন আসামির মৃত্যুদণ্ড

প্রকাশিত: ০৬:৩৫, ৩১ জুলাই ২০১৫

স্ত্রী হত্যার দায়ে গাজীপুর ও ফরিদপুরে তিন আসামির মৃত্যুদণ্ড

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ গাজীপুরে স্ত্রী হত্যার দায়ে মোঃ শামীম নামে এক ব্যক্তিকে মৃত্যুদ- দিয়েছে আদালত। সে শ্রীপুর উপজেলার হরতকিরটেক গ্রামের আব্দুল মজিদের ছেলে। স্ত্রী চম্পা আক্তারের গলায় গামছা পেঁচিয়ে হত্যা করার জন্য আদালত তাকে মৃত্যুদ- দেয়। এদিকে,ফরিদপুরে লিপি বেগমকে হত্যার দায়ে স্বামী মোকাদ্দেস মৃধা ও প্রতিবেশী কবির খাঁকে মৃত্যুদ- দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে লিপি বেগমের চার দেবর জালাল মৃধা, জাকির মৃধা, আবির মৃধা ও মিরাজ মৃধাকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদ- ও নগদ পাঁচ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়। জরিমানা অনাদায়ে যাবজ্জীবন দ-প্রাপ্ত চারজনকে আরও দুই বছর করে সশ্রম কারাদ- ভোগ করতে হবে। গাজীপুরের ঘটনায় স্বামীকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদ-াদেশের আদেশ বৃহস্পতিবার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক একেএম এনামুল হক দেন। একই সঙ্গে আসামি মোঃ শামীমকে (২৮) ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জেলার কোর্ট পুলিশ জানায়, শ্রীপুরের বেলদিয়া গ্রামের দুলাল মিয়ার মেয়ে চম্পা আক্তারের (২০) সঙ্গে শামীমের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে শামীম স্ত্রী চম্পাকে বিভিন্ন সময় শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করত। নির্যাতন সইতে না পেরে এক পর্যায়ে চম্পা বাপের বাড়ি চলে যায়। পরে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের মধ্যস্ততায় এবং চম্পাকে আর নির্যাতন করবে না মর্মে প্রতিশ্রুতি দিয়ে স্ত্রীকে বাড়িতে নিয়ে আসে শামীম। এ ঘটনার পর ২০১১ সালের ৫ জানুয়ারি রাতে শামীম তার বসতঘরে গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে চম্পাকে হত্যা করে। পরে এ ব্যাপারে চম্পার বাবা দুলাল মিয়া বাদি হয়ে শ্রীপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। কোর্ট পুলিশ আরও জানান, শ্রীপুর থানা পুলিশ মামলার তদন্ত শেষে ওই বছরের ২৪ মার্চ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। পরে শুনাান শেষে বৃহস্পতিবার গাজীপুরের জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক একেএম এনামুল হক সাক্ষ্য-প্রামাণ শেষে অভিযুক্ত স্বামী মোঃ শামীমকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদ- এবং ১০ হাজার টাকা জরিমানার রায় প্রদান করেন। রাাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন পিপি মোঃ হারিছ উদ্দিন আহমেদ এবং আসামি পক্ষে আইনজীবী ছিলেন মোঃ সাহাব উদ্দিন মোড়ল। ফরিদপুর ॥ ফরিদপুরে স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামীসহ দুইজনকে মৃত্যুদ- দিয়েছে আদালত। এছাড়া নিহতের চার দেবরকে দেয়া হয়েছে যাবজ্জীবন কারাদ-। বৃহস্পতিবার দুপুরে ফরিদপুরের অতিরিক্ত দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের হাকিম শেখ নাজমুল আলম এ রায় প্রদান করেন। ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নের আড়ুয়াকান্দি গ্রামের মোকাদ্দেস মৃধার স্ত্রী লিপি বেগমকে (২২) হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত করে স্বামী মোকাদ্দেস মৃধা (৩৯) ও প্রতিবেশী কবির খাঁকে (৪৬) মৃত্যুদ- দেয় আদালত। একই সঙ্গে লিপি বেগমের চার দেবরকেও শাস্তি দেয় আদালত। রায় প্রদানের সময় মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত কবির খাঁ বাদে অন্য সব আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। কবির খার পলাতক অবস্থায় এ রায় দেয়া হয়। আদালত সূত্রে জানা যায়, পারিবারিক কলহের জের ধরে ২০০৫ সালের ১৫ জুলাই দিবাগত রাত তিনটার দিকে ঘুমন্ত অবস্থায় লিপি বেগমকে গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। ১৬ জুলাই লিপি বেগমের বাবা আকমল মৃধা বাদী হয়ে বোয়ালমারী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। বোয়ালমারী থানা ও সিআইডির মোট পাঁচ পুলিশ কর্মকর্তা মামলাটি নিয়ে তদন্ত করেন। সর্বশেষ ২০০৮ সালের ৭ আগস্ট মামলার সর্বশেষ তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে সিআইডির উপ-পরিদর্শক আব্দুল মজিদ হত্যাকা-ের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে স্বামী মোকাদ্দেস, প্রতিবেশী কবির খাঁ ও মোকাদ্দেসের চার ভাই ও এক ভাইয়ের স্ত্রীকে অভিযুক্ত করে মোট সাত জনের নামে লিপি বেগমকে হত্যার অভিযোগে চার্জশীট দেন। তবে আদালত মোকাদ্দেসের ভাই জাকির মৃধার স্ত্রী বুলু বেগমকে বেকসুর খালাস দেয়।
×